আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

গৃহস্থলি কাজে নারীর দায়বদ্ধতা

প্রশ্নঃ ৭৮৯৮৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, একজন নারীর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ অধ্যায় বৈবাহিক জীবন। সেই বৈবাহিক জীবনকে সুন্দর করার স্বপ্ন প্রত্যেক নারীর রয়েছে। বৈবাহিক জীবনের প্রস্তুতির উদ্দেশ্যে আমি দম্পত্য জীবন ও বিবাহ বিষয়ক অনেক বই অধ্যায়ন করেছি। উল্লেখ্য বইগুলে প্রসিদ্ধ ও খ্যাতনামা আলেম ওলামাদের ও বিভিন্ন মাযহাবের অনুসারীদের। পাশাপাশি অধ্যায়নের জন্য ইন্টারনেটও প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করেছি। কয়েকটি বিষয়ে বইগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দেখেছি। এর মধ্যে অন্যতম স্ত্রীদের গৃহস্থালীর কাজকর্ম নিয়ে। প্রখ্যাত আলেম ওলামাদের এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত। আমি যতটুকু জানি স্বামীর আনুগত্য,খেদমত ও সেবাযত্ন স্ত্রীর উপর ওয়াজিব। আবার এই বিষয়ে যতগুলো হাদীস পেয়েছি তার প্রায় সবগুলোতে স্ত্রীকে গৃহস্থালীর কাজকর্মে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। তাহলে এ বিষয়ে মতবিরোধ কেন? স্ত্রীদের জন্য গৃহস্থালী কাজকর্ম কী ওয়াজিব? যদি গৃহস্থালীর কাজকর্ম শরয়ী দায়িত্ব না হয় তাহলে মা ফাতিমা রাঃ ও অন্যান্য মহিলা সাহাবীরা এত কষ্ট করত কেন? গৃহস্থালীর কাজকর্ম যদি স্বামীর আনুগত্যের অংশ না হয় তাহলে স্বামীর আনুগত্য বলতে কী বোঝায়? স্বামীর আনুগত্য কী কেবল স্বামীর যৌনচাহিদা নিবারণ? অভিজাত ও ধনী পরিবারের নারীদের জন্য কী ভিন্ন বিধান নাকি একই? বিভিন্ন বইয়ে স্ত্রীর জন্য দাসীর ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।(এ বিষয়েও মত পার্থক্য পেয়েছি আমি) স্ত্রীর জন্য দাসীর ব্যবস্থা করা কী স্বামীর উপর ওয়াজিব? আমি যতটুকু হাদীস পড়েছি তাতে এ বিষয়ে সরাসরি নির্দেশনা পায়নি। তাহলে এ বিষয়ে এত মাথা ব্যাথা কেন। প্রশ্ন একটু বেশি হয়ে গিয়েছে।দয়া করে উত্তর দিবেন। আল্লাহ আপনাকে উত্তম জাযাহ দান করুক,

২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


উত্তর ১: নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার বিবাহের পর হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার মাঝে কাজের বণ্টন এমনভাবে করেছিলেন যে বাহিরের কাজ আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু করবেন এবং ভিতরের কাজ ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা সমাধান করবেন।

‘‘স্বামীর উপর স্ত্রীর হক স্ত্রীর উপর স্বামীর হক বিষয়ে’’ যাদুল মা`আদ কিতাবে এসেছে:
স্বামীর দায়িত্বে রুটি রুজির ব্যবস্থা এবং বাহিরের কাজ যেমন বাজার সদাই ইত্যাদি সংগ্রহ করা, এবং মহিলার (স্ত্রীর) সুখ-শান্তির পূর্ণ খেয়াল রাখা।
স্ত্রীর দায়িত্ব স্বামীর সামান জিনিসপত্র ইত্যাদির দেখভাল করা এবং সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। বাচ্চার লালন-পালন করা। স্বামীর সন্তুষ্টি এবং আনুগত্য করা ওয়াজিব। সুতরাং যদি মহিলা (স্ত্রী) এমন ঘরের মেয়ে হন, যে কখনো খাবার পাকায়নি, বরং সেবিকা (চাকরানি) পাকিয়েছে অথবা তার এমন অসুস্থতার সম্ভাবনা রয়েছে যার ভিত্তিতে সে স্বামীর ঘরের খাবার পাকানো অস্বীকার করে, তাহলে স্বামীর জন্য কর্তব্য হলো তার রুটি রুজির ব্যবস্থা করা। এমতাবস্থায় স্ত্রীকে খাবার পাকানোর জন্য বাধ্য করা যাবে না, বরং সেবিকার মাধ্যমে রুটি বানাতে হবে। যদি স্ত্রী এমন ঘরের মেয়ে হন, যে নিজেই খাবার রান্না করতে পারে, যেমনটি সাধারণত ইসলামী সমাজের মধ্যবিত্ত পরিবারে হয়ে থাকে, তাহলে খাবার পাকানোর ক্ষেত্রে মহিলাদের অস্বীকার না করা উচিত। তবে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি এবং মাধ্যমগুলো এবং সহজতার ব্যবস্থা করা সাধ্য অনুযায়ী স্বামীর উপর ওয়াজিব।
সার কথা হলো, কোন গ্রহণযোগ্য প্রতিবন্ধক না হওয়া পর্যন্ত, মহিলার উপর খাবার পাকানো দুনিয়াবি বিচারে ওয়াজিব। তবে যদি সে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে খাবার পাকানোর জন্য তাকে বাধ্য করা যাবে না।

উত্তর ২: মনে রাখা উচিত যে শরীয়তে মহিলাদের জন্য ঘরের কাজকর্ম এবং খাবার পাকানো শরঈ দিক থেকে ওয়াজিব নয়। তবে যেহেতু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল আইনগত নয়, বরং সম্পর্কের ভিত্তিতেই হয় (সেহেতু বিষয়টি শরীয়তের দিকে না চাপানো)। যদি আইনগতভাবে চলে, তাহলে স্বামীর উপর অনেক কিছু ওয়াজিব নয়। এজন্য শরীয়ত অনেক কিছু মহিলাদের উপর দুনিয়াবি বিচারে ওয়াজিব করে, যেমন ঘরের কাজ, খাবার পাকানো ইত্যাদি, যাতে সুখী পারিবারিক জীবনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

উত্তর ৩: স্ত্রীরা গৃহস্থলী কাজকর্মের ফযীলত সম্পর্কে যদি জানত, তাহলে আর এসবের কারণে মনমালিন্যতা না করে স্বেচ্ছায় গৃহস্থলী জীবনের সুখ বিসর্জন দিয়ে হলেও স্বামী/তার পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা ও মুজাহাদা করত। যেমন- নবী এবং সাহাবাদের স্ত্রীগণ এসব ব্যাপারে নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো- বর্তমানের কিছু নারী এসব বিষয়ে খুবই অবহেলা করে যা মোটেও উচিত নয়

প্রকাশ থাকে যে, মহিলা যদি ঘরের কাজ এবং বাচ্চাদের শিক্ষা-দীক্ষার ক্ষেত্রে এই নিয়ত করে যে, এসব গুরু দায়িত্ব পালন দ্বারা উদ্দেশ্য স্বামীকে খুশি করা এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা, তাহলে উক্ত মহিলার যাবতীয় কাজ সওয়াবে পরিণত হবে। এবং এটি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত।

১. কানযুল উম্মাল ১৬/১৬৯ (দ্বিতীয় পরিচ্ছেদঃ মহিলাদের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে উৎসাহ প্রদান):
হযরত হাসান বিন সুফিয়ান (রা.) বর্ণনা করেন যে, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, ‘‘হে মহিলারা! তোমরা কি এই কথায় সন্তুষ্ট যে, যখন তোমাদের মধ্যে কোন মহিলা নিজ স্বামী কর্তৃক গর্ভবতী হবে এবং স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে, তার এই পরিমাণ নেকি অর্জিত হবে, যেমন আল্লাহর রাস্তায় রোজাকারী এবং রাত্রিতে দন্ডায়মান জাগ্রত ইবাদতকারীর সমপরিমাণ নেকি অর্জিত হবে? এবং যখন তার প্রসব বেদনা উঠে তখন তার চোখের অশ্রু প্রশমিত করার জন্য এমন নেয়ামত লুকায়িত রাখা হয়, যার খবর আসমান এবং জমিনবাসীদের কাছে নেই। এবং যখন বাচ্চা প্রসব করে, তখন তার (বাচ্চার) প্রতিটি দুধের ঢোকের উপর এবং তা (স্তন) চুসার উপর একটি করে নেকি অর্জিত হয়। যদি বাচ্চার কারণে মায়ের রাত্রিতে জাগ্রত থাকতে হয়, তখন আল্লাহর রাস্তায় ৭০টি গোলাম স্বাধীন করার নেকি অর্জিত হয়। তোমাদের কি জানা আছে এ মহিলারা কারা? তারা হলো নেয়ামতরাজি দ্বারা জীবন অতিবাহিতকারী নেককার মহিলারা। যারা স্বামীদের অবাধ্য হয় না।’’
কানযুল উম্মাল ১৬/১৭০
২. স্বামীর সেবা করা সদকা স্বরূপ।
৩. মহিলাদের গৃহস্থলি কাজে জিহাদের সমপরিমাণ সওয়াব অর্জিত হয়।

প্রশ্নঃ এটি স্বামীর আনুগত্যের মধ্যে পড়বে কি না? বা আনুগত্যের মধ্যে কি কি পড়বে?
উত্তরঃ উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, যতক্ষন পর্যন্ত স্বামী শরীয়তের খেলাপ আদেশ না করবে ততক্ষন স্বামীর যাবতীয় আদেশ, পসন্দ অপসন্দ তার আনুগত্যের মধ্যেই পরিগণীত হবে)

প্রশ্নঃ যদি গৃহস্থালীর কাজকর্ম শরয়ী দায়িত্ব না হয় তাহলে মা ফাতিমা রাঃ ও অন্যান্য মহিলা সাহাবীরা এত কষ্ট করত কেন?
উত্তরঃ উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ওনারা দুনিয়াবী কষ্টের উপর আখেরাতকে প্রাধাণ্য দিয়েছেন। তাকওয়ার উপর আমল করেছেন। ফতোয়া খুজে বেড়াননি। ওনারা মনে করতেন স্বামীর সন্তুষ্টি যে যে মাধ্যমে অর্জন করা যায় সবই তার জন্য করণীয়। খাবার দাবার স্বামীর সন্তুষ্টির বড় মাধ্যম। সরাসরি কারণ না হলেও ইনডাইরেক্ট কারণ হয়ে থাকে। যা আলী ও ফাতেমা রা. এর আলোচনা দ্বারা প্রতিয়মান হয়।
তা ছাড়া নবীজী (সা) এর যমানার যে চিত্র? তিনি আম্মাজানদের কাছে খাবার চাইতেন। পাকালে খেতেন না হয় রোজা থাকতেন।
হাদীসঃ
عَنْ عَائِشَةَ بِنْتِ طَلْحَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، – رضى الله عنها – قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ عَلَىَّ قَالَ " هَلْ عِنْدَكُمْ طَعَامٌ " . فَإِذَا قُلْنَا لاَ قَالَ " إِنِّي صَائِمٌ " . زَادَ وَكِيعٌ فَدَخَلَ عَلَيْنَا يَوْمًا آخَرَ فَقُلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أُهْدِيَ لَنَا حَيْسٌ فَحَبَسْنَاهُ لَكَ . فَقَالَ " أَدْنِيهِ " .
আয়িশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) আমার নিকট আগমন করলে জিজ্ঞাসা করতেন, তোমাদের নিকট কি খাবার আছে? আমরা না বললে, তিনি বলতেন, আমি রোযা রাখলাম। রাবী ওয়াকী’ অতিরিক্ত বর্ণনায় বলেন, এরপর একদিন তিনি আমাদের নিকট আগমন করলে আমরা বলি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের জন্য হায়স নামীয় খাদ্য হাদীয়া এসেছে। আর আমরা তা আপনার জন্য রেখে দিয়েছি। তিনি বলেন, তা আমার নিকট আনয়ন করো। (সুনানে আবি দাউদ হাদীস নং: ২৪৪৭ আন্তর্জাতিক নং: ২৪৫৫)

«يَا بَرِيرَةُ هَلْ رَأَيْتِ فِيهَا شَيْئًا يَرِيبُكِ؟»، فَقَالَتْ بَرِيرَةُ: لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالحَقِّ، إِنْ رَأَيْتُ مِنْهَا أَمْرًا أَغْمِصُهُ عَلَيْهَا قَطُّ، أَكْثَرَ مِنْ أَنَّهَا جَارِيَةٌ حَدِيثَةُ السِّنِّ، تَنَامُ عَنِ العَجِينِ، فَتَأْتِي الدَّاجِنُ فَتَأْكُلُهُ
হে বারীরা! তুমি কি তার মধ্যে সন্দেহজনক কিছু দেখতে পেয়েছ? বারীরা বলল, আপনাকে যিনি সত্যসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম করে বলছি, না তেমন কিছু দেখিনি এই একটি অবস্থায়ই দেখেছি যে তিনি অল্পবয়স্কা কিশোরী। আর তাই আটা–খামীর করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সেই ফাকে বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। (সহীহ বুখারী হাদীস নং: ২৪৮৫ আন্তর্জাতিক নং: ২৬৬১)

প্রশ্নঃ অভিজাত ও ধনী পরিবারের নারীদের জন্য কী ভিন্ন বিধান নাকি একই?
উত্তরঃ উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিধান সকল নারীর জন্যই এক। তবে যারা অভ্যস্থ আর যারা অভ্যস্থ নয় তাদের মাঝে পার্থক্য করা হয়েছে। যদিও মৌলিক দিক থেকে কোন বৈপরিত্ব নেই। অন্যভাবে বললে শরঈ ওযর বলা যায়। গ্রহণযোগ্য ওযর থাকা আবশ্যক।

প্রশ্নঃ স্ত্রীর জন্য দাসীর ব্যবস্থা করা কি ওয়াজিব?
উত্তরঃ উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, স্ত্রীর শরঈ অপারগতা থাকলে দাসী/সেবিকার ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর ওয়াজিব।
শরঈ ওযর না থাকলে কোন নারীর জন্য ঘরের কাজ কর্ম করতে অস্বীকৃতি জানানো উচিত নয়।

বলাবাহুল্য, বর্তমান সমাজে একজন নারীকে বিয়ের পর বউয়ের মর্যাদার বদলে চাকরানির মর্যাদা দেওয়া হয়। তার কাজে কোনো সহযোগিতা তো দূরের কথা, বরং নুন থেকে চুন খসলেই মন্দ বলা, গালাগাল করা, মা-বাবাকে টেনে আনা—এসব চরম পর্যায়ের অন্যায়। শরীয়ত স্ত্রীকে স্বামীর সেবা ফরজ করেছে, পরিবারের নয়। সুতরাং, সেই দৃষ্টিকোণ থেকে হলেও নারীর কাজের সম্মান করা উচিত। এবং কোনো নারীর জন্য তার মা-বাবা তুল্য শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে বাজে আচরণ করা পক্ষান্তরে নিজের মা-বাবার সঙ্গে বাজে আচরণের শামিল। ধৈর্য ও সবরের সঙ্গে এসব খেদমত আঞ্জাম দেওয়া উচিত।
অধৈর্য হয়ে পৃথক থাকার সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে একথা চিন্তা করা উচিত যে, একদিন এই বয়সে আমারও উপনীত হতে হবে। এমন সেবার প্রয়োজন আমারও পড়তে পারে। সুতরাং চিন্তা-ভাবনা করেই সতর্কতার সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। তবে কোন স্ত্রী স্বামীর পরিবারের সাথে থাকতে না চাইলে স্বামীর সক্ষমতা অনুযাই স্ত্রীকে পৃথক ঘরে রাখা ওয়াজিব। যেমনটি আল্লাহ তা‘আলা বলেন: أَسۡكِنُوهُنَّ مِنۡ حَيۡثُ سَكَنتُم مِّن وُجۡدِكُمۡ وَلَا تُضَآرُّوهُنَّ لِتُضَيِّقُواْ عَلَيۡهِنَّۚ
তোমরা তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদেরকে সেই স্থানে বাস করতে দাও, যেখানে তোমরা নিজেরা বাস কর। তাদেরকে সংকটে ফেলার জন্য কষ্ট দিও না।

প্রিয় প্রশ্নকারী বোন! বাজারে এই বিষয়ে হাজার হাজার বই আছে, অনলাইনে হাজার হাজার কন্টেন্ট আছে, একেকজন একেক বক্তব্য পরিস্থিতি অনুপাতেই দিয়ে থাকেন। তাই বক্তব্যে তারতম্য হয়। তাছাড়া দীর্ঘ আলোচনা থেকে আপনার নিকট স্পষ্ট হয়ে যাওয়ারই কথা যে, দুনিয়াবী বিচারে মহিলাদের জন্য ঘরের যাবতীয় কাজ আঞ্জাম দেওয়া ওয়াজিব।
আমরা দুনিয়াকে যতবড় করে দেখে আখেরাতের বিষয়গুলোকে ততবড় করে দেখি না। আজকের প্রগতিশীল দুনিয়ায় সমস্ত ঝামেলার মূল কারণই এটি। সাহাবী যূগ থেকে শিক্ষা নিলে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

শরঈ দলীলসমূহঃ
کنز العمال: (الفصل الثانی فی ترغیبات تختص بالنساء، 169/16)
اما ما ترضى احداکن انها اذا كانت حاملا من زوجها وهو عنها راض ان لها مثل اجر الصائم القائم في سبيل الله واذا اصابها الطلق لم يعلم اهل السماء والارض ما اخفي لھا من قرۃ اعين فاذا وضعت لم يخرج من لبنها جرعۃ ولم يمص من ثديها مصۃ الا كان لها بكل جرعۃ وبكل مصۃ حسنا فان اسهرها ليلۃ كان لها مثل اجر سبعين رقبۃ تعتقھم في سبيل الله سلامۃ اتدرين من اعني بهذا؟ المتنعمات الصالحات المطیعات لازواجهن اللاتي لا يكفرون العشير (الحسن بن سفیان)

و فیہ ایضا: (الفصل الثانی فی ترغیبات تختص بالنساء، 170/16)
خدمتک زوجتک صدقۃ(عن ابن عمر)

الھندیۃ: (548/1، ط: دار الفکر)
وإن قالت: لا أطبخ، ولا أخبز قال في الكتاب: لا تجبر على الطبخ والخبز، وعلى الزوج أن يأتيها بطعام مهيإ أو يأتيها بمن يكفيها عمل الطبخ والخبز....قالوا: إن هذه الأعمال واجبة عليها ديانة، وإن كان لا يجبرها القاضي كذا في البحر الرائق۔

قال فی الدر: امتنعت المرأة من الطحن والخبز إن کانت ممن لاتخدم أو کان بھا علة فعلیہ أن یأتیھا بطعام مہیأ وإلا بأن کانت ممن تخدم نفسھا وتقدر علی ذلک لا یجب علیہ ولا یجوز لہا أخذ الأجرة علی ذلک لوجوبہ علیہا دیانةً ولو شریفةً قال الشامي فتفتی بہ ولکنہا لا تجبر علیہ إن أبت بدائع (شامي: ج۲ ص۷۰۴)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৯৩৪৬

বিবাহের আক্বদ অনুষ্ঠানে কনের উপস্থিতি আবশ্যক?


৫ মার্চ, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ

৪৫৮২৮

আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিবাহ !!


১৫ নভেম্বর, ২০২৩

পাংশা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৪২৮৯

অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া বিবাহ


৫ জুন, ২০২৩

চট্টগ্রাম ৪৩৩০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৩২৮৫৪

পিতার জন্য বিবাহের সময় পাত্রী দেখা জায়েয কি ?


১৬ এপ্রিল, ২০২৩

বজরা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy