আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

পিতামাতার দাম্পত্য কলহে সন্তানের করণীয়

প্রশ্নঃ ৬৩২২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, পিতা কর্তৃক মাতা জুলুমের স্বীকার (ঠিক মত ঘুমাতে না দেওয়া, অন্যায় ভাবে কষ্ট দেওয়া, সন্তানদের বাসা বাড়িতে স্বাধীন ভাবে যেতে না দেওযা, অসুস্থ হলে ঠিক মত ডাক্তার দেখান না,সামান্য ভুলে রেগে যান, পর্যাপ্ত খেদমত করার পরও সন্তুষ্টি না হওয়া, সামান্য বিষয় নিয়ে বদ দোয়া করা যেমন তুই জান্নাতে যেতে পারবিনা, তুই জাহান্নামে যাবি ইত্যাদি,বিঃদ্রঃ উক্ত মহিলা খুব দ্বিনদার, সামি ভক্ত, স্বামী খেদমতে আমার দেখা মতে শ্রেষ্ঠ নারী , নরম, ভদ্র, এমন কি জীবনে কোন দিন সুন্নতে মুয়াক্কাদা ইচ্ছা করে কাজা করে নাই।অমতবস্থায় আমি সন্তান হয়ে পিতার এই জুলুমের ব্যাপারে চুপ থাকতে পারছি না, খুব রাগ হয়, মাঝেমধ্যে বদ দোয়া করি যে তিনি যেন মরে যান, অথবা আল্লাহ যেন মাকে ঈমানের সাথে তার কাছে নিয়ে যান।তাকে বুঝানোর কেউ নেই এমন কি তিনি বুঝার চেষ্টাও করবেন না, মনে হয় তিনি একাই সঠিক করছেন ও বুঝছেন, বুঝাতে গেলে রেগে যান, অমতবস্থায় আমি সন্তান হয়ে কি করতে পারি বা আমার করনীয় কি??

৯ অক্টোবর, ২০২৩
খুলনা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


পিতা-মাতা জুলুম করলেও তাদের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করা, বদদোয়া দেয়া, ষড়যন্ত্র করা কোনটি জায়েয হবে না।
আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সন্তানের উপর এত অধিকারে দিয়েছেন যে, তাদের পক্ষ থেকে কষ্টে নিপতিত হলেও "উফ" শব্দ পর্যন্ত বলতে নিষেধ করেছেন। আপনারা ভাই-বোন সকলে মিলে পিতাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। মায়ের খেদমত করুন। মায়ের কষ্টের দিকগুলো বিবেচনা করে তাকে জুলুম থেকে উদ্ধারের উদ্যেগ নিন।

وَقَضٰی رَبُّکَ اَلَّا تَعۡبُدُوۡۤا اِلَّاۤ اِیَّاہُ وَبِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ؕ اِمَّا یَبۡلُغَنَّ عِنۡدَکَ الۡکِبَرَ اَحَدُہُمَاۤ اَوۡ کِلٰہُمَا فَلَا تَقُلۡ لَّہُمَاۤ اُفٍّ وَّلَا تَنۡہَرۡہُمَا وَقُلۡ لَّہُمَا قَوۡلًا کَرِیۡمًا

তােমার প্রতিপালক নির্দেশ দিয়েছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করাে না পিতা - মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করাে, পিতা - মাতার কোনও একজন কিংবা উভয়ে যদি তােমার কাছে বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে উ পর্যন্ত বলাে না ১৬ এবং তাদেরকে ধমক দিও না; বরং তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বলাে।
—বনী-ইসরাঈল - ২৩

তাফসীরঃ
১৬. উফ ’ পর্যন্ত বলাে না ’ - এর অর্থ, তাদের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করাে না এবং তাদরকে বিরক্তিসূচক কোন কথা বলাে না, যেমন তারা যদি কোন কথা বারবার বলে বা অপ্রয়ােজনীয় কোন কথা বলে, যেমনটা বৃদ্ধ ও শিশুরা করে থাকে, তখন বিরক্তির সাথে তার জবাব দিও না। -অনুবাদক


وَاخۡفِضۡ لَہُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحۡمَۃِ وَقُلۡ رَّبِّ ارۡحَمۡہُمَا کَمَا رَبَّیٰنِیۡ صَغِیۡرًا ؕ

এবং তাদের প্রতি মমতাপূর্ণ আচরণের সাথে তাদের সামনে নিজেকে বিনয়াবনত করাে এবং দু'আ করাে, হে আমার প্রতিপালক! তারা যেভাবে আমার শৈশবে আমাকে লালন পালন করেছে, তেমনি আপনিও রহমতের আচরণ তাদের প্রতি করুন।
—বনী-ইসরাঈল - ২৪

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন