খাস জমির বন্দোবস্ত বা ভোগদখলের অধিকার
প্রশ্নঃ ২৪২৪৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের একটা দোকানঘর রয়েছে,,যেটা খাস জমির ওপরে।কিন্তু সে জায়গাটা বাজারের উপরে হওয়ায়,অনেকেই অনেকগুলো দোকানঘর করেছিলো এবং আমরা সেটা কিনে নিয়েছিলাম,এখন আমরা সেই দোকানঘর ভাড়া দিয়ে ভাড়া নেই।এইটা কি জায়েজ হবে?উল্লেখ্য দোকানঘর খাস উপরেই কিন্তু বাজারের উপর হওয়ায় মানুষজন দোকানঘর করে রেখে ভাড়া দেয়/নিজে দোকান করে।
২ নভেম্বর, ২০২২
রাজশাহী
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
শরীয়তের বিধান মতে কারোও সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যতীত ব্যবহার করা জায়েজ নাই।
এই মর্মে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾
হে ইমানদারগণ ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না। তবে তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ। এবং নিজেদের হত্যা করো না।নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (সুরা নিসা ২৯)
হাদীস শরীফে আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করে বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন,
أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى
সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মনোতুষ্টি ছাড়া তার মাল অন্য কারো জন্য হালাল নয়।-(আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।)
প্রিয় দ্বীনি ভাই-বোন!
খাস জমি সরকারী সম্পদ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমতি ছাড়া তা ব্যবহার করা বা দখল করা জায়েজ নাই।
বিভিন্ন সূত্রে আমরা যদ্দুর জানতে পেরেছি তাহলো, খাস জমির বন্দোবস্ত বা ভোগদখলের অধিকার দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ভূমিহীনদের। ভূমিহীন ছাড়া কেউ খাসজমি বন্দোবস্ত নিলেও তা বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বাজারের খাস জমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা সকলের জন্য জায়েজ হবে না। এটি কেবল ভূমিহীন দের জন্য জায়েজ।
সেক্ষেত্রে উক্ত খাস জমিতে বানানো ঘর-বাড়ী, দোকান-পাট ইত্যাদীর নির্মাণ শরঈ দৃষ্টিকোণ থেকে নাজায়েজ হয়েছে।
এখন করনীয় হলো সেই জমি ব্যবহারের পরিমাণ ভাড়া নির্ধারণ করে সেই পরিমান টাকা সরকারী কোষাগারে জমা দিতে হবে। এবং সামনে সেই জমি ব্যবহার করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বৈধ অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করবে।
والله اعلم بالصواب
মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১