আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

দোকান বা ঘরে রহমতের আশায় বিনিময় দিয়ে কুরআন পড়ানো জায়েজ?

প্রশ্নঃ ১০০৪৫৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন মাদরাসা ছাত্র বাসায় গিয়ে আরবি পড়াই। আমার প্রশ্ন হলো, এক ভাই আমাকে বলল যে আপনি আামার বাসায় এসে শুধু এক ঘন্টা কোরআান শরীফ তিলাওয়াত করে যাবেন। যার ফলে আমাকে ২৫০০ টাকা করে দিবে। সেই টাকা কি আামার জন্য জায়েজ হবে। একটু বিস্তারিত চাচ্ছি।,

২৪ এপ্রিল, ২০২৫

ঢাকা ১২০৫

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


দোকান বা কোনো স্থানে বরকতের নিয়তে কুরআন তিলাওয়াত করানো জায়েয আছে এবং এর বিনিময়ে আদান-প্রদান করাও শরিয়তের দৃষ্টিতে অনুমোদিত, যেমন হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, সাহাবায়ে কিরাম (রাযিয়াল্লাহু আনহুম) এক রোগীকে ঝাড়ফুঁক (রুকিয়া) করার বিনিময়ে ত্রিশটি ছাগল চুক্তি করেছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ তা থেকে বিরত করেননি।

তবে এতে এ কথা খেয়াল রাখতে হবে যে, কুরআন তিলাওয়াত সঠিকভাবে হতে হবে ভুলভাল বা বিকৃত উচ্চারণে নয়। নচেৎ, সেই হাদীসের আওতায় পড়ে যাবে, যেখানে বলা হয়েছে: ‘অনেক কুরআন পাঠকারী এমনও আছে, যাদের ওপর কুরআন অভিশাপ বর্ষণ করে।’

উল্লেখ্য এভাবে কুরআন না পড়িয়ে নিজেরা পড়ার চেষ্টা করবে। কেননা, এতে সওয়াব বেশি পাওয়া যায়। কষ্ট করে পড়লেও সওয়াব বেশি।

হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ نَفَرًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَرُّوا بِمَاءٍ، فِيهِمْ لَدِيغٌ أَوْ سَلِيمٌ، فَعَرَضَ لَهُمْ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ المَاءِ، فَقَالَ: هَلْ فِيكُمْ مِنْ رَاقٍ، إِنَّ فِي المَاءِ رَجُلًا لَدِيغًا أَوْ سَلِيمًا، فَانْطَلَقَ رَجُلٌ مِنْهُمْ، فَقَرَأَ بِفَاتِحَةِ الكِتَابِ عَلَى شَاءٍ، فَبَرَأَ، فَجَاءَ بِالشَّاءِ إِلَى أَصْحَابِهِ، فَكَرِهُوا ذَلِكَ وَقَالُوا: أَخَذْتَ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ أَجْرًا، حَتَّى قَدِمُوا المَدِينَةَ، فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَخَذَ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ أَجْرًا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَحَقَّ مَا أَخَذْتُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا كِتَابُ اللَّهِ»

ইবনে ‘আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর সাহাবীগণের একটি দল একটি কূপের পাশে বসবাসকারীদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। কূপের পাশে অবস্থানকারীদের মধ্যে ছিল সাপে কাটা এক ব্যক্তি কিংবা তিনি বলেছেন দংশিত এক ব্যক্তি। তখন কূপের কাছে একজন এসে তাদের বলল আপনাদের মধ্যে কি কোন ঝাড়-ফুঁককারী আছেন? কূপ এলাকায় একজন সাপ বা বিচ্ছু দংশিত লোক আছে। তখন সাহাবীগণের মধ্যে একজন সেখানে গেলেন। এরপর কিছু বকরি দানের বিনিময়ে তিনি সূরা ফাতিহা পড়লেন (এবং ফুঁক দিলেন)।
ফলে লোকটি আরোগ্য লাভ করল। এরপর তিনি বকরিগুলো নিয়ে তাঁর সাথীদের নিকট আসলেন কিন্তু তাঁরা কাজটি পছন্দ করলেন না। তারা বললেনঃ আপনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। অবশেষে তারা মদীনায় পৌছে নবী করীম (ﷺ) -এর দরবারে যেয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময় গ্রহণ করে থাকো তম্মধ্যে সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর কিতাব।

আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ (সহীহ বুখারী)
হাদীস নং: ৫৩২৬ আন্তর্জাতিক নং: ৫৭৩৭
https://muslimbangla.com/hadith/5326

فیض الباری: ۳/۲۷۶، بحوالہ اسلام اور جدید معاشی مسائل موٴلفہ حضرت مفتی تقی عثمانی صاحب زید مجدہم)

رد المحتار (24/ 296):

وقد قال العلماء : إن القارئ إذا قرأ لأجل المال فلا ثواب له فأي شيء يهديه إلى الميت ، وإنما يصل إلى الميت العمل الصالح ، والاستئجار على مجرد التلاوة لم يقل به أحد من الأئمة ، وإنما تنازعوا في الاستئجار على التعليم ا هـ بحر ، ۔۔۔ وما استدل به بعض المحشين على الجواز بحديث البخاري في اللديغ فهو خطأ ؛ لأن المتقدمين المانعين الاستئجار مطلقا جوزوا الرقية بالأجرة ولو بالقرآن كما ذكره الطحاوي ؛ لأنها ليست عبادة محضة بل من التداوي.

شرح معاني الآثار لأحمد الطحاوي (4/ 128):

ومن استجعل جعلا على عمل يعمله فيما افترض الله عمله عليه فذلك عليه حرام لأنه إنما يعمله لنفسه ليؤدي به فرضا عليه ومن استجعل جعلا على عمل يعمله لغيره من رقية أو غيرها وإن كانت بقرآن أو علاج أو ما أشبه ذلك فذلك جائز والاستجعال عليه حلال فيصح بما ذكرنا معاني ما قد روى عن النبي صلى الله عليه و سلم في الباب من النهي ومن الإباحة ولا يتضاد ذلك فيتنافى وهذا كله قول أبي حنيفة وأبي يوسف ومحمدرحمةالله عليهم

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৪০১৬৭

নামাজে উঠা বসার তাকবিরগুলো কখন আদায় করা উচিত?


১৬ অক্টোবর, ২০২৩

বরুড়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৪০৯৩৩

রাসূলুল্লাহ সা. কি সম্পর্কে ওয়ারাকা ইবনে নওফিলের ভাতিজা ছিলেন?


১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

গোবিন্দগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৫৯৮৫২

আশহুরে হজে উমরায় গেলে কি হজ ফরজ হয়ে যায়?


৩০ এপ্রিল, ২০২৪

ঢাকা ১২১৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৪০৪৯১

নিষিদ্ধ সময়ের ঘুম


১ অক্টোবর, ২০২৩

লৌহজং

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy