আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১১৪৭৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম,আমি আমার শাশুড়িকে খুব ভয় পাই। অনেক সময় উনি কিছু জিজ্ঞেস করলে অশান্তির ভয়ে মিথ্যা কথা বলে ফেলি।এই মিথ্যা বলার জন্য কি আমার গুনাহ হবে?,

১৪ ডিসেম্বর, ২০২১

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





নিঃসন্দেহে মিথ্যা বলা হারাম। তবুও কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশেষ শর্তসাপেক্ষে তা বৈধ। কথাবার্তা উদ্দেশ্য সফল হওয়ার অন্যতম মাধ্যম। সুতরাং কোন সৎ উদ্দেশ্য যদি মিথ্যার আশ্রয় ব্যতিরেকে সাধন সম্ভবপর হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া বৈধ নয়। পক্ষান্তরে সে সৎ উদ্দেশ্য যদি মিথ্যা বলা ছাড়া সাধন সম্ভব না হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে মিথ্যা বলা বৈধ। পরন্তু যদি বাঞ্ছিত লক্ষ্য বৈধ পর্যায়ের হয়, তাহলে মিথ্যা বলা বৈধ হবে। আর যদি অভীষ্ট লক্ষ্য ওয়াজেবের পর্যায়ভুক্ত হয়, তাহলে তা অর্জনের জন্য মিথ্যা বলাও ওয়াজেব হবে। যেমন কোন মুসলিম এমন অত্যাচারী থেকে আত্মগোপন করেছে, যে তাকে হত্যা করতে চায় অথবা তার মাল-ধন ছিনিয়ে নিতে চায় এবং সে তা লুকিয়ে রেখেছে। এখন যদি কেউ তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয় [যে তার ঠিকানা জানে], তাহলে সে ক্ষেত্রে তাকে গোপন [ও নিরাপদ] রাখার জন্য তার পক্ষে মিথ্যা বলা ওয়াজেব। অনুরূপভাবে যদি কারো নিকট অপরের আমানত থাকে, আর কোন জালেম যদি তা বলপূর্বক ছিনিয়ে নিতে চায়, তাহলে তা গোপন করার জন্য মিথ্যা বলা ওয়াজেব। অবশ্য এ সমস্ত বিষয়ে সরাসরি স্পষ্টাক্ষরে মিথ্যা না বলে ‘তাওরিয়াহ’ করার পদ্ধতি অবলম্বন করাই উত্তম। ‘তাওরিয়াহ’ হল এমন বাক্য ব্যবহার করা, যার অর্থ ও উদ্দেশ্য শুদ্ধ তথা তাতে সে মিথ্যাবাদী নয়; যদিও বাহ্যিক শব্দার্থে এবং সম্বোধিত ব্যক্তির বুঝ মতে সে মিথ্যাবাদী হয়। পক্ষান্তরে যদি উক্ত পরিস্থিতিতে ‘তাওরিয়াহ’ পরিহার করে প্রকাশ্যভাবে মিথ্যা বলা হয়, তবুও তা হারাম নয়। এ ধরনের পরিস্থিতিতে মিথ্যা বলার বৈধতার প্রমাণে উলামায়ে কিরাম উম্মে কুলসুম কর্তৃক বর্ণিত হাদিসটি পেশ করেন। # উম্মে কুলসুম রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন যে, ‘‘লোকের মধ্যে সন্ধি স্থাপনকারী মিথ্যাবাদী নয়। সে হয় ভাল কথা পৌঁছায়, না হয় ভাল কথা বলে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) # উম্মে কুলসুম রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, তাঁকে মানুষের কথাবার্তায় মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে শুনিনি, তিন ক্ষেত্র ছাড়া: [১] যুদ্ধকালে [২] লোকদের ঝগড়া মিটাবার ক্ষেত্রে ও [৩] স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের [প্রেম বর্ধক] কথোপকথনে। (মুসলিম) স্বামী স্ত্রী একে অন্যকে খুশি করার জন্য ছোট মিথ্যা বলতে পারে। যেমন, রান্না ভাল না হলেও স্বামী বলল খুব ভাল রান্না হইছে। এরূপ গৃহস্থালী জিনিস। আল্লাহ আমাদের সকল অবস্থায় মিথ্যা পরিহার করার তাওফিক দিন আমিন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৭৮৯৮৭

গৃহস্থলি কাজে নারীর দায়বদ্ধতা


২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৩২৩২৪

স্বামী নামাজ পড়ে না, মারধর করে; স্ত্রীর করণীয় কী?


৪ এপ্রিল, ২০২৩

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৮০০০

স্ত্রীর যৌনাঙ্গে মুখ দেওয়া যাবে কি?


১৭ জানুয়ারী, ২০২৩

নীলফামারী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৯১৩১৩

আমার স্বামী, আমার জামাই বা আমার বউ বলার দ্বারা কি বিবাহ সম্পন্ন হয়?


২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ঢাকা ১২০৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আরিফুর রহমান

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy