আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

Dropshipping (ড্রপশিপিং) কি হালাল নাকি হারাম?

প্রশ্নঃ ৯৮২৯৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, Dropshipping কি হালাল নাকি হারাম? হারাম হলে কি উপায়ে করলে সেটা হালাল হবে? এবং dropshipping করতে কি কি বিষায় মাথায় রাখা উচিত?,

১৪ এপ্রিল, ২০২৫

Mymensingh

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ড্রপ শিপিংয়ের সাধারণ পদ্ধতি হলো বিক্রেতা নিজের ওয়েবসাইটে বা পেজে পণ্যের ছবি ও সমস্ত বিবরণ প্রদর্শন করেন। ওয়েবসাইট বা পেজের দর্শক জিনিসপত্র দেখার পর, পছন্দের জিনিসপত্রে ক্লিক করে এবং এটি কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন বিভিন্ন পদ্ধতিতে করা হয়। কখনও ক্যাশ অন ডেলিভারি করা হয়, অর্থাৎ যখন পণ্যটি নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয় তখন গ্রাহক অর্থ প্রদান করে। আবার কখনও কখনও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়। বিক্রেতা গ্রাহকের ক্রেডিট কার্ড নম্বরটি সংগ্রহ করে ব্যাংকে পাঠায় এবং সেখান থেকে তার টাকা বুঝে নেয়। কখনও কখনও বিকাশ/নগদ ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে করা হয়।

আর বিক্রেতা যে জিনিসটি বিক্রির জন্য পেশ করেন তিনি সেই জিনিসটির মালিক থাকেন না; বরং তিনি অর্ডার পাওয়ার পর জিনিসপত্রের ব্যবস্থা করেন এবং গ্রাহকের ঠিকানায় পৌঁছে দেন।

এক্ষেত্রে জিনিসপত্র ওয়েবসাইটে বা পেজে উপস্থাপন করা শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে ঈজাব নয়, বরং এটি একটি ঈজাবের আমন্ত্রণ মাত্র। এর উদাহরণ হলো, সুপারশপে পণ্য সাজিয়ে রাখার মতো। সুপারশপে পণ্য সাজিয়ে রাখা কোন ঈজাব নয়। এই কারণেই যখন কোনও ক্রেতা কোনও জিনিস সংগ্রহ করেন, তখন সাথে সাথে বিক্রয় সম্পন্ন হয় না, বরং কাউন্টারে যাওয়ার পরও ফেরত দেওয়ার সুযোগ থাকে। যদি সুপারশপে পণ্য সাজিয়ে রাখা ঈজাব হতো, তাহলে ক্রেতা কাউন্টারে যাওয়ার পর তা ফেরত দিতে পারতো না।

তো যখন একজন গ্রাহক কোন ওয়েবসাইটে নিজের পছন্দের জিনিসটিতে ক্লিক করে, তখন এটি একটি লিখিত ঈজাব বা বিক্রয়প্রস্তাবে পরিণত হয়। যখন এই প্রস্তাবটি কোম্পানি বা ব্যক্তির কাছে পৌঁছায়, তখন তারা তা গ্রহণ করে। ফলে উভয় পক্ষের দ্বারা লিখিতভাবে চুক্তিটি কার্যকর হয়।

তো এই পদ্ধতিতে কেনা-বেচার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখা জরুরী:

১. বিক্রয়কৃত জিনিসের মান ও মূল্য সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিবরণ প্রদান করতে হবে, যাতে কোন ধরণের জাহালাত ও অস্পষ্টতা না থাকে।

২. কোনও নাজায়েজ শর্ত আরোপ করা যাবে না।

৩. কেবল পণ্যের ছবি দেখলেই (خيار الرؤية) বাতিল হবে না, তাই যদি জিনিসটি ছবির সাথে না মেলে, তাহলে ক্রেতা এটি ফেরত দিতে পারবে।

৪. ওয়েবসাইটে কোনও জীবন্ত প্রাণীর ছবি পোস্ট করা যাবে না।

৬. যদি ওয়েবসাইটের মালিকরা অর্ডার পাওয়ার পর অন্য কোন জায়গা থেকে জিনিসপত্র সরবরাহ করে থাকে, তাহলে পণ্যটি নিজেদের দখলে না আসা পর্যন্ত গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা যাবে না। তবে তারা ওয়াকিল বিশশিরা (মূল বিক্রেতার প্রতিনিধি) হিসেবে চুক্তি করতে পারবে, অথবা বিক্রি করার পরিবর্তে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে।

৬. ওয়েবসাইটে পণ্য বিক্রেতা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা নিবেন না। এর পরিবর্তে কেবল ডেবিট কার্ড বা ক্যাশ অন ডেলিভারি ইত্যাদি মাধ্যমে লেনদেন করবেন; কারণ ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা জায়েয নয়। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেও অর্থ প্রদান করে এবং কোনও সুদ না দেয় তবুও জায়েজ নয়।

যদি ওয়েবসাইট থেকে কেনা জিনিসটি বর্ণনার সাথে না মিলে, তাহলে গ্রাহক তা ফেরত দিতে পারবে (অর্থাৎ, যদি জিনিসটি মানসম্মত না হয় অথবা দেখার পর গ্রাহক পছন্দ না করে তবে তা ফেরত দিতে পারবে)। অথবা যদি জিনিসটিতে এমন কোনও ত্রুটি থাকে যা সম্পর্কে গ্রাহক অবগত ছিলো না, তাহলে ত্রুটির কারণে গ্রাহক তা ফেরত দিতে পারবে। তবে বিনা কারণে ক্রেতার লেনদেন বাতিল করার অধিকার থাকবে না।

তথ্যসূত্র:-

الفتاوى الهندية - (20 / 203):

"شراء ما لم يره جائز، كذا في الحاوي. وصورة المسألة أن يقول الرجل لغيره: بعت منك هذا الثوب الذي في كمي هذا، وصفته كذا، والدرة التي في كفي هذه، وصفتها كذا أو لم يذكر الصفة، أو يقول: بعت منك هذه الجارية المنتقب ... وإن أجازه قبل الرؤية لم يجز وخياره باق على حاله، فإذا رآه إن شاء أخذ وإن شاء رده، هكذا في المضمرات".

الفتاوى الهندية - (20 / 288):

"خيار العيب يثبت من غير شرط، كذا في السراج الوهاج. وإذا اشترى شيئًا لم يعلم بالعيب وقت الشراء ولا علمه قبله والعيب يسير أو فاحش فله الخيار إن شاء رضي بجميع الثمن وإن شاء رده، كذا في شرح الطحاوي. وهذا إذا لم يتمكن من إزالته بلا مشقة، فإن تمكن فلا كإحرام الجارية".

فتوی نمبر : 144008200184
دارالافتاء : جامعہ علوم اسلامیہ علامہ محمد یوسف بنوری ٹاؤن

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার
শিক্ষক, হাদীস ও ফিকহ বিভাগ
মারকাযুশ শরীয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৬০৩১

বাইয়ে সালাম بيع السلم


৫ জানুয়ারী, ২০২৩

নারায়ণগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩১০৬৩

পরচুলা ডেলিভারি দেওয়ার হুকুম


৮ এপ্রিল, ২০২৩

Dubai

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২২৫৬০

মনিটাইজেশন চালু রেখে ইউটিউবের ইনকাম কি সদকা করা যাবে?


২৯ অক্টোবর, ২০২৩

Dhaka, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯৮১৯০

সৎ ব্যবসায়ীর হাশর কাদের সঙ্গে হবে?


৭ এপ্রিল, ২০২৫

কুমারখালী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy