আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মনিটাইজেশন চালু রেখে ইউটিউবের ইনকাম কি সদকা করা যাবে?

প্রশ্নঃ ২২৫৬০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমার ৫টি ইউটুব চ্যানেল আছে। আমি মূলত ইংরেজি প্রভাষক। ক্লাসের ভিডিও চ্যানেলে আপলোড দিই.।.কোন মানুষের ছবি/ভিডিও দিই না। আর ইসলামিক কন্টেন্ট এর উপর ভিডিও আপলোড করি দ্বীনি দাওয়াতের উদ্দেশ্যে। আমি একজন তাবলিগী সাথি। চ্যানেলের মনিটাইজেশন পেলে আমি কি সম্পূর্ণ টাকা দান করে দিতে পারবো? না মনিটাইজেশন অফ রাখবো? কোনটা করলে আমার জন্য ভালো হবে?,

২৯ অক্টোবর, ২০২৩

Dhaka, Bangladesh

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আমাদের জানা মতে ইউটিউবের মাধ্যমে যে টাকা আয় করা হয় তার সোর্স হলো, গুগলের একটি বিশেষ সার্ভিস–গুগল এডসেন্স। এর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন অর্থের বিনিময়ে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সম্প্রচার করে। আর সেখান থেকে নির্ধারিত একটা অংশ ইউটিউবারদের দিয়ে থাকে।
সুতরাং বিজ্ঞাপনগুলো যদি অশ্লীল ও হারাম পণ্যের হয় তাহলে তা থেকে প্রাপ্ত অর্থ হালাল হবে না। বরং, হারাম অর্থ হওয়ার পাশাপাশি হারামের প্রচার ও সহযোগিতা করার গুনাহ হবে। এক্ষেত্রে আপনার কন্টেন্ট ইসলামিক এবং জায়েজ হওয়া সত্ত্বেও সেগুলোর মাঝে থাকা অ্যাডের কারণে তার মাধ্যমে হারামও প্রচার পাচ্ছে।
মহান আল্লাহ বলেন,
إِنَّ الَّذِيْنَ يُحِبُّوْنَ أَنْ تَشِيْعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِيْنَ آمَنُوْا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ-
‘যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য ইহকালে ও পরকালে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি’। (নূর ১৯)
নোমান ইবনে বশির রাযি থেকে বর্ণিত
ﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﻠَﺎﻝَ ﺑَﻴِّﻦٌ ، ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡَ ﺑَﻴِّﻦٌ، ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻤَﺎ ﻣُﺸْﺘَﺒِﻬَﺎﺕٌ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻬُﻦَّ ﻛَﺜِﻴﺮٌ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ، ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺗَّﻘَﻰ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﺍﺳْﺘَﺒْﺮَﺃَ ﻟِﺪِﻳﻨِﻪِ ، ﻭَﻋِﺮْﺿِﻪِ ، ﻭَﻣَﻦْ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺸُّﺒُﻬَﺎﺕِ ﻭَﻗَﻊَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡِ ، ﻛَﺎﻟﺮَّﺍﻋِﻲ ﻳَﺮْﻋَﻰ ﺣَﻮْﻝَ ﺍﻟْﺤِﻤَﻰ ، ﻳُﻮﺷِﻚُ ﺃَﻥْ ﻳَﺮْﺗَﻊَ ﻓِﻴﻪِ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﻟِﻜُﻞِّ ﻣَﻠِﻚٍ ﺣِﻤًﻰ ، ﺃَﻟَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﺣِﻤَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﻣَﺤَﺎﺭِﻣُﻪُ
নিশ্চয়ই হালাল স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট, আর এ উভয়ের মাঝে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়, অনেক লোকই সেগুলো জানে না। যে ব্যক্তি এসব সন্দেহজনক বিষয় থেকে দূরে থাকে সে তার দ্বীন ও মর্যাদাকে নিরাপদে রাখে, আর যে লোক সন্দেহজনক বিষয়ে পতিত হবে সে হারামের মধ্যে লিপ্ত হয়ে পড়বে। যেমন কোন রাখাল সংরক্ষিত চারণভূমির পাশে পশু চরায়, আশংকা রয়েছে সে পশু তার ভেতরে গিয়ে ঘাস খাবে। সাবধান! প্রত্যেক রাজারই সংরক্ষিত এলাকা থাকে, সাবধান আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা হলো তার হারামকৃত বিষয়গুলো। জেনে, রেখো, দেহের মধ্যে এক টুকরা গোশত আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সমস্ত দেহই সুস্থ থাকে। আর যখন তা নষ্ট হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহই নষ্ট হয়ে যায়। স্মরণ রেখো, তা হলো 'কালব' হৃদয়।(সহীহ মুসলিম-১৫৯৯)
-সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমাদের কাছে নিরাপদ মনে হচ্ছে এহেন ইনকাম থেকে বেঁচে থাকা। আর উপার্জন যদি সম্পূর্ণ হালাল না হয় তাহলে তা সদকা করেও কোনো সাওয়াব পাওয়া যাবে না। তাই মনিটাইজেশন অফ রাখাই বাঞ্চণীয়।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৬৩৮১৭

জুলুমের শিকার হওয়া থেকে বাঁচার দোয়া


৯ জুন, ২০২৪

ঢাকা ১১০০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩৪১৪৯

মায়ের মিশ্রিত পরিবেশে চাকরি করার কারণে ছেলে দাইয়ুস হয়ে যাবে কি?


২২ জুন, ২০২৩

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৪২৩০৩

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৬৮০৮

পেশা হিসেবে খেলাকে গ্রহণ করা জায়েয হবে কি?


২২ ডিসেম্বর, ২০২২

বসুরহাট ৩৮৫০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৬১৬০

সহশিক্ষার হুকুম


৬ ডিসেম্বর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy