আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

রমজান মাসে কারা ক্ষমা পাবে না?

প্রশ্নঃ ৯৩১৮৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, রমজান মাসে কোন শ্রেণীর লোকদেরকে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করেন না?

৫ মার্চ, ২০২৫
বগুড়া ৫৮০০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই! রমজান মাসে কাদেরকে ক্ষমা করা হবে না, নির্দিষ্ট আকারে তা হাদিসে বর্ণিত হয়নি। তবে এক হাদীসে এভাবে পাওয়া যায়
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ لَمْ يَدَعْ قَوْلَ الزُّورِ وَالعَمَلَ بِهِ، فَلَيْسَ لِلَّهِ حَاجَةٌ فِي أَنْ يَدَعَ طَعَامَهُ وَشَرَابَهُ»

আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।

আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ (সহীহ বুখারী)
হাদীস নং: ১৭৮২ আন্তর্জাতিক নং: ১৯০৩

হাদীসের ব্যাখ্যাঃ
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে দেখেন, সর্বাবস্থায় দেখেন, তাঁর দৃষ্টি থেকে আমরা কখনোই লুকাতে পারি না— এ বিশ্বাস যার মনমস্তিষ্কে যতটা জাগরুক থাকে, গোনাহের কাজ থেকে তিনি ততটাই বেঁচে থাকতে পারেন। তাই আল্লাহ তাআলা দেখছেন— এ বিশ্বাসে কেউ যখন গোপনে পানাহার থেকে বিরত থাকছে, পরবর্তীতে যখন তার সামনে আরেকটি গোনাহের কাজ আসে, তখনো সে বিশ্বাসই তাকে এ গোনাহ থেকেও বাধা দিয়ে রাখে। আর রমযান মাসজুড়ে কেউ যখন এভাবে সবরকমের গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে, পরবর্তী সময়গুলোতেও তার জন্য তাকওয়ার এ পথ ধরে চলা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

আইনের কথা হল, কেউ যদি সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সিয়ামের নিয়তে পানাহার ও স্ত্রীমিলন থেকে বিরত থাকে, এতটুকুতেই তার সিয়াম আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই হাদীসে শুনিয়েছেন কঠোর এক সতর্কবাণী—

(সিয়ামরত অবস্থায়) যে মিথ্যা কথা আর অন্যায় কাজ ছাড়তে পারল না, তার পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন আল্লাহর নেই। —সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯০৩

অর্থাৎ সিয়ামের হক পরিপূর্ণরূপে আদায় করতে হলে অন্যায় কাজ ছাড়তে হবে, অন্যায় কথা ছাড়তে হবে, পাপে জড়ানো যাবে না। তবেই হবে যথার্থ সিয়ামসাধনা। অন্যথায় এ সিয়াম পালনে ফরয দায়িত্বটুকু হয়তো পালিত হবে, কিন্তু এতে সিয়ামের প্রাণ বলে কিছু থাকবে না।

না দেখেও আল্লাহ তাআলাকে ভয় করার এ প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে আমরা যে কেবলই হারাম কাজ থেকে বেঁচে থাকতে পারব, তা নয়; বরং এ প্রশিক্ষণ আমাদের যতটা পাকাপোক্ত হবে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ইবাদতগুলোও ততটা প্রাণবন্ত হবে।


সুতরাং প্রশ্নোত্তর ক্ষেত্রে বলা যায় যারা রমজানের যথাযথ হোক আদায় করবে না, রমজানের গুরুত্ব দিবে না, রোজাসহ যাবতীয় আমল হক আদায় করে পালন করবে না, গুনাহ থেকে বিরত থাকবেনা, হারাম বর্জন করবে না, শরীয়ত নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বিরত থাকবেনা
তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা পাবে না।

والله اعلم بالصواب

শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর