প্রশ্নঃ ৮৫৩৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আছসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি-ওবারাকাতু।। আমার প্রশ্ন হলোঃ- "ইসলামে সালাম কাদের জায়েজ রয়েছে, কাদের দেওয়া যাবে না, সালাম কখন দিতে হয়, কেন ঐ সময় দেওয়া যায় না.?,
২৯ আগস্ট, ২০২১
যশোর
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
১- সালাম : এক অতুলনীয় সামাজিক বিধান
সমাজে চলতে গেলে একজন মুসলিমের সাথে অন্য মুসলিমের সাক্ষাৎ হয়। তখন একে অন্যের কল্যাণ কামনায় সালাম দিয়ে কথা শুরু করে। সালাম মুসলিমের স্বতন্ত্র সামাজিক শিষ্টাচার।
স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমে সালামের আদেশ দিয়েছেন এবং এসংক্রান্ত আদব শিখিয়েছেন। আর রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অগণিত হাদীসে সালামের বিধি-বিধান বর্ণনা করেছেন। যেগুলো জমা করলে স্বতন্ত্র একটি বই হয়ে যাবে।
কারো ঘরে প্রবেশের সময় আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে সালামের দির্দেশ দিয়েছেন-
فَاِذَا دَخَلْتُمْ بُیُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِكُمْ تَحِیَّةً مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُبٰرَكَةً طَیِّبَةً.
যখন তোমরা ঘরে ঢুকবে নিজেদের লোকদের সালাম করবে- কারণ এটা সাক্ষাতের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত বরকতপূর্ণ ও পবিত্র দুআ। -সূরা নূর (২৪) : ৬১
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُیُوْتًا غَیْرَ بُیُوْتِكُمْ حَتّٰی تَسْتَاْنِسُوْا وَ تُسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَهْلِهَا .
হে মুমিনগণ! নিজ গৃহ ছাড়া অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না, যতক্ষণ না অনুমতি গ্রহণ কর এবং তার বাসিন্দাদের সালাম দাও। -সূরা নূর (২৪) : ২৭
আর সালামের জবাব কীভাবে দিতে হবে তাও শেখানো হয়েছে কুরআনে। সালামের বাক্য থেকে উত্তম বাক্যে, বাড়িয়ে উত্তর দেবে; নাহলে অন্তত সালামদাতার সমান বাক্যে উত্তর দেবে। যে ব্যক্তি সালাম শুনেছে, সালামের জবাব দেয়া তার উপর ওয়াজিব। জবাব দেয়ার ক্ষেত্রে অবহেলা গ্রহণযোগ্য নয়-
وَ اِذَا حُیِّیْتُمْ بِتَحِیَّةٍ فَحَیُّوْا بِاَحْسَنَ مِنْهَاۤ اَوْ رُدُّوْهَا.
যখন তোমাদেরকে কেউ সালাম দেয়, তখন তোমরা (তাকে) তদপেক্ষা উত্তমরূপে সালাম (জবাব) দিয়ো, কিংবা (অন্ততপক্ষে) সে শব্দেই সালামের জবাব দিয়ো। -সূরা নিসা (৪) : ৮৬
একজন সত্যিকারের মুসলিম কখনো সালাম থেকে গাফেল হতে পারে না।
সালাম দেওয়ার জন্য শরীয়ত নির্ধারিত বাক্য হল-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও উপরোক্ত বাক্যে সালাম দিতেন এবং মুসলিমদের এভাবে সালাম দিতে শিখিয়েছেন। এক ব্যক্তি এসে নবীজীকে সালাম দিল (এ বাক্যে)-
عَلَيْكَ السّلَامُ يَا رَسُولَ اللهِ.
তখন নবীজী বললেন-
إِنّ عَلَيْكَ السّلَامُ تَحِيّةُ المَيِّتِ...
عَلَيْكَ السَّلَامُ এটা তো মৃতদের অভিবাদন (একথা তিনি তিনবার বললেন)। এরপর বললেন-
إِذَا لَقِيَ الرَّجُلُ أَخَاهُ المُسْلِمَ فَلْيَقُلْ: السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
যখন কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ করে তখন যেন বলে-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
-জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭২১
সালামের বাক্য স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলা নির্বাচন করেছেন। আদম সন্তানদের জন্য এই বাক্যকেই তাহিয়্যাহ তথা অভিবাদন স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন। এ বাক্যের ভাব ও ভাষা, শব্দ ও সৌন্দর্য তুলনাহীন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টির পর বললেন-
اذْهَبْ فَسَلِّمْ عَلَى أُولَئِكَ مِنَ المَلاَئِكَةِ، فَاسْتَمِعْ مَا يُحَيّونَكَ، تَحِيّتُكَ وَتَحِيّةُ ذُرِّيّتِكَ، فَقَالَ السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ، فَقَالُوا: السّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللهِ، فَزَادُوهُ: وَرَحْمَةُ اللهِ.
যাও! ফিরিশতাদের ওই দলকে সালাম দাও এবং খেয়াল করে শোনো তারা তোমার সালামের কী জবাব দেয়; কারণ, এটিই হবে তোমার এবং তোমার বংশধরের সালাম অভিবাদন। তখন আদম আলাইহিস সালাম বললেন-
السّلاَمُ عَلَيْكُمْ
ফিরিশতারা জবাবে বললেন-
السّلاَمُ عَلَيْكَ وَرَحْمَةُ اللهِ
ফিরিশতারা وَرَحْمَةُ اللهِ বাড়িয়ে বললেন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৩৩২৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৮৪১
মোটকথা, সালামের এ শব্দ-বাক্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেই এসেছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
فَاِذَا دَخَلْتُمْ بُیُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِكُمْ تَحِیَّةً مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُبٰرَكَةً طَیِّبَةً .
যখন তোমরা ঘরে ঢুকবে নিজেদের লোকদের সালাম করবে- কারণ এটা সাক্ষাতের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে প্রদত্ত বরকতপূর্ণ ও পবিত্র দুআ। -সূরা নূর (২৪) : ৬১
উপরোক্ত বর্ণনায় আমরা দেখলাম, আদম আলাইহিস সালামের উত্তরে ফিরিশতারা ‘ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বাড়িয়ে বললেন- এ আদব আল্লাহ তাআলাই শিখিয়েছেন। যেমনটি আমরা উপরে সূরা নিসার ৮৬ নং আয়াত থেকে জানতে পারলাম। আর এ বাড়িয়ে বলার ফযীলতও বর্ণিত হয়েছে হাদীস শরীফে। ইমরান ইবনে হুছাইন রা. বলেন-
أَنّ رَجُلًا جَاءَ إِلَى النّبِيِّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَقَالَ: السّلَامُ عَلَيْكُمْ، قَالَ: قَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: عَشْرٌ ثُمّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ: السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: عِشْرُونَ. ثُمّ جَاءَ آخَرُ فَقَالَ: السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: ثَلَاثُونَ.
একবার এক ব্যক্তি এসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সালাম দিল-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ.
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
عَشْرٌ.
দশ। অর্থাৎ সে দশ নেকী লাভ করেছে।
আরেক ব্যক্তি এসে সালাম দিল, বলল-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ.
এবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
عِشْرُونَ.
বিশ। অর্থাৎ সে বিশ নেকী লাভ করেছে।
আরেক ব্যক্তি এসে সালাম দিল, বলল-
السّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ.
এবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
ثَلَاثُونَ.
ত্রিশ। অর্থাৎ সে ত্রিশ নেকী লাভ করেছে। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৬৮৯
সুতরাং আমরাও যখন সালাম দিব। পূর্ণ সালাম দেওয়ার চেষ্টা করব। এবং ত্রিশ নেকী লাভ করব।
তেমনি পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকে সালাম দিব। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, এক লোক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করল- ইসলামের কোন্ আমলটি (আমার জন্য) উত্তম? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
تُطْعِمُ الطّعَامَ، وَتَقْرَأُ السّلاَمَ عَلَى مَنْ عَرَفْتَ وَمَنْ لَمْ تَعْرِفْ.
(ক্ষুধার্তকে) খাবার খাওয়াবে এবং পরিচিত-অপরিচিত সবাইকে সালাম দেবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৩৯
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের সাতটি অছিয়ত করেছিলেন, যেন তাঁরা সামাজিক জীবনে তা আঁকাড়ে থাকেন। তাদের পরে উম্মতে মুসলিমাও যেন তা ধরে রাখে। তার মধ্যে একটি হল সালাম।
বারা ইবনে আযেব রা. সেই সাতটি বিষয় বর্ণনা করছেন। তিনি বলেন-
أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ بِسَبْعٍ: بِعِيَادَةِ المَرِيضِ، وَاتِّبَاعِ الجَنَائِزِ، وَتَشْمِيتِ العَاطِسِ، وَنَصْرِ الضّعِيفِ، وَعَوْنِ المَظْلُومِ، وَإِفْشَاءِ السّلاَمِ، وَإِبْرَارِ المُقْسِمِ.
তিনি আমাদেরকে (সাতটি বিষয় পালনের) আদেশ দিয়েছেন- রোগীর খোঁজখবর নেওয়া, জানাযার পিছনে চলা, হাঁচিদাতার জবাব দেওয়ার (يَرْحَمُكَ اللهُ বলা), দুর্বলকে সহযোগিতা করা, নির্যাতিতকে সাহায্য করা, সালামের প্রসার ঘটানো, কসমকারীকে (কসম থেকে) মুক্ত করা (জন্য সহয়তা করা)। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৩৫
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলামের প্রচলনকে অপরিসীম গুরুত্ব দিয়েছেন। সালাম বাস্তাবায়নে উদ্বুদ্ধ করেছেন। হাদীস ভাÐারে একটি বড় অংশ জুড়ে আছে সালামের বিবরণ। সালাম প্রচলনের ফলে মুমিনদের পরস্পরে ভালবাসা সৃষ্টি হয়। তাদের হৃদয়ের বন্ধন হয় দৃঢ় ও অটুট। তিনি বলেন-
لَا تَدْخُلُونَ الْجَنّةَ حَتّى تُؤْمِنُوا، وَلَا تُؤْمِنُوا حَتّى تَحَابّوا، أَوَلَا أَدُلّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ؟ أَفْشُوا السّلَامَ بَيْنَكُمْ.
তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না ঈমান আনবে। আর তোমরা ততক্ষণ পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না পরস্পরকে মহব্বত করতে পারবে? আমি কি তোমাদের এমন কিছুর কথা বলে দিব, যার মাধ্যমে তোমরা পরস্পরকে ভালবাসবে। তোমরা নিজেদের মাঝে সালামের প্রসার ঘটাও। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৪
সালামের আরো কিছু আদব রয়েছে। আমরা কয়েকটি আদব নিয়ে আলোচনা করব।
কে কাকে সালাম দেবে? ছোট বড়কে, নাকি বড় ছোটকে। পায়ে হেঁটে চলা ব্যক্তি আরোহীকে, নাকি আরোহী পায়ে চলা ব্যক্তিকে। বসা ব্যক্তি পথিককে সালাম দেবে, নাকি পথিক বসা ব্যক্তিকে। ছোট জামাত বড় জামাতকে, নাকি বড় জামাত ছোট জামাতকে ইত্যাদি।
আবু হুরায়রা রা. বর্ণিত বিভিন্ন হাদীসে এ আদবগুলো পাওয়া যায়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
يُسَلِّمُ الرّاكِبُ عَلَى المَاشِي، وَالمَاشِي عَلَى القَاعِدِ، وَالقَلِيلُ عَلَى الكَثِيرِ.
আরোহী ব্যক্তি সালাম দেবে পায়ে হেঁটে চলা ব্যক্তিকে। হেঁটে চলা ব্যক্তি সালাম দেবে বসে থাকা ব্যক্তিকে। অল্প মানুষের জামাত সালাম দেবে বেশি মানুষের জামাতকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৩২
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, সহীহ বুখারীর অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে-
يُسَلِّمُ الصّغِيرُ عَلَى الكَبِيرِ.
বয়সে ছোটজন সালামা দেবে বড়জনকে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬২৩১
তবে বড়দেরও উচিত ছোটদের সালাম দেওয়া। যাতে করে তাদের মাঝে সালামের অভ্যাস গড়ে ওঠে। নবীজী থেকে এবং আমাদের সালাফ থেকে আমরা এ শিক্ষা লাভ করেছি। সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে। সাইয়ার বলেন-
كُنْتُ أَمْشِي مَعَ ثَابِتٍ الْبُنَانِيِّ، فَمَرّ بِصِبْيَانٍ فَسَلّمَ عَلَيْهِمْ، وَحَدّثَ ثَابِتٌ أَنّهُ كَانَ يَمْشِي مَعَ أَنَسٍ، فَمَرّ بِصِبْيَانٍ فَسَلّمَ عَلَيْهِمْ، وَحَدّثَ أَنَسٌ أَنّهُ كَانَ يَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فَمَرّ بِصِبْيَانٍ فَسَلّمَ عَلَيْهِمْ.
আমি ছাবেত আলবুনানী রাহ.-এর সাথে হাঁটছিলাম। তিনি কিছু শিশুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে সালাম দিলেন এবং বললেন, তিনি আনাস রা.-এর সাথে হাঁটছিলেন। তিনি কিছু শিশুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সালাম দিলেন এবং বললেন, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে হাঁটছিলেন। তিনি কিছু শিশুর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে সালাম দিয়েছেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২১৬৮
ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষা হল- ঘরে ঢুকে কোমল ও নিচুস্বরে সালাম দেবে। বিশেষ করে অনেক রাতে যখন ঘরে ঢুকবে তখন এমন কোমল ও নিচুস্বরে সালাম দেবে, যেন যারা জেগে আছে তারা শুনতে পায় এবং যারা ঘুমিয়ে আছে তারা জেগে না উঠে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনই করতেন। হাদীস শরীফে এসেছে-
...فَيَجِيءُ مِنَ اللّيْلِ فَيُسَلِّمُ تَسْلِيمًا لَا يُوقِظُ نَائِمًا، وَيُسْمِعُ الْيَقْظَانَ.
... তিনি রাতে ঘরে এসে এমনভাবে সালাম দিতেন, যাতে ঘুমন্ত ব্যক্তিরা জেগে না যায় এবং জাগ্রতরা শুনতে পায়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২০৫৫
যাইহোক, ইসলামে সালাম এতটাই গুরুত্বের দাবি রাখে যে, সালামের আদব, সালামের জবাব দেওয়ার আদব কুরআনে কারীমে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা শিখিয়েছেন। এ থেকেও আমরা মুসলিমের জীবনে সালামের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারি। সুতরাং কোনো মুসলিমের জন্য সম্ভব নয়; ইসলামের সালাম থেকে গাফেল হয়ে শুভ সকাল বা ‘গুড মর্নিং’ কালচারকে গ্রহণ করে।
২- সকল ইবাদতের মত সালামেরও কিছু আদব-কায়দা আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্র এমন আছে যে সব ক্ষেত্রে সালাম দেয়া মাকরূহ। সে ক্ষেত্রগুলোকে আল্লামা গায্যি রহ. নিম্নোক্ত কাব্যকারে উল্লেখ করেছেন।
سلامك مكروه على من ستسمع
ومن بعد ما أبدي يسن ويشرع
مصل وتال ذاكر ومحدث
خطيب ومن يصغي إليهم ويسمع
مكرر فقه جالس لقضائه
ومن بحثوا في الفقه دعهم لينفعوا
مؤذن أيضًا مع مقيم مدرس
كذا الأجنبيات الفتيات أمنع
ولعاب شطرنج وشبه بخلقهم
ومن هو مع أهل له يتمتع
ودع كافرًا أيضًا وكاشف عورة
ومن هو في حال التغوط أشنع
ودع آكلا إلا إذا كنت جائعًا
وتعلم منه أنه ليس يمنع
كذلك أستاذ مغن مطير
فهذا ختام والزيادة تنفع
অর্থাৎ নিম্নোক্ত ক্ষেত্রগুলোতে সালাম দেয়া মাকরূহ। এ ছাড়া বাকী যাদের সাথে তোমার দেখা হবে, তাদের সালাম দেয়া সুন্নত ও বৈধ।
১) নামাজ পড়া অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
২) কোরআন তিলাওয়াত করা অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৩) জিকির ও মোরাকাবায়রত অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৪) খাবার খাওয়া অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৫) হাদিস-ফিকাহ বা অন্যান্য তালীমি মজলিসে মশগুল এমন অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৬) ওয়াজ ও নসীহত শুনা অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৭) বিচারক বিচার কার্যে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৮) আযানরত, ইকামতরত কিংবা পাঠদানরত অবস্থায় কোন ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
৯) অপরিচিত যুবতী নারী [যাদের সালাম দেয়াতে ফিতনার আশংকা থাকে] তাদের সালাম দেওয়া কোনক্রমেই উচিত নয়।
১০) যারা দাবা খেলায় মগ্ন তাদের ও তাদের মত (অন্য খেলায়) মত্ত লোকদের সালাম দেওয়া উচিত নয়।
১১) যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে খেল-তামাশায় মগ্ন তাকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
১২) অমুসলিমকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
১৩) ইস্তিঞ্জারত অবস্থায় অথবা সতরবিহীন অবস্থায় থাকলে ওই ব্যক্তিকে সালাম দেওয়া উচিত নয়।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
১২৮৬৫
১৪ জানুয়ারী, ২০২২
গাজীপুর

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
৯৮২০২
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্যান্য নবীর প্রতিও সালাত ও সালাম পাঠ করা যাবে কি?
৭ এপ্রিল, ২০২৫
ঢাকা ১২০৭

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার
১১৩৫০
অমুসলিমদের সালাম বা নমস্কার দেওয়ার বিধন
১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে