আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নারীকে সালাম দেয়ার বিধান

প্রশ্নঃ ৩৪৩০৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, যে কোনো মুসলিম মহিলাকে সালাম দেওয়া যাবে? গেলেও কাদেরকে দেওয়া যাবে? বিস্তারিত কুরআন, হাদিস ইজমা ও কিয়াসের আলোকে জানালে উপকৃত হবো।

৫ জুন, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


এবিষয়ে ‘আল মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যা’-তে এসেছে,

سَلاَمُ الْمَرْأَةِ عَلَى الْمَرْأَةِ يُسَنُّ كَسَلاَمِ الرَّجُلِ عَلَى الرَّجُلِ وَرَدِّ السَّلاَمِ مِنَ الْمَرْأَةِ عَلَى مِثْلِهَا كَالرَّدِّ مِنَ الرَّجُلِ عَلَى سَلاَمِ الرَّجُلِ وَأَمَّا سَلاَمُ الرَّجُلِ عَلَى الْمَرْأَةِ فَإِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ زَوْجَةً أَوْ أَمَةً أَوْ مِنَ الْمَحَارِمِ فَسَلاَمُهُ عَلَيْهَا سُنَّةٌ وَرَدُّ السَّلاَمِ مِنْهَا عَلَيْهِ وَاجِبٌ بَلْ يُسَنُّ أَنْ يُسَلِّمَ الرَّجُلُ عَلَى أَهْلِ بَيْتِهِ وَمَحَارِمِهِ وَإِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ أَجْنَبِيَّةً فَإِنْ كَانَتْ عَجُوزًا أَوِ امْرَأَةً لاَ تُشْتَهَى فَالسَّلاَمُ عَلَيْهَا سُنَّةٌ وَرَدُّ السَّلاَمِ مِنْهَا عَلَى مَنْ سَلَّمَ عَلَيْهَا لَفْظًا وَاجِبٌ وَأَمَّا إِنْ كَانَتْ تِلْكَ الْمَرْأَةُ شَابَّةً يُخْشَى اْلافْتِتَانُ بِهَا أَوْ يُخْشَى افْتِتَانُهَا هِيَ أَيْضًا بِمَنْ سَلَّمَ عَلَيْهَا فَالسَّلاَمُ عَلَيْهَا وَجَوَابُ السَّلاَمِ مِنْهَا حُكْمُهُ الْكَرَاهَةُ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ وَالْحَنَابِلَةِ وَذَكَرَ الْحَنَفِيَّةُ أَنَّ الرَّجُلَ يَرُدُّ عَلَى سَلاَمِ الْمَرْأَةِ فِيْ نَفْسِهِ إِنْ سَلَّمَتْ هِيَ عَلَيْهِ وَتَرُدُّ هِيَ أَيْضًا فِيْ نَفْسِهَا إنْ سَلَّمَ هُوَ عَلَيْهَا

যেমনিভাবে পুরুষ পুরুষকে সালাম দেয়া সুন্নাত, অনুরূপভাবে নারী নারীকে সালাম দেয়া সুন্নাত। পুরুষ পুরুষের সালামের উত্তর দেয়া এবং নারী নারীর সালামের উত্তর দেয়ার বিধানও অভিন্ন। তবে পুরুষ নারীকে সালাম দেয়ার ক্ষেত্রে কথা হল, যদি ওই নারী নিজ স্ত্রী, বাঁদি অথবা মাহরাম হয় তাহলে তাকে সালাম দেয়া সুন্নাত এবং তার সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব। বরং সুন্নাত হল, পুরুষ তার পরিবারকে ও মাহরামকে সালাম দিবে। আর যদি ওই নারী বেগানা হয় তাহলে যদি সে বৃদ্ধা হয় কিংবা এমন হয় যে, তার প্রতি আকর্ষণ অনুভূত হয় না তাহলে তাকেও সালাম দেয়া সুন্নাত এবং তার সালামের উত্তর সশব্দে দেয়া ওয়াজিব। পক্ষান্তরে সে যদি যুবতী/তরুণী হয় যে, তার মাধ্যমে পুরুষ কিংবা পুরুষের মাধ্যমে সে ফেতনায় পড়ার আশঙ্কা আছে তাহলে তাকে সালাম দেয়া এবং তার সালামের উত্তর দেয়া শাফিঈ মালেকি ও হাম্বলি মাযহাব মতে মাকরুহ। আর হানাফি মাযহাব মতে বেগানা নারী যদি সালাম দেয় তাহলে পুরুষ মনে মনে উত্তর দিবে। আর বেগানা পুরুষ যদি সালাম দেয় তাহলে নারী মনে মনে উত্তর দিবে। (আল মাউসুআ’তুল ফিকহিয়্যা আল কুয়েতিয়া ৬/১৬৬)
ইমাম বুখারী রহ. সহিহ বুখারিতে একটি অধ্যায়ের শিরোনাম দিয়েছেন–‘পুরুষ নারীকে এবং নারী পুরুষকে সালাম দেয়া’। উক্ত শিরনামের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবনু হাজার আসকালানি রহ. বলেন,
والمراد بجوازه أن يكون عند أمن الفتنة
জায়েয তখন হবে যখন ফেতনা থেকে নিরাপদ হবে। (ফাতহুল বারী ১১/৩৬)
ইমাম নববী রহ. বলেন,
وإن كانت أجنبية يخاف الافتتان بها لم يسلم الرجل عليها ، ولو سلم لم يجز لها رد الجواب ، ولم تسلم هي عليه ابتداء ، فإن سلمت لم تستحق جواباً
যদি পরনারী এমন হয় যে ,ফিতনার আশঙ্কা আছে তাহলে পুরুষ তাকে সালাম দিবে না। যদি সে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে মহিলা উত্তর দিবে না। আর নারী পরপুরুষকে আগে সালাম দিবে না। যদি সে সালাম দিয়ে দেয় তাহলে সে উত্তর পাওয়ার উপযুক্ত হবে না। (আলাযকার ৪০৭)

والله اعلم بالصواب

শাইখ উমায়ের কোব্বাদী সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#২৩৬৩১
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম। হযরত আমার প্রশ্নটি হল। ঈদের দিন ঈদের নামাজের পরে মুসাফা করা এবং মোয়ানাকা করার বিষয়ে অনেক ওলামায়ে কেরাম বলে থাকেন ঈদের দিন নামাজের পরে মুসাফাহা মুয়ানাকা নাকি করা যাবে না এও বলে থাকেন যে এটা আমরা সমাজে একটি আমল বলে গণ্য করে নিয়েছি কিন্তু এটা বিশেষ কোন আমল নয় সুতরাং তাহলে ঈদের দিনে কি মুসাফাহা মহানাকা করা যাবে না শরীয়ত এ বিষয়ে কি বলে তা একটু জানাবেন জানালে উপকৃত হতাম। হয়তো কথাগুলি গুছিয়ে লিখতে পারিনি এর জন্য ক্ষমা চাইছি এ বিষয়টা জানা অত্যন্ত প্রয়োজন অনেকে বলেন এগুলো যাবে না অনেকে বলেন যাবে কোনটার উপরে আমরা আমল করব আদৌ কি এটা সমাজের বুকে ভুল জিনিস প্রচলিত হয়ে আছে নাকি সঠিক তা একটু জানাবেন। এবং মুসাফাহা করার সময় অনেকে হাতে পয়সা গুঁজে দেয় কেউ কেউ পয়সা দেয় যেমন বক্তারা স্টেজে বক্তব্য করার পরে অনেক সময় মুসাফাহা করতে গিয়ে আমরা তাদের হাতে ১০০ টাকা ৫০ টাকা দেই মুসাফাহা করার সময় বা ঈদের নামাজের পরে ইমাম সাহেবের সাথে মোসাফাহা করা এটাকে আমরা জরুরী মনে করি এবং আমরা অনেকে হাতে ১০০ টাকা ৫০০ টাকা দিয়ে থাকি তাহলে কি খালি হাতে মুসাফাহা করা যাবে না টাকা পয়সা দিতে হবে এ সমস্ত বিষয় একটু স্পষ্ট করে জানাবেন জাযাকাল্লাহ। লেখার মধ্যে ভুল হয়েছে কষ্ট করে বুঝে নেবেন এবং বেয়াদবি করে থাকলে ক্ষমা করবেন
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
১৬ অক্টোবর, ২০২২
West Bengal ৭৪৩৩৯৯