যৌতুকের জন্য পুত্রবধুর সাথে দুর্ব্যবহার
প্রশ্নঃ ৭৮৬৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম। আমার বিয়ে হয়েছে ২ বছর। বিয়েটা প্রথমে পারিবারিক ভাবে ঠিক হলেও যৌতুকের জন্য হয় না,পরে আমার স্বামী কে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে চায়, সে তাদের ব্যপার টা বুঝতে পরে অন্য জায়গায় বিয়ে করতে রাজি হয়নি,পরে তার বাবা মা বলে মেয়ে রাজি থাকলে পালিয়ে বিয়ে করতে যাতে অনুষ্ঠান করার সময় যৌতুক চাইতে পারে,কিন্তু আমি ও আমার স্বামী কেওই যৌতুকের পক্ষে ছিলাম না।যৌতুক পরে দিও না, তবে আমারা নিজেরা বিয়ে করে ফেলি, আমি এসব জানতাম না আমি তাকে পছন্দ করে ফেলি তাই বিয়েতে রাজি হই। বিয়ের ৭ দিনের মাথায় থেকেই আমার শশুর বাড়ির সবাই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে থাকে। শাশুড়ী খাবার খেতে বসলে ওনার ছেলে মেয়ে কে ঠিক ঠাক দিত আমাকে দিত না,আমি কলো না তাও বলে আমি কালো, নানান রকম অপমান করে যৌতুক দেনি তাই। আমার শশুর তার বাড়ি নিয়ে অপমান করে আমি ভবিষ্যতে বাড়ি পাব তাই, আমার জামা কাপড় এর রং নিয়ে অপমান করে, বিয়েতে আমার ননদ এর শশুর বাড়ি থেকে আমাকে ১ টি সোনার চেন দেয় সবাই কে দেখিয়ে ২ দিন পরার পর চেনটি আমানত হিসেবে আমার শাশুড়ির কাছে রাখি পরে আমাকে আর ফিরিয়ে দেয় না,আমার স্বামী ফিরিয়ে দিতে বলে তারা বলে চেনটি নাকি আমার ননদ এর দেবর এর বিয়েতে দিব,আর বলে তোর বোনের সুখের কথা চিন্তা কর, ওনার মেয়ে ভালো আর মেয়ের জামাই ভালো এসব কথা শুনায় সব সময়, আমাকে পিন মেরে বলে তার ছেলেকে নাকি আবার বিয়ে দিবে,আমরা বাবা নেই এবং পরিবারের অবস্থা তাদের চাইতে অস্বচ্ছল তাই অপমান করে। আমি অসুস্থ হলে কেউ এক পলক দেখতে আসে না স্বামী ছাড়া যদিও এক ঘরে সবাই ছিলাম। ননদ ও অপমান করে নানাভাবে, sms দিয়ে অপমান করে আমাকে এবং আমার পরিবারের মানুষকে। এরকম আরো নানান জিনিস।। 😪😪 😪😪😪 আমার প্রশ্ন এসব করতে তাদের কি গুনাহ হবে না? আমরা এখন আলাদা বাসা নিয়ে থাকি। আমার ২ জন ভালো আছি এবং ভবিষ্যতে ভালো থাকতে কি করতে পারি? আমরা মনে তাদের উপর অনেক রাগ,মন থেকে শ্রদ্বা আসে না যদি ও ফোনে ভালো করে কথা বলি, তাতে কি আমার গুনাহ হবে?মাথায় সারাখন এসব গুরে মাথায় প্রেসার লাগে বুলে গিয়ে আল্লাহ কথা মনে করি আবার কস্ট লাগে এখন আমি কি করবো।ননদে সাথে কথা না বলে এরিয়ে চলবো দেখা হলে চিন্তা করছি এতে কি গুনাহ হবে?? (যদিও সে আমরা সঙ্গে কথা বলে না এমনি তেও আমি বলা ছাড়া ভাব নিয়ে চলে)। আর ১ বছর শশুর বাড়ি যাই না এখন ফোনে ভালো ভালো কথা শুধু বাড়ি যাইতে বলে যাওয়া টা কি ঠিক হবে।?
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
বৌমা অথবা স্ত্রীর কাছে যৌতুক চাওয়া পৃথিবীর মধ্যে ঘৃণ্যতম একটি অধ্যায়। এ প্রথা হিন্দুদের কাছ থেকে ধার করা। মুসলমান কি করে তার স্ত্রী অথবা বৌমার কাছে যৌতুকের জন্য পীড়াপীড়ি করতে পারে? আল্লাহ তাআলা আমাদের সমাজকে এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ থেকে রেহাই দান করুক।
কতইনা সোনালী পরিবেশ ও সুন্দর সংসার হতো, যদি আপনার শ্বশুর-শাশুড়ি আপনাকে মেয়ের মত গ্রহণ করত।
আপনার স্বামীকে নিয়ে ভিন্ন সংসার করেছেন, খুবই ভালো কাজ করেছেন। সুন্নতি জীবনযাপন করুন। স্বামীকে ভালোবাসুন। স্বামীর সেবা-শুশ্রূষা এবং হালাল ও জায়েযের গণ্ডির মধ্যে থেকে তার মন তুষ্টির দিকে সর্বদা খেয়াল রাখুন। বছরে ন্যূনতম একবার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে দেখা করতে যান। বেশি লম্বা সময় দেয়ার প্রয়োজন নেই। এতে করে কষ্ট পেতে পারেন। তাদের সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়ান। মনে রাখবেন! যারা আত্মীয়তা ছিন্ন করে তাদের সঙ্গে আত্মীয়তা বজায় রাখাই হলো ঈমানের দাবী। আল্লাহর কাছে নেক সন্তানের দোয়া করুন। সন্তান হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রেম-মহব্বত ও ভালোবাসা আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। আল্লাহ করে দিক।
কারো আচার-আচরণে তার প্রতি অশ্রদ্ধা ও অভক্তি থাকা সত্ত্বেও উপরে উপরে তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা গুনাহ নয়। শ্রদ্ধা ভক্তি মানুষের আচার আচরণের কারণে তৈরি হয়। এই শূন্যতার জন্য তারা দায়ী। আপনার করণীয় হলো তাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করা।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন