মুসলিম বিবাহ

আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

নারী কণ্ঠের পর্দাার বিধান

প্রশ্নঃ ৭৩৫৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি রান্না বিষয়ক একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চাই। আমি আমার চেহারা কখনো দেখাবো না। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি আমার কন্ঠ দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারবো কিনা ? বা আমার কন্ঠ পর পুরুষ শুনলে কি আমার গুনাহ হবে ?,

১৬ জুলাই, ২০২৫

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মহিলাদের কণ্ঠেরও পর্দা আছে। বিশেষ প্রয়োজনে পর পুরুষের সাথে কথা বলার পদ্ধতি এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে শিক্ষা দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে যদি কথা বল, তাহলে আকর্ষণহীন ভাষায় কাটাকাটা কথা বলবে। নরম ও ললিত ভাষায় কথা বলো না। এতে যেসব পুরুষের মনে রোগ আছে (পরনারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ার মত ব্যক্তিদের রোগী বলা হয়েছে) তারা অকারণেই ফেতনায় পতিত হতে পারে। যার দায় আকর্ষণকারীনী নারীকেও নিতে হবে। সুতরাং নারীর কণ্ঠও পর্দার আওতায় চলে এসেছে। নারীরা নারী মহলে আলোচনা বা ওয়াজ করতে পারে। কিন্তু পুরুষ মহলে পর্দার আড়াল থেকেও তারা কেরাত, হামদ-না’ত বা ওয়াজ নিঃশর্তভাবে করতে পারে না।
তাছাড়া নারীর প্রতি শরীয়তের বিধান ও চাহিদা হল, তার কন্ঠস্বর যেন প্রয়োজন ছাড়া পরপুরুষ শুনতে না পায়। এ বিধান কেবল সাধারণ ক্ষেত্রেই নয়; বরং ইবাদত বন্দেগী ও আমলের ক্ষেত্রেও তা পূর্ণমাত্রায় লক্ষ রাখা হয়েছে। যেমন,

১. মুআযযিনের এত অধিক মর্যাদা থাকা সত্বেও নারী কন্ঠস্বর যেন বিনা প্রয়োজনে পরপুরুষ শুনতে না পায় এজন্য তাদের উপর আযানের বিধান দেয়া হয় নি।

২. উচ্চ আওয়াজবিশিষ্ট ফরয নামাযের কেরাত তাদের জন্য নিম্ন আওয়াজে পড়ার বিধান রয়েছে।

৩. নামাযে ইমামের কোনো ভুল ত্রুটি হলে তা অবগত করানোর জন্য পুরুষ মুক্তাদিদেরকে সুবহানাল্লাহ বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে একই বিষয়ে নারীদেরকে তাসফীক অর্থাৎ এক হাতের পিঠ অন্য হাতের তালুতে মেরে শব্দ করতে বলা হয়েছে। যেন পুরুষরা আওয়াজকারী সম্পর্কে বিন্দুমাত্র বুঝতে না পারে।

৪. হজ্বের তালবিয়া পুরুষগণ উচ্চ আওয়াজে পড়বে। কিন্তু মহিলারা পড়বে নিম্ন আওয়াজে। এধরনের প্রায় সকল ক্ষেত্রেই পার্থক্য বিদ্যমান।

সুতরাং পরপুরুষের সামনে সুন্দর কণ্ঠে তেলাওয়াত করলে যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে সে অবশ্যই কুকল্পনা করবে এবং এটা যে ফেতনার কারণ হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রাসূল ( সা.) ইরশাদ করেন, ‘’চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]’’। –সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২

সুতরাং, রান্না বিষয়ক একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা
বিশেষ প্রয়োজনের আওতাধীন হবে না এবং এক্ষেত্রে যেসব পুরুষের মনে রোগ আছে তারা অকারণেই ফেতনায় পতিত হতে পারে। যে গুনাহের দায় আকর্ষণকারীনী নারীকেও নিতে হবে ।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৫২০২৬

অমুসলিম নারীর সাথে মুসলিম নারীর পর্দার বিধান


১৬ জানুয়ারী, ২০২৪

ময়মনসিংহ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

২৫৯৯৬

কদমবুচি করার বিধান


১০ ডিসেম্বর, ২০২২

ফুলগাজী সরকারি কলেজ রোড

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

২৬৯৬৯

নারীদের জন্য মাহরাম


২৯ ডিসেম্বর, ২০২২

West Bengal ৭৪৩৩৭৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন