আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৬৩৯০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর আমার একটা মাসালা জানার ছিল।খুব পেরেশানির ভিতর ছিলাম আমরা পিতা মারা যাওয়ার পর থেকে আবার দুর্ঘটনায় আমার বড় ভাই মারা যায়। হুজুর আমরা ২ ভাই ২ বোন আমার মা বেঁচে আছেন, আমার বড় ভাই বিবাহ করেছিলেন, তার কোন ছেলে,মেয়ে নাই । আমার দাদা দাদি বেচে নাই আমার বাপ চাচারা ৪ জন, দুই ফুফু ও এক চাচা তাদের সম্পদ তাদের সমান ভাবে দেওয়া হয়েছিল। এখন সমস্যা দেখা দিয়েছে আমাদের মধ্য। আমরা এখন শরিয়াত হিসাবে কে কতো টুকু পাব এবং বড়ো ভায়ের বউ কতো টুকু পাবে,আমার নানা বড়ির থেকে সম্পদ সঠিক ভাবে পেয়েছে আমার মা আমার নানা নানি দুনোজন বেচে আছে। হুজুর মেহেরবানি করে সমাধান করে দিন আমাদের জন্য খুব উপকার হবে ইনশাআল্লাহ।,

১ জুন, ২০২১

খুলনা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم




আপনার বর্ণনা থেকে যেভাবে বুঝলাম, বিষয়টিকে আমি প্রথমে লিখছি।
(প্রথমে)
আপনার বাবা মারা গিয়েছেন। তিনি মারা যাওয়ার সময় তার পিতা-মাতা (আপনার দাদা-দাদী) জীবিত ছিলেন না।
জীবিত ছিল,
তার স্ত্রী (আপনার মা),
দুই ছেলে ও
দুই মেয়ে।
এছাড়া এক ভাই (আপনার চাচা),
দু বোন (আপনার ফুফু) বেঁচে ছিল।

আপনার পিতার মৃত্যুর পর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি থেকে অষ্টমাংশ তার স্ত্রী (আপনার মা পাবেন। অবশিষ্ট সাত ভাগকে ৬ ভাগ করা হবে। মেয়েরা ১ ভাগ ১ভাগ পাবেন। ছেলেরা ২ভাগ ২ভাগ পাবেন।
ভাই-বোন অর্থাৎ আপনার চাচা ও ফুফুরা কিছুই পাবেন না।

ফরায়েযের ভাষায় বণ্টননামা এভাবে হবে:
মোট সম্পত্তি ৪৮ভাগ হবে।
স্ত্রী (আপনার মা) ৬ভাগ পাবেন।
মেয়েরা ৭ভাগ ৭ভাগ,
ছেলেরা ১৪ ভাগ ১৪ ভাগ পাবে।


(এরপর)
আপনার বড় ভাই মারা গিয়েছেন। তিনি মারা যাওয়ার সময় স্ত্রী,
মা,
এক ভাই,
দু বোন রেখে মারা যান।

তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এভাবে বন্টন হবে:

স্ত্রী চার ভাগের এক ভাগ,
মা ছয় ভাগের এক ভাগ,
অবশিষ্ট সম্পত্তি চার ভাগ করে ভাই (আপনি) দুই ভাগ,
বোনেরা এক ভাগ এক ভাগ করে পাবেন।

ইসলামী ফরায়েযের ভাষায় বণ্টননামা এভাবে হবে:
মোট সম্পত্তি ৪৮ ভাগ হবে।
স্ত্রী ১২ ভাগ পাবে,
মা ৮ ভাগ পাবেন।
বোনেরা ৭ ভাগ ৭ ভাগ পাবেন।
ভাই (আপনি) ১৪ ভাগ পাবেন।

یُوۡصِیۡکُمُ اللّٰہُ فِیۡۤ اَوۡلَادِکُمۡ ٭ لِلذَّکَرِ مِثۡلُ حَظِّ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ۚ فَاِنۡ کُنَّ نِسَآءً فَوۡقَ اثۡنَتَیۡنِ فَلَہُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَکَ ۚ وَاِنۡ کَانَتۡ وَاحِدَۃً فَلَہَا النِّصۡفُ ؕ وَلِاَبَوَیۡہِ لِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَکَ اِنۡ کَانَ لَہٗ وَلَدٌ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہٗ وَلَدٌ وَّوَرِثَہٗۤ اَبَوٰہُ فَلِاُمِّہِ الثُّلُثُ ۚ فَاِنۡ کَانَ لَہٗۤ اِخۡوَۃٌ فَلِاُمِّہِ السُّدُسُ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ اٰبَآؤُکُمۡ وَاَبۡنَآؤُکُمۡ لَا تَدۡرُوۡنَ اَیُّہُمۡ اَقۡرَبُ لَکُمۡ نَفۡعًا ؕ فَرِیۡضَۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیۡمًا حَکِیۡمًا

আল্লাহ তোমাদের সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, পুরুষের অংশ দুই নারীর সমান। ১৩ যদি (কেবল) দুই বা ততোধিক নারীই থাকে, তবে মৃত ব্যক্তি যা-কিছু রেখে গেছে, তারা তার দুই-তৃতীয়াংশ পাবে। যদি কেবল একজন নারী থাকে, তবে সে (পরিত্যক্ত সম্পত্তির) অর্ধেক পাবে। মৃত ব্যক্তির পিতা-মাতার মধ্য হতে প্রত্যেকের প্রাপ্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির এক-ষষ্ঠাংশ, যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকে। আর যদি তার কোন সন্তান না থাকে এবং তার পিতা-মাতাই তার ওয়ারিশ হয়, তবে তার মায়ের প্রাপ্য এক-তৃতীয়াংশ। অবশ্য তার যদি কয়েক ভাই থাকে, তবে তার মায়ের জন্য এক-ষষ্ঠাংশ, (আর এ বণ্টন করা হবে) মৃত ব্যক্তি যে ওসিয়ত করে গেছে তা কার্যকর করার কিংবা (তার যদি কোন) দেনা (থাকে, তা) পরিশোধ করার পর। ১৪ তোমরা আসলে জান না, তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে উপকার সাধনের দিক থেকে তোমাদের নিকটতর। (এসব) আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত অংশ। ১৫ নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
—আন নিসা - ১১

وَلَکُمۡ نِصۡفُ مَا تَرَکَ اَزۡوَاجُکُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّہُنَّ وَلَدٌ ۚ  فَاِنۡ کَانَ لَہُنَّ وَلَدٌ فَلَکُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصِیۡنَ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ  وَلَہُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ اِنۡ لَّمۡ یَکُنۡ لَّکُمۡ وَلَدٌ ۚ  فَاِنۡ کَانَ لَکُمۡ وَلَدٌ فَلَہُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَکۡتُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ تُوۡصُوۡنَ بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ؕ  وَاِنۡ کَانَ رَجُلٌ یُّوۡرَثُ کَلٰلَۃً اَوِ امۡرَاَۃٌ وَّلَہٗۤ اَخٌ اَوۡ اُخۡتٌ فَلِکُلِّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا السُّدُسُ ۚ  فَاِنۡ کَانُوۡۤا اَکۡثَرَ مِنۡ ذٰلِکَ فَہُمۡ شُرَکَآءُ فِی الثُّلُثِ مِنۡۢ بَعۡدِ وَصِیَّۃٍ یُّوۡصٰی بِہَاۤ اَوۡ دَیۡنٍ ۙ  غَیۡرَ مُضَآرٍّ ۚ  وَصِیَّۃً مِّنَ اللّٰہِ ؕ  وَاللّٰہُ عَلِیۡمٌ حَلِیۡمٌ ؕ

তোমাদের স্ত্রীগণ যা-কিছু রেখে যায়, তাদের কোনও সন্তান (জীবিত) না যাওয়া সম্পদের এক-চতুর্থাংশ তার অর্ধাংশ তোমাদের যদি থাকে। যদি তাদের কোনও সন্তান থাকে, তবে তারা (যে) ওসিয়ত (করে যায় তা) কার্যকর করার এবং যে দেনা রেখে যায় তা পরিশোধ করার পর, তোমরা তার রেখে পাবে। আর তোমরা যা কিছু ছেড়ে যাও, তার এক-চতুর্থাংশ তারা (স্ত্রীগণ) পাবে- যদি তোমাদের (জীবিত) কোন সন্তান না থাকে। যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তোমরা যে ওসিয়ত করে যাও তা কার্যকর করার এবং তোমাদের) দেনা পরিশোধ করার পর তারা তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পত্তির এক-অষ্টমাংশ পাবে। যার মীরাছ বণ্টন করা হচ্ছে, সেই পুরুষ বা নারী যদি এমন হয় যে, না তার পিতা-মাতা জীবিত আছে, সন্তান-সন্ততি আর তার এক ভাই বা এক বোন জীবিত থাকে, তবে তাদের প্রত্যেকের এক ষষ্ঠাংশ। তারা যদি আরও বেশি সংখ্যক থাকে, তবে তারা সকলে এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে অংশীদার হবে, (কিন্তু তা) যে ওসিয়ত করা হয়েছে তা কার্যকর করার বা দেনা পরিশোধ করার পর যদি (ওসিয়ত বা দেনার স্বীকারোক্তি দ্বারা) সে কারও ক্ষতি না করে থাকে। ১৬ (এসব) আল্লাহর হুকুম। আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞাত, সহনশীল।
—আন নিসা - ১২

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১০১৬৮

ব্যাংক লোন নিয়ে যদি কেউ আমার পাওনা পারিশোধ করে তাহলে তার বিধান কি?


৪ জুন, ২০২৪

বাঞ্ছারামপুর

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ

২৭৭৪৪

সন্তানকে ত্যাজ্য করার হুকুম


১২ জানুয়ারী, ২০২৩

ঢাকা ১২১২

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy