আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৯৭৬০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, এক ব্যাক্তির ২ টি কন্যা সন্তান,কন্যাদের বিয়ে দেয়া হয়েছে, কোন পুত্র সন্তান নাই।ঐ ব্যক্তির বড় ভাই আছে যার ৪টি পুত্র সন্তান, ঐ ব্যক্তির সব মিলিয়ে ১১ বিঘা জমি আছে,জীবদ্দশায় তিনি ২কন্যাকে তার সম্পত্তি বন্টন করে দিতে চান,শরীয়ত মোতাবেক কিভাবে বন্টন করবে?দয়া করে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।জাজাকাল্লাহ খাইরান।,

২৪ অক্টোবর, ২০২১

Faridpur-Barisal Highway

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم






নিজের জীবদ্দশায় সমুদয় সম্পত্তি দান করে দেয়া, আত্মীয়-অনাত্মীয় কাউকে লিখে দেয়া উচিত নয়। এমনকি নিজের ওয়ারিশদেরকেও সমস্ত সম্পত্তি নিজের জীবদ্দশায় দান করে বুঝিয়ে দেয়া উচিত নয়।
ধরে নিন এক লোকের দুইটি কন্যা আছে। সে তার কন্যাদেরকে সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দিল। সেক্ষেত্রে তার স্ত্রীকে বঞ্চিত করলো। আবার যদি সে এই সম্পদ কন্যাদের দিয়ে দেওয়ার পর লম্বা সময় হায়াত পেয়ে থাকে। ইতোমধ্যে মেয়েদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়ে বাবার থেকে বিমুখ হয়ে যায়, আবার লোকটিও অসুস্থ হয়ে যায়, তখন কিন্তু লোকটি নিঃস্ব হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে বেড়াতে হবে।

তাই আল্লাহ তাআলার নিজাম তথা চিরন্তন বিধান মেনে নেয়া উচিত। লোকটি স্বাভাবিক নিয়মেই জীবন যাপন করবে। মেয়েদেরকে যথাসাধ্য আর্থিক সহযোগিতা করবে। তার মৃত্যুর পর রেখে যাওয়া সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ মেয়েরা পেয়ে যাবে। অষ্টমাংশ স্ত্রী পাবে। অবশিষ্ট সম্পত্তি তার ভাই থাকলে ভাই পাবে। ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে ভাতিজারা পেয়ে যাবে।

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ عَادَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ مَرَضٍ أَشْفَيْتُ مِنْهُ عَلَى الْمَوْتِ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ بَلَغَ بِيْ مِنْ الْوَجَعِ مَا تَرَى وَأَنَا ذُوْ مَالٍ وَلَا يَرِثُنِيْ إِلَّا ابْنَةٌ لِيْ وَاحِدَةٌ أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِيْ قَالَ لَا قَالَ فَأَتَصَدَّقُ بِشَطْرِهِ قَالَ الثُّلُثُ يَا سَعْدُ وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ ذُرِّيَّتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ وَلَسْتَ بِنَافِقٍ نَفَقَةً تَبْتَغِيْ بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا آجَرَكَ اللهُ بِهَا حَتَّى اللُّقْمَةَ تَجْعَلُهَا فِيْ فِيْ امْرَأَتِكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِيْ قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلًا تَبْتَغِيْ بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا ازْدَدْتَ بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً وَلَعَلَّكَ تُخَلَّفُ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُوْنَ اللَّهُمَّ أَمْضِ لِأَصْحَابِيْ هِجْرَتَهُمْ وَلَا تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ لَكِنْ الْبَائِسُ سَعْدُ بْنُ خَوْلَةَ يَرْثِيْ لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُوُفِّيَ بِمَكَّةَ وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ وَمُوْسَى عَنْ إِبْرَاهِيْمَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ

সা’দ ইব্‌নু মালিক রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
বিদায় হাজ্জের বছর আমি ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কাছাকাঠি হই। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার রোগ কি পর্যায় পৌছেছে তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। আমি একজন সম্পদশালী। আমার ওয়ারিশ হচ্ছে একটি মাত্র কন্যা। আমি আমার সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ আল্লাহর রাস্তায় সাদকা করে দিব? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তবে কি অর্ধেক? তিনি বললেন, হে সা‘দ, এক তৃতীয়াংশ দান কর। এবং এক তৃতীয়াংশই অনেক বেশি। তুমি তোমার ছেলে-মেয়েদেরকে সম্পদশালী রেখে যাও তা-ই উত্তম, এর চেয়ে তুমি তাদেরকে নিঃস্ব রেখে গেলে যে তারা অন্যের নিকট ভিক্ষে করে।

আহমাদ ইবনু ইউসুফ (রহ.).....ইব্রাহীম (রহ.) হতে এ কথাগুলোও বর্ণনা করেছেন। তুমি তোমার ওয়ারিশদের সম্পদশালী রেখে যাবে আর তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা কিছু ব্যয় করবে, আল্লাহ্ তার প্রতিদান তোমাকে দেবেন। তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমাটি তুলে দিবে এর প্রতিদানও আল্লাহ্ তোমাকে দেবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি আমার সাথী সঙ্গীদের হতে পশ্চাতে থাকব? তিনি বললেন, তুমি কক্ষণো পিছে পড়ে থাকবে না আর এ অবস্থায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে তুমি যে কোন নেক ‘আমাল করবে তাহলে তোমার সম্মান ও মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হবে। সম্ভবতঃ তুমি বয়স বেশি পাবে এবং এর ফলে তোমার দ্বারা অনেক মানুষ উপকৃত এবং অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ্! আমার সাহাবীদের হিজরাতকে অটুট রাখুন। তাদেরকে পশ্চাৎমুখী করে ফিরিয়ে নিবেন না। কিন্তু অভাবগ্রস্ত সা‘দ ইবনু খাওলাহর মক্কা্য় মৃত্যুর কারণে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহ.) ও মূসা (রহ.) ইব্রাহীম সূত্রে বর্ণনা করেছেন, أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ তোমার ওয়ারিশদের রেখে যাওয়া....।
—সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৯৩৬

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৬৭৫৩

চুর পড়া রোধে করণীয়


২৯ ডিসেম্বর, ২০২২

হাটহাজারী

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৬৩৫৮২

ঋণদাতার উপর কুরবানী ওয়াজিব?


৭ জুন, ২০২৪

৯৪৩P+৩M৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি জাওয়াদ তাহের

১০৯০২

কুরআনের ইংরেজী অনুবাদে He ব্যবহার প্রসঙ্গ


২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঢাকা ১২১২

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

২৫৪২৮

সহীহ হাদীস পেলেই মাযহাব বর্জনের কথিত দাবীর সত্যতা ইমাম আবু হানিফা থেকে প্রমাণিত আছে কি ?


৫ ডিসেম্বর, ২০২২

Dhaka, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy