আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

খাবার পর মিষ্টি খাওয়া

প্রশ্নঃ ৪৮২৩০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়া কি সুন্নত

৯ ডিসেম্বর, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


সুন্নত বলতে হলে, তা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিয়মিত আমল বা অভ্যাস হওয়া কিংবা করতে উৎসাহ দেয়া প্রমাণিত হওয়া জরুরী।

যেখানে দিনের পর দিন পেট ভরে খানা খাওয়ার সুযোগই হতো না। কয়েক মাস যাবত খানা পাকানোর জন্য চুলায় আগুন ধরতো না, সেখানে খানা ভক্ষণ করার পর মিষ্টি ও ফল খাওয়ার মতো বিলাসিতা নবীজীর সুন্নাত বলা বা নিয়মিত আমল বলার কোন সুযোগই নেই।

তবে হ্যাঁ, একথা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিষ্টি পছন্দ করতেন।

এক হাদীসে খানা খাওয়ার পর খেজুর খাওয়ার কথাও প্রমাণিত।

সম্ভবত উক্ত হাদীসকে কেন্দ্র করেই একথা বলা হয় যে, খানা খাওয়ার পর মিষ্টি ও ফল খাওয়া সুন্নত। যেহেতু খেজুর মিষ্টি জাতীয় বস্তু সেই সাথে তা ফলও বটে।

কিন্তু এর উপর ভিত্তি করে খানার পর মিষ্টি খাওয়া ও ফল খাওয়া সুন্নত বলাটা উচিত হবে না।

তবে কেউ খেতে চাইলে নিষেধ করাও যাবে না বা অনুৎসাহিত করা যাবে না। বাকি সুন্নাত বলা পরিহার করা উচিত।

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا، قَالَتْ: «كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ الحَلْوَاءَ وَالعَسَلَ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হালওয়া এবং মধু পছন্দ করতেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৪৩১]

عِكْرَاشِ بْنِ ذُؤَيْبٍ قَالَ: بَعَثَنِي بَنُو مُرَّةَ بْنِ عُبَيْدٍ بِصَدَقَاتِ أَمْوَالِهِمْ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَدِمْتُ عَلَيْهِ الْمَدِينَةَ فَوَجَدْتُهُ جَالِسًا بَيْنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ، قَالَ: ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِي فَانْطَلَقَ بِي إِلَى بَيْتِ أُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَ: هَلْ مِنْ طَعَامٍ؟ فَأُتِينَا بِجَفْنَةٍ كَثِيرَةِ الثَّرِيدِ وَالوَذْرِ، وَأَقْبَلْنَا نَأْكُلُ مِنْهَا، فَخَبَطْتُ بِيَدِي مِنْ نَوَاحِيهَا وَأَكَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ، فَقَبَضَ بِيَدِهِ اليُسْرَى عَلَى يَدِي اليُمْنَى ثُمَّ قَالَ: يَا عِكْرَاشُ، كُلْ مِنْ مَوْضِعٍ وَاحِدٍ فَإِنَّهُ طَعَامٌ وَاحِدٌ، ثُمَّ أُتِينَا بِطَبَقٍ فِيهِ أَلْوَانُ التَّمْرِ، أَوْ مِنْ أَلْوَانِ الرُّطَبِ، عُبَيْدُ اللهِ شَكَّ، قَالَ: فَجَعَلْتُ آكُلُ مِنْ بَيْنِ يَدَيَّ، وَجَالَتْ يَدُ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الطَّبَقِ وَقَالَ: يَا عِكْرَاشُ، كُلْ مِنْ حَيْثُ شِئْتَ فَإِنَّهُ غَيْرُ لَوْنٍ وَاحِدٍ، ثُمَّ أُتِينَا بِمَاءٍ فَغَسَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ، وَمَسَحَ بِبَلَلِ كَفَّيْهِ وَجْهَهُ وَذِرَاعَيْهِ وَرَأْسَهُ وَقَالَ: يَا عِكْرَاشُ، هَذَا الوُضُوءُ مِمَّا غَيَّرَتِ النَّارُ

ইকরাশ ইবনু যুয়াইব (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, মুররা ইবনু উবাইদ গোত্রের লোকেরা তাদের ধন-সম্পদের যাকাতসহ আমাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে পাঠায়। আমি মদীনায় গিয়ে তার নিকটে হাযির হলাম। তখন আমি তাকে মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে বসা অবস্থায় পেলাম। তিনি আমার হাত ধরে উম্মু সালামা (রাঃ)-এর ঘরে নিয়ে যান। তিনি প্রশ্ন করেনঃ কোন খাবার আছে কি?

আমাদের সামনে একটি বড় পিয়ালা আনা হল। এর মধ্যে গোশতের টুকরা ও সারদ (ঝোলে ভিজানো রুটি) ভর্তি ছিল। আমরা তা থেকে খেতে লাগলাম। আমি পাত্রের এদিক-সেদিক থেকে নিয়ে খাচ্ছিলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনে থেকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনি তার বাঁ হাত দিয়ে আমার ডান হাত ধরে বললেনঃ হে ইকরাশ! এক জায়গা হতে খাও। কেননা সম্পূর্ণটাই একই খাদ্য।

তারপর আমাদের সামনে আরেকটি পিয়ালা আনা হল। এর মধ্যে বিভিন্ন রকমের কাঁচা-পাকা খেজুর ছিল। আমি আমার সামনে থেকেই খেতে থাকলাম। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাত্রের এদিক-সেদিক থেকে নিয়ে খাচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ হে ইকরাশ! তুমি পাত্রের যে কোন জায়গা হতে খেতে পার। কেননা সব খেজুর এক রকম নয়। তারপর আমাদের জন্য পানি দেয়া হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উভয় হাত ধুলেন এবং ভিজা হাত দিয়ে নিজের মুখমণ্ডল, দুই হাত ও মাথা মুছলেন। তারপর তিনি বললেনঃ হে ইকরাশ! আগুন যে জিনিস পরিবর্তন করে দিয়েছে (তা খাওয়ার পর) এটাই হল ওযু। [জামে তিরমিজী, হাদীস নং-১৮৪৮]। সূত্র: আহলে হক মিডিয়া

والله اعلم بالصواب

মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা মুনাওয়ারা ৷

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন