আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ফরজ গোসল করার সঠিক নিয়ম কি ?

প্রশ্নঃ ৩৪০৪৭. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফরজ গোসল করার সঠিক নিয়ম জানতে চাই।

৩১ মে, ২০২৩
চট্টগ্রাম

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ফরয গোসলের নিয়ম:

১. সর্বপ্রথম দুহাত কব্জি পর্যন্ত ধৌত করা।
২. শরীর ও কাপড়ের যেখানে নাপাক লেগেছে সেই নাপাকি দূর করা।
৩. কাঁচা (মাটির) গোসলখানা হলে ফ্লোরের মাটিতে অথবা কাঁচা দেয়ালে হাত ঘষে অথবা সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেয়া। পাকা গোসলখানা হলে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেয়া।
৪. নামাযের জন্য যেভাবে ওযু করা হয় সেভাবে অজু করা।
অবশ্য অযুর মধ্যে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া সুন্নত হলেও ফরয গোসলের পূর্বে যে ওযুর করা হয়, সেই ওযুতে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া ফরয।
অতএব কুলি ও নাকে পানি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটু বেশি গুরুত্ব দেয়া। অর্থাৎ গরগরার সহিত কুলি করা। নাকে পানি দেয়া ও নাক ঝাড়া।
৫. গোসলখানার ফ্লোরে ব্যবহৃত পানি জমা হলে ওযুর শেষে পা ধোয়ার প্রয়োজন নেই। গোসল শেষে এই স্থান ত্যাগ করে পা ধুয়ে নিবে।
আর যদি ফ্লোরে পানি না জমে, তাহলে ওযুর সঙ্গে পা ধুয়ে নিতে পারবে।
৬. ওযুর শেষে তিন কোষ পানি মাথায়, তিন কোষ পানি ডান কাঁধে, তিন কোষ পানি বাম কাঁধে দিয়ে, পুরো শরীর ধৌত করবে।

গোসল সংক্রান্ত অনেকগুলো বর্ণনা রয়েছে। নিম্নে একটি হাদীস উল্লেখ করা হল।

وَحَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، حَدَّثَنِي عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ حَدَّثَتْنِي خَالَتِي، مَيْمُونَةُ قَالَتْ أَدْنَيْتُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم غُسْلَهُ مِنَ الْجَنَابَةِ فَغَسَلَ كَفَّيْهِ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا ثُمَّ أَدْخَلَ يَدَهُ فِي الإِنَاءِ ثُمَّ أَفْرَغَ بِهِ عَلَى فَرْجِهِ وَغَسَلَهُ بِشِمَالِهِ ثُمَّ ضَرَبَ بِشِمَالِهِ الأَرْضَ فَدَلَكَهَا دَلْكًا شَدِيدًا ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءَهُ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ أَفْرَغَ عَلَى رَأْسِهِ ثَلاَثَ حَفَنَاتٍ مِلْءَ كَفِّهِ ثُمَّ غَسَلَ سَائِرَ جَسَدِهِ ثُمَّ تَنَحَّى عَنْ مَقَامِهِ ذَلِكَ فَغَسَلَ رِجْلَيْهِ ثُمَّ أَتَيْتُهُ بِالْمِنْدِيلِ فَرَدَّهُ ‏.

‘আবূদল্লাহ্ ইবনু আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেছেন, আমার খালা মাইমুনাহ্ আমাকে বলেছেন, আমি রসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অপবিত্রতার গোসলের জন্যে পানির পাত্র এগিয়ে দিতাম। তিনি প্রথমে দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত দু‘বার অথবা তিনবার ধুয়ে নিলেন। তারপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে বাম হাতে লজ্জাস্থান ধুয়ে পরিষ্কার করলেন। পরে বাম হাতখানা মাটিতে খুব করে রগড়ালেন, এরপর ধুয়ে নিলেন। অতঃপর উক্তস্থান থেকে সরে গিয়ে পা দু’খানা ধুলেন। অতঃপর আমি তাঁর শরীর মোছার জন্যে কাপড় বা রুমাল নিয়ে আসলে তিনি তা ব্যবহার না করে বরং ফেরত দিলেন।
—সহিহ মুসলিম, হাদীস নং ৬০৯

টীকা : অন্যান্য সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অজু ও গোসলের পর পানি মোছার জন্য গামছা ব্যবহার করেছেন বলে প্রমাণিত রয়েছে।
এই হাদীসে যেই দিনের কথা উল্লেখ রয়েছে তখন হয়ত গরমের কারণে নবীজির চেয়েছিলেন পানি গায়ে শুকিয়ে যাক। তাহলে কিছুটা ঠান্ডা অনুভব হবে।
والله أعلم

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন