আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মসজিদ মাদরাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য চাঁদা তোলা

প্রশ্নঃ ৩০৭৭৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ইদানীং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেমন মসজিদ, মাদ্রাসা,মক্তব ইত্যাদির উন্নয়নকল্পে জালসা,মাহফিলের আয়োজন করে হাদিয়া সংগ্রহ করা হচ্ছে।যেখানে ধর্মীয় আলোচনার চেয়ে হাদিয়া সংগ্রহই মূখ্য বিষয়। এবিষয়ে হুজুর পাক (সা:) সময়কার পদ্ধতি বা সহীহ রেফারেন্স জানতে চাই?

৩০ মার্চ, ২০২৩
Nishindara

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো (মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা) ইসলামী রাষ্ট্রের বায়তুল মাল থেকে নির্মিত এবং পরিচালিত হবে।
ইসলামী রাষ্ট্র না থাকায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অর্থায়নে এইসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং পরিচালিত হবে।
কোন এলাকায় মানুষের মাঝে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিষয়ে উদাসীনতা থাকলে জনসাধারণকে দান অনুদানের উপর উদ্বুদ্ধ করতে মাহফিলের আয়োজন করা বা দাওয়াত করে তাদের কাছ থেকে চাঁদা কালেকশন করা যেতে পারে। তবে সেক্ষেত্রে ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য বজায় রাখতে হবে, মানুষের বিরক্তির কারণ না হয় সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জামানায় সবচেয়ে সংকটময় যুদ্ধ ছিল তাবুকের যুদ্ধ। সেই গজওয়ার পূর্বে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গণ চাঁদা তুলেছেন।

وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " مَنْ يَحْفِرْ بِئْرَ رُومَةَ فَلَهُ الْجَنَّةُ ". فَحَفَرَهَا عُثْمَانُ، وَقَالَ : " مَنْ جَهَّزَ جَيْشَ الْعُسْرَةِ فَلَهُ الْجَنَّةُ ". فَجَهَّزَهُ عُثْمَانُ.
—সহীহ বুখারী, সাহাবায়ে কেরামের ফজিলত অধ্যায়ে হযরত ওসমান বিন আফফানের উপ অধ্যায়
كِتَابٌ : فَضَائِلُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ | بَابٌ : مَنَاقِبُ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ.

আরেকবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ নসিহত করার পর নারীদেরকে সদাকাহ করতে যেভাবে উৎসাহ দিয়েছেন হাদীস শরীফে তার বিস্তর ঘটনা এসেছে।

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحِ بْنِ الْمُهَاجِرِ الْمِصْرِيُّ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " يَا مَعْشَرَ النِّسَاءِ تَصَدَّقْنَ وَأَكْثِرْنَ الاِسْتِغْفَارَ فَإِنِّي رَأَيْتُكُنَّ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ " . فَقَالَتِ امْرَأَةٌ مِنْهُنَّ جَزْلَةٌ وَمَا لَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَكْثَرَ أَهْلِ النَّارِ . قَالَ " تُكْثِرْنَ اللَّعْنَ وَتَكْفُرْنَ الْعَشِيرَ وَمَا رَأَيْتُ مِنْ نَاقِصَاتِ عَقْلٍ وَدِينٍ أَغْلَبَ لِذِي لُبٍّ مِنْكُنَّ " . قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا نُقْصَانُ الْعَقْلِ وَالدِّينِ قَالَ " أَمَّا نُقْصَانُ الْعَقْلِ فَشَهَادَةُ امْرَأَتَيْنِ تَعْدِلُ شَهَادَةَ رَجُلٍ فَهَذَا نُقْصَانُ الْعَقْلِ وَتَمْكُثُ اللَّيَالِيَ مَا تُصَلِّي وَتُفْطِرُ فِي رَمَضَانَ فَهَذَا نُقْصَانُ الدِّينِ " .
وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ بَكْرِ بْنِ مُضَرَ، عَنِ ابْنِ الْهَادِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ .

১৪৫। মুহাম্মাদ ইবনে রুম্‌হ ইবনে মুহাজির আল মিসরি (রাহঃ) ... আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেনঃ হে রমণীগণ! তোমরা দান-খয়রাত করতে থাক এবং বেশি করে ইস্তিগফার কর। কেননা আমি দেখেছি যে, জাহান্নামের অধিবাসীদের অধিকাংশই নারী। জনৈকা বুদ্ধিমতী মহিলা প্রশ্ন করল, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামে আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণ কি? বললেন, তোমরা বেশি বেশি অভিসম্পাত করে থাকো এবং স্বামীর প্রতি (অকৃতজ্ঞতা) প্রকাশ করে থাকো। আর দ্বীন ও জ্ঞান-বুদ্ধিতে ক্রটিপূর্ণ কোন সম্প্রদায়, জ্ঞানীদের উপর তোমাদের চেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী আর কাউকে আমি দেখিনি।

প্রশ্নকারিনী জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর রাসুল! জ্ঞান-বুদ্ধি ও দ্বীনে আমাদের কমতি কিসে? তিনি বললেনঃ তোমাদের জ্ঞান-বুদ্ধির ক্রটি হলো দু-জন স্ত্রীলোকের সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান; এটাই তোমাদের বুদ্ধির ক্রটির প্রমাণ। স্ত্রীলোক (প্রতিমাসে) কয়েকদিন নামায থেকে বিরত থাকে আর রমযান মাসে রোযা ভঙ্গ করে; (ঋতুবতী হওয়ার কারণে) এটাই দ্বীনের কমতি।

আবু তাহির ... ইবনে হাদ-এর সূত্রে এ সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

—সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৪৫ (আন্তর্জাতিক নং ৭৯)

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন