কাযা নামাজ সম্পর্কে শরীয়তের নাতিমালা
প্রশ্নঃ ২৬৭৪৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কাযা নামাজ আদায় করার জন্য সঠিক মাসলা জানতে চাই!!,
১৩ জুন, ২০২৪
ঝিনাইদহ
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এক. প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই, মনে রাখতে হবে, শরিয়তে নামায কাযা করার বিধান থাকলেও ইচ্ছাকৃতভাবে নামায কাযা করা কবিরা গুনাহ। হাদিস শরিফে এসেছে, উম্মে আইমান রাযি.হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন,
لا تترك الصلاة متعمدا فإنه من ترك الصلاة متعمدا فقد برئت منه ذمة الله ورسوله
তোমরা ইচ্ছাকৃত নামায ত্যাগ করো না। কেননা যে ইচ্ছাকৃত নামাজ ত্যাগ করে,আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার থেকে জিম্মা মুক্ত হয়ে যান। (মুসনাদে আহমদ ২৭৩৬৪)
দুই. তবে কোনো ব্যক্তি কোনো কারণে কোনো ওয়াক্তের নামায আদায় না করলে তা কাযা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম মূলনীতি হলো, যখনই কাযা নামাযের কথা মনে পড়বে তখনই পড়ে নিবে। কেননা, আনাস ইবনু মালিক রাযি. হতে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন,
مَنْ نَسِيَ صَلاَةً فَلْيُصَلِّ إِذَا ذَكَرَهَا، لاَ كَفَّارَةَ لَهَا إِلاَّ ذَلِكَ فإن الله يقول {وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي}
যদি কেউ কোনো নামাযের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে নামাযের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই। কেননা, আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন, وَأَقِمِ الصَّلاَةَ لِذِكْرِي আমাকে স্মরণের উদ্দেশে নামায কায়েম কর। (মুসলিম ৬৮৪)
দ্বিতীয় মূলনীতি হলো, ছুটে যাওয়া নামায পরবর্তী নামায পড়ার আগে পড়ে নিবে। অর্থাৎ ফজর ছুটে গেলে ঘুম থেকে উঠার পরপরই অথবা যোহরের আগে, যোহর ছুটে গেলে আসরের আগে, আসর ছুটে গেলে মাগরিবের আগে, মাগরিব ছুটে গেলে এশার আগে এভাবে নামায পড়ে নিবে। এ প্রসঙ্গে হাদীসের বাণী-
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ، جَاءَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، فَجَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا كِدْتُ أُصَلِّي الْعَصْرَ حَتَّى كَادَتِ الشَّمْسُ تَغْرُبُ. قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم “ وَاللَّهِ مَا صَلَّيْتُهَا ”. فَقُمْنَا إِلَى بُطْحَانَ، فَتَوَضَّأَ لِلصَّلاَةِ، وَتَوَضَّأْنَا لَهَا فَصَلَّى الْعَصْرَ بَعْدَ مَا غَرَبَتِ الشَّمْسُ، ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا الْمَغْرِبَ.
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ রাযি. হতে বর্ণিত, খন্দকের দিন সূর্য অস্ত যাওয়ার পর ওমর ইবনু খাত্তাব রাযি. এসে কুরাইশ গোত্রীয় কাফিরদের ভৎর্সনা করতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এখনও আসরের নামায আদায় করতে পারি নি, এমন কি সূর্য অস্ত যায় যায় অবস্থা। রাসূল ﷺ বললেন, আল্লাহর শপথ! আমিও তা আদায় করিনি। অতঃপর আমরা উঠে বুতহানের দিকে গেলাম। সেখানে তিনি নামাযের জন্য উযূ করলেন এবং আমরাও উযূ করলাম; অতঃপর সূর্য ডুবে গেলে আসরের নামায আদায় করেন, অতঃপর মাগরিবের নামায আদায় করেন। (বুখারী ৫৯৬)
তৃতীয় মূলনীতি হল, যদি কারো পাঁচ ওয়াক্তের বেশী কাযা হয়ে যায় – সেটা কয়েক দিন কয়েক মাস এমনকি কয়েক বছরও হতে পারে-তাহলে তার উচিত কাযা নামাযগুলো একটা অনুমান করে কোন নামায কত ওয়াক্ত কাযা হয়েছে তা নির্ধারণ করে নিবে। তারপর একে একে তা আদায় করবে। যত দ্রুত এবং যত বেশি সম্ভব এই কাযাগুলো আদায় করতে হবে। প্রতি ওয়াক্তে কয়েক ওয়াক্তের কাযা আদায় করলেও ভালো। এ ছাড়া সুবিধামতো সময়ে যখন যে নামাযের কাযা আদায়ের সুযোগ হয় আদায় করা যাবে। তবে প্রতি ওয়াক্তে ওই ওয়াক্তের কাযা আদায় করলে হিসাব রাখা সহজ। এভাবে আদায়কৃত নামায আনুমানিক হিসাব থেকে কমতে থাকবে। এ নিয়মে ছুটে যাওয়া নামায আদায় হয়ে গেলে ভালো। নতুবা জীবনের শেষ মুহূর্তে অবশিষ্ট নামাযের ফিদয়া দেয়ার ওসিয়ত করতে হবে।
এ অবস্থায় কাযা নামায আদায়ের নিয়ম এই যে, সে যে ওয়াক্তের কাযা আদায় করতে চাইবে সে ওয়াক্তের নিয়ত করবে যে, অমুক ওয়াক্তের সবচেয়ে প্রথম বা শেষ নামায আদায় করছি। যেমন- কাযা হওয়া নামাযের মধ্যে ফজরের নামাযের কাযা আদায় করতে চাই। তাহলে নিয়ত করবে, আমার জিম্মায় যত ফজরের নামায কাযা আছে, তার সবচেয়ে প্রথম অথবা শেষটা আদায় করছি। এভাবে আদায় করবে যাতে সকল কাযা নামায পুরো হয়ে যায়।
এভাবে বাকি নামায আদায় করবে। যোহর, আছর, মাগরিব, ইশাও এভাবে আদায় করবে।
উল্লেখ্য, সুন্নাত নামাযের কাযা করা যায় না, কেবল ফরজ ও বেতরের নামাযের কাযা করার সুযোগ থাকে। (আদ্দুররুল মুখতার, সাঈদ, খণ্ড : ২, পৃষ্ঠা : ৬৮; ফাতাওয়া দারুল উলুম, জাকারিয়া, খণ্ড : ৪, পৃষ্ঠা : ৩৩২)
সাহেবেতারতিব
والله اعلم بالصواب
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৯০৫৮৩
ভিন্ন দেশ থেকে ৩০ রোযা রেখে বাংলাদেশে গেলে রোযা রাখতে হবে? রাখলে ৩১টা হয়ে যায়। করণীয় কি?
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
대한민국 경기도 파주시 월롱면 통일로৬২০번길 ৮৯-৫৩ (KR)

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
৮০০৩৪
সাহাবীর নামে মায়ের অসন্তুষ্টির মিথ্যা গল্প!!
৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
চট্টগ্রাম

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
৯০২১৪
রজব শব্দটি মুনসারিফ নাকি গায়রে মুনসারিফ?
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
৮P৩C+GV৭

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে