الصلاة خير من النوم এর জবাবে কি বলতে হবে?
প্রশ্নঃ ২২২৬৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, الصلاة خير من النوم একজন ভাই আমাকে বলেছেন এর জবাবে صدقت و بررت বলা নাকি বানোয়াট, হাদীসে যার কোন ভিত্তি নেই,। তার কথা কতটুকু সত্য? সুন্নাহের আলোকে জানিয়ে বাধিত করবেন,
২৭ অক্টোবর, ২০২৩
ঘাটাইল
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সম্মানিত প্রশ্নকারী!
নিচের লেখাটুকু ধৈর্যের সাথে পড়ুন। প্রয়োজনে একাধিকবার পড়ুন। ইনশাআল্লাহ আপনার প্রশ্নের দালিলিক সমাধান পেয়ে যাবেন।
পুরো লেখা পড়তে লিংকে ক্লিক করুন https://www.alkawsar.com/bn/article/1951/
আযানের জবাবে কী বলতে হবে সে সম্পর্কে কোনো কোনো হাদীসে সংক্ষেপে এতটুকু বলা হয়েছে যে, মুয়ায্যিন যা বলবে তদনুরূপ বলবে। আর কোনো কোনো হাদীসে বিশদ বিবরণ আকারে মুয়ায্যিনের কোন্ বাক্য শ্রবণ করে কী বলতে হবে তা নির্দিষ্ট করে ব্যক্ত করা হয়েছে। এই দ্বিতীয় প্রকারের হাদীসগুলোতে মুয়ায্যিনের সব বাক্যের ক্ষেত্রেই অনুরূপ বলতে বলা হয়েছে কিন্তু ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’-এর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, এই বাক্য দুটোর পরে শ্রবণকারী বলবে, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’।
‘হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ’-এর জবাবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলার কারণ
তার কারণ সম্ভবত এই যে, হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ ব্যতীত আযানের অন্যান্য বাক্যগুলো পরোক্ষভাবে সালাতের দিকে আহক্ষান, প্রত্যক্ষভাবে নয়। প্রত্যক্ষভাবে মূলত সেগুলো সত্য সাক্ষ্য প্রদান ও যিক্র। এইজন্য ঐসব বাক্যের ক্ষেত্রে মুয়ায্যিন যা বলবে তা-ই বলতে বলা হয়েছে। কিন্তু হাইয়া আলাস সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ বাক্যদুটো যিক্র নয় বরং প্রত্যক্ষভাবে সালাতের প্রতি ও কল্যাণের প্রতি আহক্ষান। অতএব মুয়ায্যিন যখন বলবে, ‘হাইয়া আলাস্ সালাহ’ (সালাতের দিকে আস), ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ (কল্যাণের দিকে আস) তখন শ্রোতাও যদি ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলে তাহলে তা হবে অসংগতিপূর্ণ। এই জন্য এই বাক্যদুটোর জবাবে বলতে বলা হয়েছে, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ (আল্লাহর তাওফীক ব্যতীত সাধ্য ও শক্তি নেই)। অর্থাৎ সালাত ও কল্যাণের দিকে গমন আল্লাহ তাআলার তাওফীক ব্যতীত সম্ভব নয়। মূলত সালাত ও কল্যাণের দিকে যাওয়ার জন্য আল্লাহ তাআলার তাওফীক কামনা করার উদ্দেশ্যেই মুয়ায্যিনের ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’র জবাবে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলার শিক্ষা দান করা হয়েছে।
আস্ সালাতু খাইরুম মিনান নাওম-এর জবাবে ‘ছাদাকতা ওয়া বারারতা’ বলার অবকাশ আছে
এই নিরিখেই আমার বক্তব্য হল, ‘আস সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ বাক্যটিও যিকর নয়। বরং বাক্যটি একটি সত্যের ঘোষণা যে, ‘নিদ্রা অপেক্ষা সালাত উত্তম’। এই কথাটি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাদেরকে নিদ্রা পরিহার করে সালাতে অংশগ্রহণের জন্য উদ্বুদ্ধ করতেই ফজরের সালাতের আযানে এই বাক্যটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাক্যটি সালাতের প্রতি আহক্ষানও নয় আবার যিক্রও নয়। বাক্যটি একটি বিবৃতিমূলক বাক্য, একটি সত্য সংবাদ। অতএব প্রথম প্রকার হাদীসের দাবি অনুযায়ী মুআয্যিনের ‘আস্-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’-এর জবাবে আস্-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম বলাই যুক্তিসংগত বলে মনে হয়। কিন্তু দ্বিতীয় প্রকার হাদীসে ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ বলার যে তাৎপর্য উল্লেখ করলাম সেই তাৎপর্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ‘আস সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ বাক্যটির জবাবে বাক্যটির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ অন্য কোনো বাক্য বলারও অবকাশ আছে বলে মনে হয়। তবে এক্ষেত্রে হাদীসে যেহেতু স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি তাই ‘আস্ সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’-এর জবাবে অন্য কিছু বলাকে সুন্নত বলে সাব্যস্ত করা যায় না। তবে অন্য কিছু বলাকে না জায়েযও বলা যায় না বলে আমি মনে করি। মুয়ায্যিন যখন ‘আস সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ বলে তখন মুয়ায্যিনের এই কথার সমর্থন করে কখনও কখনও ‘সাদাকতা ওয়া বারারতা’ বলার মাধ্যমে তাকে সাধুবাদ জানানোর অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি।
দেখুন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফরে একবার একজন মুয়ায্যিনকে আযান দিতে শুনলেন। মুয়াযযিন যখন বলল, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, عَلَى الْفِطْرَةِ (স্বভাব দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত) এরপর সে যখন বলল,
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, خَرَجْتَ مِنَ النَّارِ (তুমি আগুন হতে বের হয়ে গেলে)।১ এই হাদীস দ্বারা মুয়ায্যিনের আযানের কোনো বাক্যের সাথে সংগতিপূর্ণ অন্য কোনো কিছু বলার অবকাশ বের হয়ে আসে। আমি শুধু অবকাশের কথা বলছি। সাদাকতা ওয়া বারারতা বলাকে নিয়মিত আমলে পরিণত করার কথা বলছি না। কারণ, তা হাদীস দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত নয়।
ঠিক এই একই যুক্তিতে ইকামতের জবাব দিতে গিয়ে ‘কাদকামাতিস সালাহ’-এর জবাবে ‘আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বলার অবকাশ বের হয়ে আসে। কারণ, ‘কাদকামাতিস সালাহ’ বাক্যটিও একটি সংবাদ, প্রত্যক্ষভাবে সালাতের প্রতি আহক্ষানও নয় এবং যিকরও নয়। বিশেষত কথাটি যখন একটি হাদীসে আছে। হাদীসটি যঈফ হলেও তার সনদে মাতরূক বা মুত্তাহাম কোনো রাবী নেই। হাদীসটিকে মুনকার বলার মত অন্য কোনো কারণও বিদ্যমান নেই। হাদীসটির দুইজন রাবী শাহ্র ইবনে হাওশাব ও মুহাম্মাদ ইবনে ছাবেত যঈফ কিন্তু চরম পর্যায়ের যঈফ নয়। হাঁ এই দুইজন রাবীর মাঝখানে একজন মুবহাম (নাম অনুল্লেখিত) রাবী আছেন। আর মুবহাম রাবীর হাদীসকে যঈফ বলা হয় এ কারণে নয় যে, সে যঈফ রাবী। তার হাদীসকে যঈফ বলা হয় এজন্য যে, তার সম্পর্কে ভালো মন্দ কিছুই জানা যায় না। হতে পারে সে নির্ভরযোগ্য আবার এও হতে পারে যে, সে অনির্ভরযোগ্য। তার নির্ভরযোগ্যতা ও অনির্ভরযোগ্যতা উভয়টিই সম্ভাব্য, নিশ্চিত নয়। এই কারণে তার হাদীসটি মূলত ঝুলন্ত পর্যায়ের। তার বর্ণিত হাদীসকে চোখ বন্ধ করে যেমন গ্রহণ করা যায় না, তেমনই বর্জনও করা যায় না। যেহেতু তার হাদীসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায় না ফলে কার্যত তা দলীলযোগ্য হয় না। এটাকেই ব্যক্ত করা হয় যঈফ শব্দ দ্বারা। কিন্তু সত্তাগতভাবে তার হাদীস যঈফ নয় বরং প্রাসঙ্গিক কারণে তার হাদীস শুধু আমল-অযোগ্য। অতএব যদি হাদীসটির সমর্থনে অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য যুক্তি বা লক্ষণ মেলে তবে তার হাদীসের উপর আমল করতে বাধা থাকার কথা নয়। এখানেও আমরা হাদীসটির সমর্থনে একটি গ্রহণযোগ্য যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি। এজন্য হাদীসটির উপর আমল করাতে তেমন দোষের কিছু দেখছি না।
والله اعلم بالصواب
শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
২৬০২৬
ইকামত দেয়ার সময় ডানে বামে মাথা ঘুরানো
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
West Bengal ৭৪২০০০

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
২৪১৩৯
২৫ অক্টোবর, ২০২২
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,
২৪১০৬
ফজরের নামাযের ইকামত হয়ে গেলে সুন্নাত আদায় করা যাবে কি?
১৫ নভেম্বর, ২০২২
বসির সড়ক

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে