আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১৬১৬৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম।আমি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। কিছুদিন আগে আমি একটি হারাম সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলাম, এবং সম্পর্কটা আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও যিনা পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। আমি আমার কাজের জন্য খুবই অনুতপ্ত, আমি সবসময় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।যার সাথে আমি এ পাপ করেছি, এখন তার সাথে আমার কোনোপ্রকার যোগাযোগ নেই, আমি যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। কিন্তু আমি তাকে ছাড়া কোনোভাবে থাকতে পারছিনা, একদম ছন্নছাড়া হয়ে গেছে আমার জীবন। অপরাধবোধ প্রতিনিয়ত আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে, আমি সবসময় এ পাপের ভয় করেছি, কিন্তু কিভাবে যেনো নিজেই এ পাপে জড়িয়ে পড়েছিলাম। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে আমি কি এই ব্যক্তিকে আমার জীবনে হালাল ভাবে স্বামী হিসেবে চেয়ে দোয়া করতে পারবো?আমি তাকে স্বামী হিসেবে পেতে‌ চাই, শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্কের কারণে।আমি আবার অন্য একটা লোকের সাথে সংসার করবো এটা ভাবলেই আমার সব উলটপালট হয়ে আসে‌, নিজেকে খুব ঘেন্না লাগে। সবসময় চোখের সামনে মনেহয় ওসব ভাসতে থাকে।এসব ভাবতে ভাবতে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি, শারীরিক মানসিক দুইভাবেই আমি একদম বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছি। আমার মনে হচ্ছে এখন আমার বিয়ে করা দরকার, আর সেজন্য আমি কি করবো এখন।আমি এ অবস্থায় কি করবো কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা। আমাকে প্লিজ একটু পরামর্শ দিন, একটু সাহায্য করুণ, এ অবস্থায় আমার করণীয় কি? আমি সুস্থ একটা জীবনে কিভাবে ফিরতে পারবো

৬ এপ্রিল, ২০২২
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





সম্মানিত প্রশ্নকারী!
আপনি যে কাজ করেছিন নিঃন্দেহে তা মারাত্মাক অন্যায় এবং সম্পূর্ণ শয়িয়া বিরোধী কাজ। এখন তার কাফফারা একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কাছে তাওবা করা। তাই এখন আপনার জন্য করনীয় হলো, ভবিষ্যতে এজাতীয় কাজে লিপ্ত না হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে আল্লাহ তায়ালার দরবারে কায়মনোবাক্যে, একনিষ্ঠভাবে অঙ্গীকার করা এবং অতীত কর্মের ভুল স্বীকার করে তাওবা করা। তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা আপনার অতীতের ওই গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। কেননা আল্লাহ তায়ালা সুরা যুমারের ৫৩ নং আয়াতে গুনাহগার বান্দাদের উদ্দেশ্যে ইরশাদ করেন,

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَىٰ أَنفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوا مِن رَّحْمَةِ اللَّهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ
يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا ۚ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ
(হে নবী তুমি) বল, ‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ-আল্লাহ্ র অনুগ্রহ হতে নিরাশ হয়ো না; আল্লাহ্ সমুদয় পাপ ক্ষমা করে দিবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ কিন্তু আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন মনে করে আবার ওই একই কাজে লিপ্ত হওয়া নির্বুদ্ধিতা বৈকি?

ওই পুরুষকে স্বামী হিসেবে পেতে দোয়া করতে যদিও কোনো বাধা নেই। কিন্তু আমাদের পরামর্শ থাকবে, প্রথমত আপনি আপনার পছন্দের বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে পারিবারিকভাবেই তাকে বিয়ে করে নিন। কেননা যেখানে আমরা জীবনের নূন্যতম বিষয়েও পরিবারের সাথে আলোচনা করে থাকে সেখানে বিবাহের ন্যায় গুরুত্বপূর্ণ, গুরুগম্ভীর ও দূরদৃষ্টি সম্পৃক্ত স্পর্শকাতর বিষয়ে কিভাবে পরিবারকে না জানিয়ে করার চিন্তা করাও বোকামী!
কিন্তু কোনো কারণে যদি তার সাথে আপনার বিবাহ না হয় তাহলে কালবিলম্ব না করে দ্রুত যোগ্য পাত্রের সন্ধান করে বিবাহ সম্পন্ন করে নিন। আর অতীতের গুনাহের বিষয়টি আলোচনা কিংবা স্মরণ করা থেকে বিরত থাকুন। শুধুমাত্র সেটা আল্লাহ তায়ালার সামনে পেশ করুন।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন