আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১২৯৯৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম, কোন দোয়া আছে কি? যা পড়লে আল্লাহপাক নেক ইচ্ছাপূরণ করে দেন।দয়া করে জানিয়ে বাধিত করবেন। জাজাকাল্লাহ খাইরান।,

২৩ জানুয়ারী, ২০২২

Faridpur-Barisal Highway

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





মনের আশা পূরণে ‘ইসমে আজম’-এর আমল সবচেয়ে কার্যকর। # মানুষ অনেক সময় এমন কিছু কাজের মুখোমুখি হয়, যখন তা সম্পাদনে সে কোনো উপায় বের করতে পারে না। যে সময় মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যায়। সে সময়টিতে নিজেদের কার্যসিদ্ধির উদ্দেশ্যে মনের প্রত্যাশা পূরণে আল্লাহর স্মরণাপন্ন হওয়া ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকে না। এমনই একটি আমলের কথা তুলে ধরেছেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাহলো ‘ইসমে আজম’র আমল। কিন্তু কী সেই ‘ইসমে আজম’? হাদিসে ‘ইসমে আজম’ সম্পর্কে কী বলেছেন বিশ্বনবি?

মনের একান্ত আশা-প্রত্যাশা পূরণে কোনো মানুষেরই প্রবল আগ্রহ কিংবা চেষ্টার কমতি থাকে না। সে কারণেই নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার পরিপূর্ণতায় নানাবিধ চেষ্টা সাধনা করে থাকে। কোনোভাবেই যখন কোনো কিছু হয় না তখন তারা ফিরে আসে ধর্মের দিকে কিংবা ইসলামিক স্কলারদের স্মরণাপন্ন হয়। অথচ মনে আশা পূরণে হাদিসে পাকে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘ইসমে আজম’র কার্যকরী দিকনির্দেশনার কথা উল্লেখ করেছেন।


‘ইসমে আজম’ হলো আল্লাহ তাআলার মহান নাম। এ ‘ইসমে আজম’র আমলের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চাওয়া হলে মহান আল্লাহ তাআলা তা পূরণ করেন। এ মহান নামের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করলে, ডাকলে তিনি বান্দার সে ডাকে সাড়া দেন।

এ মর্মে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিসের অনেক বর্ণনা রয়েছে।

ইসলামিক স্কলারদের মতে ‘ইসমে আজম’

অনেক ইসলামিক স্কলার ‘ইসমে আজম’ সম্পর্কে বলেছেন, এটি হলো মূল নাম ‘আল্লাহ’। আল্লাহ তাআলার অনেক গুণবাচক নাম রয়েছে। এর মধ্যে মূল নাম হচ্ছে- ‘আল্লাহ’। এ নামটিকে অনেক ইসলামিক স্কলার ‘ইসমে আজম’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।


কোনো বান্দা যখন অন্তরের গভীর থেকে কায়োমনো বাক্যে এ ‘ইসমে আজম’- ‘আল্লাহ, আল্লাহ’, নামের জিকির করে; তার কাছে মনের একান্ত আশা পূরণে কোনো কিছু চান, তবে আল্লাহ তাআলা তা অবশ্যই কবুল করে নেন।

সে কারণে মানুষের চাওয়া-পাওয়া বা মনের আশা পূরণে একান্ত কোনো কিছু চাওয়ার আগে, আল্লাহ তাআলাকে ‘ইসমে আজম’র মাধ্যমে ডেকে ভালোবাসা, আস্থা, ভরসা থেকে কায়োমনোবাক্যে ও দ্বীনতা এবং হীনতার সঙ্গে ‘আল্লাহ আল্লাহ’ জিকির করে প্রার্থনা করা হয়; তবে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার চাওয়াকে ফিরিয়ে না দিয়ে তা পরিপূর্ণ করে দেন।

হাদিসের বর্ণনায় ‘ইসমে আজম’

‘ইসমে আজম’ সম্পর্কে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নির্দিষ্ট করে হাদিসের কিছু বিশেষ বাক্যের দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। তাহলো-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনু বুরাইদাহ আল-আসলামি রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁর বাবা থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে তার দোয়া এভাবে বলতে শুনেন-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ كُفُوًا أَحَدٌ

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আন্নাকা আংতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আংতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম ইয়ালিদ ওয়া লাম ইউলাদ ওয়া লাম ইকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে প্রার্থনা করছি আর সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমিই একমাত্র আল্লাহ, তুমি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, তুমি একক সত্তা, স্বয়ংসম্পূর্ণ, যিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাকেও কেউ জন্ম দেয়নি, আর তার সমকক্ষ কেউ নেই।’

বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (ওই ব্যক্তির মুখে এ বাক্যগুলো শুনে) তখন বললেন-

‘সেই মহান সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন! নিঃসন্দেহে এ লোক আল্লাহ তাআলার মহান নামের (ইসমে আজম) অসিলায় তার কাছে প্রার্থনা করেছে; যে নামের অসিলায় দোয়া করা হলে তিনি কবুল করেন এবং যে নামের অসিলায় প্রার্থনা করা হলে তিনি দান করেন।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

এ হাদিসের আলোকে তাবৎ দুনিয়ার অনেক হাদিস বিশারদ বলেছেন, এটিই হলো সেই দোয়া; যেটিকে ‘ইসমে আজম’ বলা হয়।

হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ ফতহুল বারীতে আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি এ হাদিসটিকে ‘ইসমে আজম’র সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশুদ্ধ হাদিস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এ ‘ইসমে আজম’ পড়ে আল্লাহ তাআলার কাছে মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে দোয়া করলে অবশ্যই তিনি বান্দার মনের সব ভালো ও কল্যাণকর আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, নিজেদের একান্ত কল্যাণকর চাওয়া পাওয়া পূরণে আল্লাহর প্রতি আন্তরিকতা, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, বিশ্বাস, ভক্তি এবং আস্থা-ভরসা রেখে সংক্ষেপে ‘ইসমে আজম’র আমল করা। আল্লাহকে ডেকে মনের চাওয়া-পাওয়াগুলো পূরণ করার আবেদন করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নিজেদের জীবনের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে ‘ইসমে আজম’র আমল যথাযথভাবে করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১৩৯৭৪

কবর জিয়ারতের নিয়ম


২১ জানুয়ারী, ২০২৫

ত্রিপুরা ৭৯৯১০৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ

১১৯০৭

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম।হালাল রুজির জন্য বিশেষ কোন আমল কি আছে?

২৩ ডিসেম্বর, ২০২১

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

১১৮৪৩

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কোনো বিশেষ মেয়েকে স্ত্রী হিসেবে আল্লাহ এর কাছে চাওয়া যাবে?

২১ ডিসেম্বর, ২০২১

সাভার ইউনিয়ন ১৩৪০

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

১১৬৫০

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফজরের সুন্নাত নামাজ এবং ফরজ নামাজ জদি কাজা হয়ে যায় তাহলে কি সুন্নাত নামাজ কাজা আদায় করতে...

২৩ ডিসেম্বর, ২০২১

ওয়েস্ট বেঙ্গল ৭৪২৩০৩

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy