আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

অজুর সময় যেসব দোয়া পড়বেন

প্রশ্নঃ ১২৫৬৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, অজু করার সময় কি দোয়া পড়তে হয়?

১১ জানুয়ারী, ২০২২
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


অজুর সময় যেসব দোয়া পড়বেন

অজু করা ইবাদত। অনেক ইবাদতের জন্য অজু করা ফরজ। সব সময় অজু অবস্থায় থাকা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দায়েমি সুন্নাতও বটে। হাদিসের বর্ণনা মতে অজুর শুরু ও শেষে রয়েছে ফজিলতপূর্ণ একাধিক দোয়া।

তাছাড়া নামাজ, হজ ও কুরআন তেলাওয়াতসহ অনেক ইবাদতের জন্যই কুরআনুল কারিমে অজু তথা পবিত্রতা অর্জনের অনেক নির্দেশনা রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা নামাজের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমণ্ডল ও উভয় হাত কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও আর টাখনুসহ উভয় পা ধোও। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা শরীর পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রোগী হও, অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস কর; অতপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মণ্ডল ও উভয় হাত মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদের পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬)


অজু করার শুরুতে, অজু করার সময় এবং শেষে ৪টি দোয়া পড়ার জন্য হাদিসের নির্দেশনা রয়েছে। এতে অনেক ফজিলত ঘোষণা করা হয়েছে। ফজিলতপূর্ণ দোয়াগুলো হলো-

> অজুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা-
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْم
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’
অর্থ : পরম করুনাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।

> অজু করার সময় এ দোয়াটি পড়তে থাকা-
اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِىْ ذَنْبِى وَ وَسِّعْلِىْ فِىْ دَارِىْ وَبَارِكْ لِىْ فِىْ رِزْقِىْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি, ওয়া ওয়াসসিলি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফি রিযক্বি। (নাসাঈ)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমার গোনাহ মাফ করে দাও। আমার জন্য আমার বাসস্থান প্রশস্ত করে দাও। এবং আমার রিযিক্বে বরকত দিয়ে দাও।’

> অজুর শেষে কালেমার সাক্ষ্য ও উপকারিতা
أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’
অর্থ : ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরিক নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসুল।’ (মুসলিম, মিশকাত)


উপকারিতা : হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালেমায়ে শাহাদাত পড়বে, তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হবে; ওই ব্যক্তি যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করবে। (মুসলিম, মিশকাত)

> অতপর এ দোয়াটি পড়া-
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنْ التَّوَّابِينَ ، وَاجْعَلْنِي مِنْ الْمُتَطَهِّرِينَ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাঝআলনি মিনাত তাউয়্যাবিনা ওয়াঝআলনি মিনাল মুতাত্বাহ্‌হিরিন।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন এবং পবিত্রতা অবলম্বনকারীদের মধ্যে শামিল করে নিন।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

অজুর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উল্লেখিত দোয়াগুলো অনেক ফজিলত পূর্ণ। যা অজুকারীকে পবিত্র ও নেককার বান্দায় পরিণত করে দেয়। যার জন্য জান্নাতের সব দরজা উন্মুক্ত থাকে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, একান্ত মনোযোগের সঙ্গে সুন্নাতের অনুসরণে সব সময় অজু অবস্থায় থাকা। অজুর ফজিলত লাভে যথাযথভাবে অজু করা। হাদিসে ঘোষিত অজুর ফজিলত ও উপকারিতাগুলো অর্জন করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব সময় অজু অবস্থায় থাকার তাওফিক দান করুন। পবিত্রতা অবলম্বনকারী ও তাওবাহকারী হিসেবে কবুল করুন। দুনিয়াতে উত্তম রিজিক, মৃত্যুর আগে গোনাহ মাফ এবং পরকালে চিরস্থায়ী জান্নাতের অধিবাসী হিসেবে কবুল করুন। আমিন।
(সংগৃহীত)

এছাড়াও সুন্নাহসম্মত অজু সম্পর্কে জানতে নিচের রেফারেন্স উত্তরটি দেখুন।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

#১৩১০৫
আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রিয় শাইখ আমি অনেক দিন হলে একটা বিষয় নিয়ে গবেষণা করতাছি কিন্তু আমি এটার উত্তর এখনো বের করতে পাচ্ছি না তা হলো,
আমাদের দেশের কিছু সুন্নিরা বলে থাকে আমাদের নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন কিন্তু এ ব্যাপ্যারে আমি কোরআন বা হাদিসে আস পর্যন্ত কোন দলিল পাই নাই। বরং কোরআন হাদিসে অন্য কথা বলা আছে।
যেমনঃ
মহান আল্লাহ বলেন,
(হে নবী) আপনে বলুন আসমান আর জমিনে যা কিছু আছে এর গায়েব এক মাত্র আল্লাহ জানেন...( সূরা নমল আয়াতঃ ৬৫)
এ ছাড়াও আরও বলা আছে ( সূরা আরাফ আয়াতঃ ১৮৮ এবং সূরা আহক্বাফ আয়াতঃ ৯) তা ছাড়াও সুন্নিদের এ কথা খ্রিষ্টানদের বাইবেলের বিরুদ্ধে যাই ( যে নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন)
যেমনঃ ডঃ আহমেদ দিদাত, ডঃ জাকির নায়ক, ও ডঃ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার বাইবেলের একটা অনুছেদ ব্যাখ্যা করে খ্রিষ্টানদের বুঝাতে চেয়েছিলেন বা চাচ্ছেন তা হলো ( দ্বিতীয় বিবরন ১৮ অধ্যায় এর ১৮ নাংঃ অনুঃ... বলা হয়েছে আমি মূসার মতো/সদৃশ তার ভাইকে পাঠাবো ভাববাদী হিসাবে) এখন সুন্নিরা যদি বলে যে নবী সাঃ গায়েব জানতেন তা হলে এটা বাইবেলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। কারন খ্রিষ্টারা বলে এখানে যীশুর কথা বলা হয়েছে কিন্তু না কারন এ খানে বলা হয়েছে সে হবে মূসার সদৃশ আর মূসা আঃ সাধার মানুষ ছিলেন আর খ্রিষ্টনরা বলে যীশু/ঈসা আঃ ছিলেন ঈশ্বর তা হলে যীশু কখনোই মূসার মতো না বরং নবী সাঃ মূসার সদৃশ কারন তারা দুজনেই সাধারন মানুষ। কিন্তু সুন্নিরা যখনি বলতাছে নবী সাঃ গায়েব জানতেন তখনি এ কথা বাইবেলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে কারন মূসা আঃ গায়েব জানতেন না। এটা অনেক কাহিনি আমি ঐ দিকে যেতে চাচ্ছি না। আর যারা বলে যে নাবী সাঃ গায়েব জানতেন আমি আশা করি তারা শিরক করেছে সে যতই বড় আলেম হোক না কেন কারন
মহান আল্লাহ বলেন
( অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে.. সূরা ইউসুফ আয়াতঃ ১০৬)
আমার বিশ্বাস তারা যদি নতুন করে তাওবা করে ইমান না আনে তা হলে তারা মুশরেক অবস্থায় মৃত্যু বরন করবে, এ ব্যাপ্যারে আপনার মতা মত জানাবেন প্রিয় শাইখ...........
question and answer iconউত্তর দিয়েছেন: মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২৯ জানুয়ারী, ২০২২
গাবতলী