প্রশ্নঃ ১৩১০৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, প্রিয় শাইখ আমি অনেক দিন হলে একটা বিষয় নিয়ে গবেষণা করতাছি কিন্তু আমি এটার উত্তর এখনো বের করতে পাচ্ছি না তা হলো, আমাদের দেশের কিছু সুন্নিরা বলে থাকে আমাদের নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন কিন্তু এ ব্যাপ্যারে আমি কোরআন বা হাদিসে আস পর্যন্ত কোন দলিল পাই নাই। বরং কোরআন হাদিসে অন্য কথা বলা আছে। যেমনঃ মহান আল্লাহ বলেন, (হে নবী) আপনে বলুন আসমান আর জমিনে যা কিছু আছে এর গায়েব এক মাত্র আল্লাহ জানেন...( সূরা নমল আয়াতঃ ৬৫) এ ছাড়াও আরও বলা আছে ( সূরা আরাফ আয়াতঃ ১৮৮ এবং সূরা আহক্বাফ আয়াতঃ ৯) তা ছাড়াও সুন্নিদের এ কথা খ্রিষ্টানদের বাইবেলের বিরুদ্ধে যাই ( যে নবী (সাঃ) গায়েব জানতেন) যেমনঃ ডঃ আহমেদ দিদাত, ডঃ জাকির নায়ক, ও ডঃ খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার বাইবেলের একটা অনুছেদ ব্যাখ্যা করে খ্রিষ্টানদের বুঝাতে চেয়েছিলেন বা চাচ্ছেন তা হলো ( দ্বিতীয় বিবরন ১৮ অধ্যায় এর ১৮ নাংঃ অনুঃ... বলা হয়েছে আমি মূসার মতো/সদৃশ তার ভাইকে পাঠাবো ভাববাদী হিসাবে) এখন সুন্নিরা যদি বলে যে নবী সাঃ গায়েব জানতেন তা হলে এটা বাইবেলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। কারন খ্রিষ্টারা বলে এখানে যীশুর কথা বলা হয়েছে কিন্তু না কারন এ খানে বলা হয়েছে সে হবে মূসার সদৃশ আর মূসা আঃ সাধার মানুষ ছিলেন আর খ্রিষ্টনরা বলে যীশু/ঈসা আঃ ছিলেন ঈশ্বর তা হলে যীশু কখনোই মূসার মতো না বরং নবী সাঃ মূসার সদৃশ কারন তারা দুজনেই সাধারন মানুষ। কিন্তু সুন্নিরা যখনি বলতাছে নবী সাঃ গায়েব জানতেন তখনি এ কথা বাইবেলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে কারন মূসা আঃ গায়েব জানতেন না। এটা অনেক কাহিনি আমি ঐ দিকে যেতে চাচ্ছি না। আর যারা বলে যে নাবী সাঃ গায়েব জানতেন আমি আশা করি তারা শিরক করেছে সে যতই বড় আলেম হোক না কেন কারন মহান আল্লাহ বলেন ( অনেক মানুষ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে.. সূরা ইউসুফ আয়াতঃ ১০৬) আমার বিশ্বাস তারা যদি নতুন করে তাওবা করে ইমান না আনে তা হলে তারা মুশরেক অবস্থায় মৃত্যু বরন করবে, এ ব্যাপ্যারে আপনার মতা মত জানাবেন প্রিয় শাইখ...........
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তাদেরকে বলো, আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীতে ও আকাশে কেউ অদৃশ্যের জ্ঞান রাখে না এবং তারা জানে না কবে তাদের উঠিয়ে নেয়া হবে’ (সূরা নমল-৬৫)। কাজেই গায়েবের ইলম একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই জানেন। যারা আল্লাহর ইলমের সাথে শরিক করবে তারা মুশরিক। মৃত্যুর পূর্বে তাদের তাওবা করা জরুরী
আল্লাহ তায়ালা রসূলুল্লাহ সা.-কে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন,
قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنَ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ ۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰ إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বল, আমি রাসূলগণের মধ্যে অভিনব নই। আমার জানা নেই আমার সঙ্গে কী আচরণ করা হবে এবং এটাও (জানি) না যে, তােমাদের সঙ্গে কী আচরণ করা হবে। আমি তাে কেবল আমার প্রতি যে ওহী নাযিল করা হয়, তারই অনুসরণ করি। আর আমি তাে কেবল একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
তাফসির: এই আয়াতে বলা হচ্ছে, আমি এমন অভিনব রাসূল নই যে, আমার আগে কোন রাসূল আসেনি এবং আমি এ রকম অস্বাভাবিক দাবি করছি না যে, আমি আলেমুল গায়েব, অদৃশ্যের সবকিছু আমি জানি। আমি যা-কিছু পেয়েছি কেবল ওহীর মাধ্যমেই পেয়েছি। এমনকি ওহী ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আমার এটাও জানা সম্ভব নয় যে, দুনিয়া ও আখেরাতে আমার বা তােমাদের সাথে কি রকম ব্যবহার হবে। এছাড়াও বহু আয়াত ও হাদিসে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ গ্রহন না করে তাহলে আমরা তার হেদায়াত কামনা ছাড়া আর কিইবা করতে পারি।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন