আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ১২৩১৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কেমন আছেন? আশাকরি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমি আগে জানতাম না গান, বাদ্যযন্ত্র হারাম। কিন্তু যখন জানতে পারি তখন আমি গানবাজনা আর শুনিনি, আলহামদুলিল্লাহ। আমার প্রশ্নঃএমন কিছু গানের লাইন আছে যেগুলো শালীনতা বজায় রাখে এবং বাদ্যযন্ত্রবিহীন। আমি কি ভালোবাসার টানে আমার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সেসব লাইন গাইতে পারবো মাঝে মাঝে?

৩ জানুয়ারী, ২০২২
ঢাকা ১২১৯

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





প্রথমত: স্বামী স্ত্রী কর্তৃক পরস্পরকে উপভোগ করা আল্লাহ বৈধ করেছেন। উপভোগের কোন পদ্ধতি অবৈধ করা হয়নি। তবে পায়ু পথে সঙ্গম করাকে অবৈধ করা হয়েছে। এমনিভাবে মাসিক ও প্রসুতিবস্থায় সঙ্গম করাও না জায়েজ। তবে সর্বাবস্থায় স্পর্শ, চুম্বন, দর্শন, মৈথুন জায়েজ।

স্বামী তার স্ত্রীর শরীরের যে কোন অংশ দেখতে পারে, এমনিভাবে স্ত্রী তার স্বামীর শরীরের যে কোন অংশ দেখতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বলেন :
(আর যারা তাদের নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী। তবে তাদের স্ত্রী ও তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে তারা ছাড়া, নিশ্চয় এতে তারা নিন্দিত হবে না। অতঃপর যারা এদের ছাড়া অন্যকে কামনা করে তারাই সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা আল মুমিন, আয়াত ৫-৭)

ফাতাওয়া ইসলামিয়া ২২৬/৩

অতএব স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে গান শোনানো বা স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে গান শোনানো জায়েয। তবে কয়েকটি শর্ত পালন করতে হবে :

১- বাদ্য যন্ত্র, যেমন হারমোনিয়াম, তবলা ইত্যাদি গানে ব্যবহার করা যাবে না।
২- গান হল কতগুলো কথার সমষ্টি। তাই যে কথা ভাল, তার গানও ভাল। যে কথা খারাপ, তা গানেও খারাপ। তাই গানের মধ্যে কারো দোষত্র“টি বর্ণনা, কাউকে গালি দেয়া, অন্য কোন নারীর শরীর ও চরিত্র নিয়ে কথা বলা ইত্যাদি পরিহার করতে হবে। তবে প্রেম, ভালোবাসা, যৌন উত্তেজনামুলক কথায় দোষ নেই।
৩- গানটি যেন স্বামী স্ত্রী ব্যতীত অন্য কেউ শুনতে না পায়। সন্তান, প্রতিবেশী বা অন্যরা যেন না শোনে। এমনিভাবে অপরিচিত লোকেরা যেন না শোনে। সন্তান বয়সে ছোট হলেও তাকে গান শোনান যাবে না। যদিও সে না বুঝে তবুও এটা তার লালন পালনের ইসলামি নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
স্বামী স্ত্রীর এমন অনেক বিষয় আছে যেগুলো সন্তানদের থেকে গোপন রাখতে হয়। যেমন, আলিঙ্গন, চুম্বন, সহবাস ইত্যাদি।

শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহ. কে এ প্রশ্নটি করা হলে তিনি উত্তরে বলেছেন : যদি গান দিয়ে একে অপরের কন্ঠ শুনে বিনোদনের উদ্দেশ্য হয় তবে তা কয়েকটি শর্তে জায়েজ। শর্তগুলো হল, গানের কথাগুলো জায়েয হতে হবে। কথাগুলো যদি শরীয়তে নিষিদ্ধ হয় তবে তা কোন অবস্থাতে কারো কাছে গাওয়া যাবে না। রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন :
কবিতার ভাল কথাগুলো ভাল, আর খারাপ কথাগুলো খারাপ।
যদি কোন মানুষ গান বা কবিতায় খারাপ কথা বলে তবে তাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।

গান করার দ্বারা উদ্দেশ্য যদি হয়, একে অপরের কন্ঠ শুনে পুলকিত হবে, আনন্দ পাবে তবে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সামনে গান করলে কোন দোষ নেই। তবে গানের উদ্দেশ্য যদি পাপাচারী শিল্পীদের মত গানের অনুশীলন বা অনুকরণ হয় তবে তা জায়েয নয়।

والله اعلم بالصواب

মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন