আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৯৯৯২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, অনুগ্রহ করে আওয়াবিন ও ইশরাক নামাজের ফজিলত জানাবেন। এই নামাজ আদায়ের সঠিক নিয়ম কি?

৫ নভেম্বর, ২০২১
ঢাকা ১০০০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم





ইশরাক..
*******
এ নফল নামাজের ফজিলত বর্ণনায় একাধিক হাদিসে এসেছে-

> রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ পড়ল। অতঃপর সূর্য উঠা পর্যন্ত সেখানে বসে আল্লাহর জিকির করল; অতঃপর দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়ল; সে একটি হজ ও ওমরাহ করার সাওয়াব নিয়ে ফিরে গেল।’ (তাবারানি, আত-তারগিব)

> অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘সূর্য উঠার আগে আল্লাহর জিকির, তাকবির, তাহমিদ ও তাহলিল পাঠ করা আমার কাছে ইসমাঈল বংশের দুইজন গোলাম আজাদ করার চেয়েও অধিক প্রিয়।’ (মুসনাদে আহামদ)

> হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজর নামাজ জামাতে আদায় করার পর সূর্য উঠার আগ পর্যন্ত ওখানে বসে বসেই আল্লাহর জিকির করে। অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে। তার জন্য পূর্ণাঙ্গ হজ ও ওমরার সমান সাওয়াব রয়েছে।’ (তিরমিজি, মিশকাত)

> হজরত আবু উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, এক নামাজের পর (ধারাবাহিক) আর এক নামাজ; যার মাঝখানে কোনো গোনাহ হয়নি, তা ইল্লিয়্যুন (উচ্চ মর্যাদায়) লেখা হয়।’ (আবু দাউদ)

আওয়াবীন নামাজ
*****************

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মাগরিবের ফরয এবং সুন্নাতের পর কমপক্ষে ছয় রাকআত এবং সর্বাপেক্ষা বিশ রাকআত নফল নামাজকে আওয়াবীনের নামাজ বলা হয়। হাদিসে এই ছয় রাকাত আওয়াবীনের ফযিলতের ১২ বছরের ইবাদত করার সওয়াব অর্জিত হওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে।
এছাড়াও আরো ফজিলতের কথা বর্ণিত হয়েছে।

এ নামাযটির ব্যাপারে হাদিস
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو الْحُسَيْنِ الْعُكْلِيُّ، أَخْبَرَنِي عُمَرُ بْنُ أَبِي خَثْعَمٍ الْيَمَامِيُّ، أَنْبَأَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ سِتَّ رَكَعَاتٍ لَمْ يَتَكَلَّمْ بَيْنَهُنَّ بِسُوءٍ عُدِلْنَ لَهُ بِعِبَادَةِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ سَنَةً " .
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি মাগরিবের সালাতের পর ছয় রাকআত নফল সালাত (নামায/নামাজ) পড়লো এবং তার মাঝখানে কোন মন্দ কথা বলেনি, তাকে বারো বছরের ইবাদাতের সম-পরিমাণ সওয়াব দান করা হলো। (ইবনে মাজা ১১৬৭, তিরমিজি ৯৮ নং পৃষ্ঠা)

হযরত আম্মার বিন ইয়াসির রাঃ থেকে বর্ণিত রাসুল সাঃ বলেন যে ব্যাক্তি মাগরীবের পর ৬ রাকাত আওয়াবীনের নামাজ পড়বে,তাহলে তার গুনাহ সমুহ মাফ করে দেওয়া হবে,যদিও তার গুনাহ সাগরের ফেনা সমপরিমাণ হয়।
( ইবনে মাজা ৮১ পৃষ্ঠা)

হযরত হুযাইফা (রা) বলেন “আমি নবীজি (সা)-র কাছে এসে তার সাথে মাগরীবের সালাত আদায় করলাম। তিনি মাগরীবের পরে ইশার সালাত পর্যন্ত নফল সালাতে রত থাকলেন।” সহীহ হাদিস। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, নসাঈ, সুনানুল কুবরা)।
,
★তবে আহলে হাদীস সহ কিছু ইসলামী স্কলার গন বলেন যে আওয়াবীনের নামায আসলে চাশতের নামাযের অপর নাম।
তাদের দলিল হলোঃ
মহানবী (সাঃ) বলেন, “চাশতের নামায হল আওয়াবীনের নামায।” (জামে ৩৮২৭নং)

তারা বলেন যে হাদীসে মাগরীব ও এশার মধ্যবর্তী সময়ের নামাযকে আওয়াবীনের নামায বলা হয়েছে, তা সহীহ নয়; যয়ীফ। (সিলসিলাহ যায়ীফাহ, আলবানী ৪৬১৭, যইফ জামে ৫৬৭৬নং)

তাদের দাবী হলো
তিরমিযী ও ইবনে মাজাতে যে ৬ রাকআত নামায মাগরেবের পর পড়লে ১২ বছর ইবাদতের সমান হওয়ার কথা বলা হয়েছে তা সহীহ নয়। বরং তা দুর্বল হাদীস।

আমাদের জন্য উচিত হলো মতবিরোধ না করে উক্ত দুই সময়েই নফল নামাজ পড়া।
তাহলে উভয় হাদীসের উপর আমল হয়ে যাবে।

(সংগৃহীত)

উভয় নামাজ আদায়ের পদ্ধতি অন্যান্য সকল নামাজের মতই। এবং কোনো নির্দিষ্ট দোয়া বা সুরা নেই।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি বাইতুল কুরআন মাদারাসা , মোহাম্মাদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন