প্রশ্নঃ ৯৮৯৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি একজন ডেন্টাল চিকিৎসক। আমি একটি ডেন্টাল ক্লিনিক এ কাজ করি।এখানে কাজের সময় বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত। আমাদের এখানে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ভালোভাবে দেখা হয়, এখানে এসে আমাদেরকে ক্লিনিক এর নির্ধারিত পোশাক পরতে হয়।এমতাবস্থায় আমাদের ক্লিনিক এর বাহিরে বের হওয়া কঠিন কারণ ক্লিনিক এর মালিক বের হতে দেয় না। মসিজদে যাওয়া আসা নামাজ পড়া সব মিলিয়ে এক ওয়াক্ত নামাজের জন্য ৩০ মিনিট সময় লাগে। আর এসময় রোগীও এসে বসে থাকে। এজন্য ৩ বা ৪ জন মিলে ক্লিনিকের একটি নির্দিষ্ট স্থানে জামাত করে সালাত আদায় করা হয়।এটা নিয়মিত করা হয়।আমাদের এভাবে সালাত আদায় করা জায়েজ হবে কিনা?আমরা জামাতে সালাত আদায়ের সওয়াব পাব কিনা??? নাকি গুনাহ হবে???? আবার অনেক সময় রোগীর চাপ বেশি থাকায় জামাত করা হয় না, আমাদের জমাত করার ইচ্ছে আছে কিন্তু রোগীর চাপে করা হয় না এমতাবস্থায় আমাদের করণীয় কি হবে??আমরা জামাত তরক করার জন্য গুনাহগার হবো কিনা??
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(১) হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, পুরুষদের পক্ষে জামাতে নামাজ আদায় করার সাওয়াব তার ঘরে ও বাজারে নামাজ পড়ার চেয়ে পঁচিশ গুণ বেশি। এর (মসজিদে নামাজ আদায়ের) কারণ হলো-
- কোনো ব্যক্তি যখন ভালভাবে ওজু করে নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে গমন করে এবং নামাজ ছাড়া তার মনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য না থাকে; তখন মসজিদে প্রবেশ না করা পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপের (কদমের) বিনিময়ে তার মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং একটি গোনাহও মাফ হয়ে যায়।
- মসজিদে প্রবেশ করে যতক্ষণ পর্যন্ত সে নামাজের অপেক্ষায় বসে থাকে, ততক্ষণ সে নামাজের অনুরূপই ছাওয়াব পেতে থাকে।
- আর যে ব্যক্তি নামাজ আদায়ের পর কাউকে কষ্ট না দিয়ে ওজুসহ মসজিদে অবস্থান করে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার ক্ষমার জন্য এই বলে দোয়া করতে থাকে-
‘হে আল্লাহ! এ (ব্যক্তি) কে তুমি ক্ষমা করে দাও; হে আল্লাহ! এর তাওবা কবুল কর; হে আল্লাহ! এর প্রতি তুমি দয়া প্রদর্শন কর। (বুখারি ও মুসলিম)
সুতরাং মসজিদে জামাতের গুরুত্ব আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মালিককে বুঝয়ে চেষ্টা করবেন মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে। এব্যাপারে আপনাদের দায়িত্ব সচেতনতা, সময়ানুবর্তিতা ও কর্মনিষ্ঠা অনেক বড় সহায়কের ভূমিকা রাখতে পারে। কাজেই ওপরোক্ত বিষয়গুলোও খেয়াল রাখবেন।
(২) আর মসজিদ যদি কাছে হয় তাহলে একমাত্র জুমার নামাজ ছাড়া কোনো নামাজেই ৩০ মিনিট সময়ের প্রয়োজন হয় না। আমার হিসেবে আসর ও মাগরিবে ১০ মিটিন করে ২০ মিনিট । আর ইশায় সর্বোচ্চ ২০ মিনিট। এভাবে সময় হিসেব করে গেলে রোগীর চাপ খুব বেশি হবে বলে মনে হয় না। তবে আমাদের চেয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা বেশী।
(৩) উপরোক্ত পদ্ধতি অবলম্বন করেও যদি মসজিদে গমন সহজ না হয় তাহলে আপনার নির্দিষ্ট নামাজঘরেই জামাতের সাথে নামাজ আদায় করতে থাকুন। তবে সেক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ইমাম যেন বিশুদ্ধ তেলাওয়াতকারী হয় । এভাবে পড়তে থাকলে ইনশাআল্লাহ আপনার জামাতের সাওয়াব পেয়ে যাবেন।
(৪) একান্ত যখন জামাতে নামাজ আদায় সম্ভব না হবে তখন একা একা পড়লেও নামাজ আদায় হয়ে যাবে । তবে খেয়াল রাখতে হবে কাজের চাপের অযুহাতে যেন নামাজ ছুটে কিংবা কাজা হয়ে না যায়।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন