আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৯৮০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ১. অনেকে বলে থাকেন, জুমার নামায চার রাকাত। চার রাকাত থেকে দুই রাকাত করা হয়েছে। দুই রাকাত এর পরিবর্তে দুই খুতবাহ এবং বাকি দুই রাকাত হচ্ছে নামায। ২. জুমার আরবী খুতবাহ পাঠ করা অবস্থায় হাত নাড়াচাড়া করা যাবে কি না? উভয় প্রশ্নের জবাব প্রমাণসহ জানালে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।,

২৯ অক্টোবর, ২০২০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


জুমার নামায আসলে দুই রাকাতই। চার রাকাত থেকে দুই রাকাত করা হয়েছে -এ ধারণা ঠিক নয়। ওমর রা. থেকে বর্ণিত-

صَلاةُ السّفَرِ رَكْعَتَانِ، وَصَلاةُ الْأَضْحَى رَكْعَتَانِ، وَصَلاةُ الْفِطْرِ رَكْعَتَانِ، وَصَلاةُ الْجُمُعَةِ رَكْعَتَانِ، تَمَامٌ غَيْرُ قَصْرٍ، عَلَى لِسَانِ مُحَمّدٍ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ.

সফরের নামায দুই রাকাত। ঈদুল আযহার নামায দুই রাকাত। ঈদুল ফিতরের নামায দুই রাকাত। জুমার নামায দুই রাকাত। (এগুলো) পূর্ণ নামায, কসর নয়। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যবানে এভাবেই বর্ণিত হয়েছে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২৫৭, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ১০৬)

আর খুতবা জুমার নামায সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত। খুতবা ছাড়া জুমার নামায সহীহ হয় না। কিন্তু এটি নামাযের অংশ নয়।

অবশ্য জুমার নামায দুই রাকাত হওয়ার বাহ্যিক একটি হেকমত হল, এর পূর্বে যেহেতু দুই খুতবা আছে তাই সহজিকরণ ও অন্যান্য হেকমতের ভিত্তিতে প্রথম থেকেই দুই রাকাতের বিধান দেওয়া হয়েছে। এই হেকমতটি বর্ণনা করতে গিয়েই সালাফের কেউ কেউ বলেছেন যে, إِنّمَا جُعِلَتِ الْخُطْبَةُ مَكَانَ الرّكْعَتَيْن  (খুতবা হল দুই রাকাতের স্থলাভিষিক্ত)। যদিও এই বক্তব্যটির মুত্তাসিল ও সহীহ কোনো সনদ নেই।

قال الراقم: وأما ما ورد برقم ৫৩৭৪ من المصنف لابن أبي شيبة: كَانَتِ الْجُمُعَةُ أَرْبَعًا، فَجُعِلَتْ رَكْعَتَيْنِ مِنْ أَجْلِ الْخُطْبَةِ، فَمَنْ فَاتَتْهُ الْخُطْبَةُ فَلْيُصَلِّ أَرْبَعًا، فهو مخالف للحديث الصحيح المرفوع، إضافة إلى ذلك أن إسناده منقطع. والله تعالى أعلم.

-আলমাবসূত, সারাখসী ২/২৪; আলমুহীতুল বুরহানী ২/৪৫০; বাদায়েউস সানায়ে ১/৫৮৯; শরহুল মুনয়া পৃ. ৫৫৫

২. জুমার খুতবায় সাধারণ বয়ান-বক্তৃতার মতো হাত নাড়া চাড়া করা যাবে না।

আরবদের মাঝে সাধারণ বয়ান-বক্তৃতায় দুই হাত নেড়ে কথা বলার রীতি থাকা সত্ত্বেও খোলাফায়ে রাশেদীন, তাবেঈন ও তাবেতাবেঈগণ জুমার খুতবায় এমনটি করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং দুই হাত স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে খুতবা দেয়াই সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি। তবে কখনো কোনো কিছু বোঝানোর স্বার্থে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করেছেন এমন বর্ণনা হাদীস শরীফে বিদ্যমান রয়েছে।

হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ إِذَا خَطَبَ احْمَرّتْ عَيْنَاهُ، وَعَلَا صَوْتُهُ، وَاشْتَدّ غَضَبُهُ، حَتّى كَأَنّهُ مُنْذِرُ جَيْشٍ يَقُولُ: صَبّحَكُمْ وَمَسّاكُمْ، وَيَقُولُ: بُعِثْتُ أَنَا وَالسّاعَةُ كَهَاتَيْنِ، وَيَقْرُنُ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ السّبّابَةِ، وَالْوُسْطَى.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খুতবা দিতেন তাঁর চোখ দুটো লাল হয়ে যেত, তাঁর আওয়াজ উঁচু হয়ে যেত এবং তার ক্রোধ তীব্র হয়ে যেত, মনে হত তিনি কোনো সৈন্যবাহিনীকে সতর্ক করছেন। ... এবং বলতেন, আমার প্রেরণ এবং কেয়ামত এই দুটির মতো (নিকটবর্তী)। এরপর তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলদ্বয়কে একত্র করে দেখালেন। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৬৭)

খুতবার সময় হাত উঠানোর ব্যাপারে এতটুকুই পাওয়া যায়। সুতরাং খুতবা অবস্থায় হাত নাড়া চাড়া করা ঠিক নয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮৭৪; কিতাবুল উম্ম ১/২৩০; বাযলুল মাজহুদ ৬/১০৬; ফতহুল মুলহিল ২/৪১৪; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৩/১৮০


والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মাসিক আলকাউসার

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১৪০৭৮

আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম,আমি এক মাস ধরে ভ্রমণ করতেছি কিভাবে নামাজ পড়বো

২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

Sao Paulo, Brazil

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,

১১৪৩৯

সফর এবং প্রবাস


৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

Uttar Pradesh ২১০৩৪১

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy