আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৯৬৪০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, শায়েখ,অামার বয়স ২২ বছর।অামার অল্পতেই অনেক রাগ উঠে যায়।তখন অনেক উল্টা পাল্টা অাচরন করি।অনেক সময় অনেক কিছু ভেঙ্গে ফেলি।অামি চাচ্ছি অামার বিয়ের পূর্বেই নিজের রাগকে একদম শূন্যের কোঠায় নিয়ে অাসতে।যাতে করে অামার স্ত্রীর কোন অসুবিধা না হয়।বা রাগের মাথায় কোন দূর্ঘটনা না ঘটে।এমন কি অামল অাছে যেটা করলে অামার রাগ একদম পানি হয়ে যাবে? অগ্রিম ধন্যবাদ জনাব।,

২৩ অক্টোবর, ২০২১

চট্টগ্রাম

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم






রাগ থেকে মুক্ত থাকার আমল :

শয়তানের শত্রুতা হতে নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ তাআলা তাঁরই নিকট আশ্রয় চাইতে বলেছেন। কারণ শয়তান মানুষের বিনাশ ও ধ্বংসের মধ্যে আনন্দ পায়। শয়তানের যাবতীয় কুমন্ত্রণায় মানুষ সর্বপ্রকার অন্যায়ে লিপ্ত হয়। প্রচণ্ড রাগ বা ক্রোধ তার একটি। প্রচণ্ড রাগ বা ক্রোধের সময় করণীয় সম্পর্কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে উত্তম আমল রয়েছে।
মুসলিম বাংলার পাঠকের জন্য তা তুলে ধরা হলো-

০১. আমলটি হচ্ছে-

اَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشّيْطَانِ الرَّجِيْمِ

উচ্চারণ : আউজুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজীম।
অর্থ : ‘আমি অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।’
—বুখারি, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ

মুসনাদে আবি ইয়ালার মধ্যে উল্লেখ হয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সামনে দুটি লোকের ঝগড়া বেধে যায়। রাগে একজনের নাসারন্দ্র ফুলে ওঠে। তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘যদি লোকটি এই কালিমা পড়ে তবে তার রাগ এখনই ঠাণ্ডা এবং স্তিমিত হয়ে যাবে।

অহেতুক রাগ আসে শয়তানের পক্ষ থেকে। রাগ হল আগুণের প্রতিচ্ছবি। আগুণ যেমন বস্তুসমূহ পুড়িয়ে ফেলে তেমনি রাগ মানুষের মনুষত্ব ধ্বংস করে দেয়।

রাগের কারণেই পরিবার ও সমাজে অধিকাংশ সময় অশান্তির আগুন জ্বলে উঠে। সংসার ভেঙ্গে যায়। পরিবার পরিবারে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। পরিবার, সমাজ ধ্বংস হয়।

এ কারণে অহেতুক রাগ পরিহার করা আবশ্যক।

এক্ষেত্রে হাদীসে নির্দেশনা এসেছে। যদি রাগ উঠে, তাহলে দাঁড়ানো থাকলে বসে পড়বে। ইনশাআল্লাহ রাগের মাত্রা কমে আসবে।

যদি বসে পড়ার পরও রাগ না যায়, তাহলে শুয়ে পড়বে। এবার আর রাগ থাকার কথা নয়।

যদি শুয়ে পড়ার পরও রাগ না কমে, তাহলে অজু বা গোসল করে ফেলবে।

ইনশাআল্লাহ এতে রাগ থাকবে না।

হাদীসে বর্ণিত উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন। সেই সাথে “অহেতুক রাগ করা শয়তানের কাজ” এ বিষয়টি মাথায় রাখুন। ইনশাআল্লাহ রাগের বদভ্যাস ধীরে ধীরে কমে আসবে।

হযরত আবু যর গিফারী রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَقَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَنَا: “إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ وَهُوَ قَائِمٌ فَلْيَجْلِسْ، فَإِنْ ذَهَبَ عَنْهُ الْغَضَبُ وَإِلَّا فَلْيَضْطَجِعْ “

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইরশাদ করেছেন, যদি তোমাদের কেউ দাঁড়ানো অবস্থায় রাগাম্বিত হও, তাহলে বসে পড়ো। যদি এতে রাগ চলে যায়, তাহলেতো ভাল, নতুবা শুয়ে পড়। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২১৩৪৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৭৮২]

حَدَّثَنَا أَبُو وَائِلٍ الْقَاصُّ، قَالَ: دَخَلْنَا عَلَى عُرْوَةَ بْنِ مُحَمَّدٍ السَّعْدِيِّ، فَكَلَّمَهُ رَجُلٌ فَأَغْضَبَهُ، فَقَامَ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ رَجَعَ وَقَدْ تَوَضَّأَ، فَقَالَ: حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي عَطِيَّةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ الْغَضَبَ مِنَ الشَّيْطَانِ، وَإِنَّ الشَّيْطَانَ خُلِقَ مِنَ النَّارِ، وَإِنَّمَا تُطْفَأُ النَّارُ بِالْمَاءِ، فَإِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَتَوَضَّأْ»

আবূ ওয়াইল আল-কাস (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা উরওয়াহ ইবনু মুহাম্মাদ আস সা‘দির নিটক গেলাম। তখন এক ব্যক্তি তার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে তাকে রাগিয়ে দিলো। অতএব তিনি দাঁড়ালেন এবং উযু করলেন। অতঃপর বললেন, আমার পিতা আমার দাদা আতিয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রাগ হচ্ছে শয়তানী প্রভাবের ফল। শয়তানকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর আগুন পানি দিয়ে নিভানো যায়। অতএব তোমাদের কারো রাগ হলে সে যেন উযু করে নেয়।
—সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪৭৮৪

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৪৫৬৩০

হরতাল-অবরোধ:ইসলামী দৃষ্টিকোণ


১৩ নভেম্বর, ২০২৩

ঢাকা ১২১৭

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

২৪৪৬৭

আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসা


১ নভেম্বর, ২০২২

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন

২৪২৩৪

পীরের মুরিদ হওয়া কি ফরজ?


১৫ নভেম্বর, ২০২২

Chattogram

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

১৬৭৩৫

নজর হেফাজত


১৭ নভেম্বর, ২০২৪

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy