আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

মেয়েদের সংসার ভাঙ্গার পেছনে অন্যতম দায়ী কিছু ‘মা’

প্রশ্নঃ ৯৩৮৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, মুহতারাম,আমার খুবই জরুরি প্রশ্ন .আমার বিয়ে হয়েছে যে আজ 1মাস,5লক্ষ টাকা দেনমোহর এ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের পর আমার ভালোই সময় পার হচ্ছিল,কিন্তু এখন খুবই সমস্যা হচ্ছে, আমার শাশুড়ির কারনে। তিনি সবসময় হাদিস কুরআন ছাড়া কথাই বলে না কিন্তু নিজে মানে না আর কি । তিনি চান আমার টাকা-পয়সা সব আমার হাতে থাকুক এবং আমি সবসময় আমার শশুড় বাড়ির জন্য ব্যায় করি। গত দু-একদিন আগে যখন আমার শাশুড়ি বলে মেয়ে কে বেড়াতে দেয়ার জন্য আমি তখন যাই এবং তাকে কে রেখে আসি বেড়ানোর জন্য।এখন আমার শাশুড়ির ছায় বিয়ে টা ভেঙে যাক।আমাদের 2 বছর কথা বার্তার পর বিয়ে টা হয়, কারন আমি দেশের বাইরে ছিলাম। উভয় পক্ষের কথা বার্তার মাধ্যমে সব কিছু হয়। সকল মা তো ছায় তার মেয়ে সুখে থাকুক,কিন্তু তিনি অন্যরকম। লোভী টাইপের আর কি। মেয়ে কে বলে,এখনো সময় আছে তুই সংসার করবি না কি ছাইড়া দিবি। মেয়ের বয়স কম 17 বছর।ওকে ওর মা যে ভাবে বুঝাইতেছে সে ঐ ভাবেই বুঝতেছে।মেয়ে মায়ের কাছে যাওয়ার পর পুরাই পরিবর্তন।মা এর সাথে এক মত। ʼপ্রিয় শ্রদ্ধেয় হুজুরʼ এখন ইসলামী শরিয়ত এর মাধ্যমে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায় একটু জানাবেন।অপেক্ষায় রইলাম ...

৫ নভেম্বর, ২০২৩
চৌদ্দগ্রাম

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


মাঝপথে ভেঙে দেয়ার জন্য ইসলামে বিবাহের বিধান করা হয়নি। স্বামী-স্ত্রী আল্লাহর হুকুম মেনে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করলে পরকালে আল্লাহ তাআলা এই জুটিকে জান্নাতে দুনিয়ার বিবাহের উপরেই প্রতিষ্ঠিত রাখবেন। পাত্র-পাত্রী উপযুক্ত হলে তাদের দাম্পত্য জীবন কীভাবে গোছাবে, কীভাবে সাজাবে, সেটি তাদের উপরেই ছেড়ে দেয়া উচিত। মা-বাবা এখানে অতিরিক্ত নাক গলানো উচিত নয়। অবশ্য সুস্পষ্ট কোনো ভুল পদক্ষেপ নিতে থাকলে সে ক্ষেত্রে মা-বাবা সতর্ক করে দেবেন।

খুবই পরিতাপের বিষয়, আমাদের এই দেশে দাম্পত্য কলহের অনেকগুলো কারণের মধ্যে এটি অন্যতম যে, মেয়ের মা তার মেয়ের সংসারে নাক গলায়। আর স্বভাবতই মেয়েরা এসব ক্ষেত্রে মায়ের পক্ষ নিয়ে থাকে।
আপনি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাহ আদায়ের জন্য বিবাহ করে থাকেন, তাহলে আপনার স্ত্রীকে আপনার কাছে নিয়ে আসুন। নিজেদের মধ্যে আদর-সোহাগ ও মহব্বত গড়ে তুলুন। নিজেদের দাম্পত্য জীবন নিজেদের মতো করে সাজিয়ে তুলুন।
শ্বশুর-শাশুড়ির শ্রদ্ধাবোধ দিলে রাখবেন। তাদের কথাগুলোকে মর্যাদা দিয়ে মানার চেষ্টা করবেন। তবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ সুকৌশলে এড়িয়ে যাবেন।

(আমি আপনার শাশুড়ির ব্যাপারে বলছি না) তবে অনেক দুষ্ট মহিলারা নিজের মেয়ের জামাইকে হাতের মুঠে রাখার জন্য বিভিন্ন রকম ব্ল্যাক ম্যাজিক তথা জাদু করে থাকে। এমন কোন অবৈধ হস্তক্ষেপ যেন আপনাকে না করতে পারে,, এ জন্য নিয়মিত আমল করুন: যাবতীয় মানুষ ও জিন শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য আমল:

পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর
দুরুদ শরীফ তিনবার
সুরাতুল ফাতিহা তিনবার
আয়াতুল কুরসী তিনবার
সূরা ফালাক্ব তিনবার
সূরা না-স তিনবার
দুরুদ শরীফ তিনবার পড়ে দুই হাতের তালুতে ফু দিয়ে প্রথমে চেহারা, মাথা, শরীরের সামনের অংশ, এরপর যথাসম্ভব পুরো শরীর মাসাহ করে দিবেন।
রাতে ঘুমানোর সময় এই আমলটি আরেকবার করবেন।
কোনো ওয়াক্তে আমল করতে ভুলে গেলে স্মরণ আসা মাত্রই আমল করে নেবেন।

ফজর ও মাগরিবের সলাতের পর তিনবার তিনবার পড়বেন:
بِسمِ الله الّذي لا يضر مع اسمه شيء في الارض ولا في السماء وهو السميع العليم.
বিসমিল্লাহিল্লাযী লা-ইয়াদুররু মা'আসমিহী শাইউন ফিল আরদি ওয়া লা-ফিস সামা- ওয়া হুয়াস সামীউল 'আলীম।

স্ত্রী-সন্তান ও পরিবার নেককার হওয়ার জন্য দোয়া:
رَبَّنَا ہَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّاجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا
হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আমাদের স্ত্রী ও সন্তানদের পক্ষ হতে দান কর নয়নপ্রীতি এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানাও।
—আল ফুরকান - ৭৪

সকল নামাজের শেষ বৈঠকে দোয়া মাসুরার পর পড়ুন, অথবা সালাম ফিরানোর পর ইস্তিগফার ইত্যাদি পড়ে এই দোয়া পড়ুন।

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন