আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

স্ত্রীর মোবাইল খরচ কে দিবে?

প্রশ্নঃ ৯৩০৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বাবা বড়লোক হওয়ায় স্বামী আমার কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস আনতে বললেই বাবার কাছ থেকে নিতে বলে।এমনকি চিকিৎসা খরচ ও দিতে বলে বাবা কে।কোনো কিছুর দরকার হলে তাকে অনেক জোর করতে হয়।ধরেন ফোন এর টাকার জন্যও আমার যুদ্ধ করতে হয়।বিয়ের পর আমার বাবার কাছ থেকে টাকা চাইতে লজ্জা লাগে।তাদের কাছে চাইলে তারা আমাকে খুশি মনে দিবে।তার টাকা আছে।সে শুধু আমার ক্ষেত্রে এমন করে।আমাকে এটাও বলছে যে তিন বেলা খেতে দিচ্ছে আর থাকতে দিচ্ছে এটাই আমার ভরনপোষন।এর বেশি আর কোনো খরচ থাকতে পারে না।বাবা মা ভাই বোন কিছু চাইলে কোনো কিছু না জিজ্ঞেস করেই টাকা দেয়।আমার প্রশ্ন আমার স্বামী আমার হক আদায় করতে পারতেছে ? ইসলামের দৃষ্টিতে আমার সাথে কি ইনসাফ হচ্ছে?

১০ আগস্ট, ২০২৪
ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


বিবাহের পর প্রথম সন্তান আসার আগ পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিপূর্ণ মহব্বতের সম্পর্ক অনেকের ক্ষেত্রে হয়ে ওঠে না। অবশ্য ব্যতিক্রমও আছে।
আপনি আপনার স্বামীর সঙ্গে ভালোবাসাপূর্ণ সু-সম্পর্ক স্থাপন করুন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুটা খুনসুটি হতেই পারে। সেগুলো পারস্পরিক বোঝা পড়ার মাধ্যমে কাটিয়ে নিন।

একজন সতী সাধ্বী স্ত্রী যে তার স্বামীর প্রয়োজনে নিজেকে উপস্থাপন করতে কুণ্ঠাবোধ করে না, এমন স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে তার মৌলিক প্রয়োজনগুলো প্রাপ্য হবে। যা আল্লাহ তায়ালা স্বামীর উপর ফরয করেছেন। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে। এর পাশাপাশি রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা। অবশ্য ব্যয়বহুল চিকিৎসা খরচ দিতে স্বামী বাধ্য নয়।
ফুক্বাহায়ে কেরাম লিখেছেন, যে স্ত্রী ছোটবেলা থেকে এভাবে গড়ে উঠেছে যে, তার ব্যক্তিগত সেবিকা ছিল। সে স্বামীর বাড়িতে আসার সময় তার ঐ ব্যক্তিগত সেবিকা নিয়ে আসলে সেবিকার ব্যয় ভারও স্বামীর উপর বর্তাবে।

বর্তমানে নিজের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কথোপকথনের জন্য মোবাইল মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে। তাই মোবাইলে কথা বলার বিল সহনীয় পর্যায়ে হলে স্বামী তা দিতে বাধ্য।

অবশ্য স্ত্রীর অতিরিক্ত শপিং চাহিদা, ফুটানি দেখানো, সীমাহীন রূপচর্চা, মোবাইলের ডাটা ব্যবহারের জন্য অতিরিক্ত টাকা পয়সা এগুলো দিতে স্বামী বাধ্য নয়।

أَنْوَاعُ النَّفَقَةِ:
10 - ذَهَبَ الْفُقَهَاءُ إِلَى أَنَّ النَّفَقَةَ الْوَاجِبَةَ لِلزَّوْجَةِ عَلَى زَوْجِهَا تَشْمَل الطَّعَامَ وَالْكُسْوَةَ وَالْمَسْكَنَ، وَكُل مَا لاَ غِنَى لَهَا عَنْهُ، وَنَفَقَةُ الطَّعَامِ هِيَ مِمَّا جَرَتْ بِهِ عَادَةُ كُل بَلَدٍ مِنَ الْخُبْزِ وَالسَّمْنِ أَوِ الزَّيْتِ وَالتَّمْرِ وَالأُْرْزِ وَاللَّبَنِ وَاللَّحْمِ وَنَحْوِ ذَلِكَ.
وَالْقَدْرُ الْوَاجِبُ مِنْ ذَلِكَ هُوَ مَا فَصَّلَتْهُ مَذَاهِبُ الْفُقَهَاءِ، وَالْمُعْتَمَدُ هُوَ مَا أَوْرَدُوهُ فِي حَالاَتِ تَقْدِيرِ النَّفَقَةِ الَّذِي سَبَقَ تَفْصِيلُهُ.
وَاتَّفَقَ الْفُقَهَاءُ عَلَى وُجُوبِ الْكُسْوَةِ لِلزَّوْجَةِ عَلَى النَّحْوِ الْمُفَصَّل فِي مُصْطَلَحِ (كُسْوَةٌ ف 2 وَمَا بَعْدَهَا) ، كَمَا اتَّفَقُوا عَلَى وُجُوبِ سُكْنَاهَا وَتَفْصِيلُهُ فِي مُصْطَلَحِ (سُكْنَى ف 4 وَمَا بَعْدَهَا) .
11 - وَلَيْسَ أَمْرُ النَّفَقَةِ قَاصِرًا عَلَى الأَْنْوَاعِ الْمَذْكُورَةِ فَقَطْ، بَل يَرَى بَعْضُ الْفُقَهَاءِ وُجُوبَ مَا تَحْتَاجُ إِلَيْهِ مِنْ دَوَاءٍ وَأُجْرَةِ خَادِمٍ يَقُومُ عَلَى شُؤُونِ مِثْلِهَا عَادَةً وَثَمَنِ طِيبٍ وَآلاَتِ تَنْظِيفٍ وَكُل مَا هِيَ فِي حَاجَةٍ إِلَيْهِ مِمَّا سَيَرِدُ تَفْصِيلُهُ فِيمَا يَلِي:

—আল মাওসূআ আল ফিকহিয়্যাহ

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন