আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৮৯০৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম,অসাম্প্রদায়িকতা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ইসলামের আলোকে কতটা যুক্তিযুক্ত?,

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

নড়াইল

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم






ধর্মনিরপেক্ষতা ইংরেজিতে একে secularism, আরবিতে علماني এবং বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বলা হয়।

ইংরেজি অভিধানে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ শব্দের নিম্নরূপ অর্থ এসেছে:
১. পার্থিববাদী অথবা বস্তুবাদী।
২. ধর্মভিত্তিক আধ্যাত্বিক নয় এমন।
৩. দুনিয়া বিরাগী নয় সংসার বিরাগী নয়।

একই অভিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞায় এসেছে, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এমন একটি দর্শন, যা চরিত্র, নীতি, নৈতিকতা ও শিক্ষা প্রভৃতি ধর্মীয় অনুশাসনের উপর প্রতিষ্ঠিত না হয়ে ধর্মহীনতার উপর গড়ে উঠবে।

Encyclopaedia Britannica-তে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ সম্পর্কে বলা হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ একটি সামাজিক আন্দোলন, যার লক্ষ্য হলো, মানুষদের আখিরাত থেকে ফিরিয়ে এনে দুনিয়ামুখী করা।

Encyclopaedia Britannica-তে ধর্মনিরপেক্ষতার আলোচনার অধীনে إلحاد তথা নাস্তিকতার আলোচনা এসেছে। তাতে নাস্তিকতাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. তাত্ত্বিক নাস্তিকতা। إلحاد نظري
২. ব্যবহারিক নাস্তিকতা। إلحاد عملي

উক্ত বর্ণনা দুটি বিষয়কে স্পষ্ট করে:

প্রথমতঃ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ একটি কুফরি মতবাদ। যার লক্ষ্য হলো দুনিয়াকে দ্বীনি প্রভাব থেকে মুক্ত করা। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল কাজ হচ্ছে, পার্থিব জগতের সকল বিষয়কে দ্বীনি বিধি-নিষেধ থেকে দূরে রেখে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও চারিত্রিকসহ সকল ক্ষেত্রে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা।

দ্বিতীয়তঃ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের সাথে জ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই। যেমন কতক কুচক্রী মানুষদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলার জন্য বলে, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের উদ্দেশ্য হলো, "পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের উপর উৎসাহিত করা ও তার প্রতি গুরুত্বারোপ করা।"
এ দাবির অসারতা উল্লিখিত অর্থ থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে।

তাই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ সম্পর্কে যদি বলা হয়, এটি হলো ধর্মহীনতা। তাহলেই কেবল তার প্রকৃত অর্থ ও সঠিক ব্যাখ্যা প্রকাশ পাবে।

সারকথা:
নিঃসন্দেহে উভয় প্রকার ধর্মনিরপেক্ষতাই সুস্পষ্ট কুফরী। যদি কেউ উল্লেখিত কোন প্রকার ধর্মনিরপেক্ষতাকে মনেপ্রাণে মেনে নেয়, তবে সে ইসলাম থেকে বহিস্কৃত ও মুরতাদ হয়ে যাবে।

কুরআন বলছেঃ একমাত্র আল্লাহর হুকুম চলবে।

قُلۡ اِنِّیۡ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَکَذَّبۡتُمۡ بِہٖ ؕ مَا عِنۡدِیۡ مَا تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ بِہٖ ؕ اِنِ الۡحُکۡمُ اِلَّا لِلّٰہِ ؕ یَقُصُّ الۡحَقَّ وَہُوَ خَیۡرُ الۡفٰصِلِیۡنَ

বল, আমি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে এক স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত আছি, অথচ তোমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছ। তোমরা যা তাড়াতাড়ি চাচ্ছ, তা আমার কাছে নেই। হুকুম আল্লাহ ছাড়া আর কারও চলে না। তিনি সত্য বর্ণনা করেন এবং তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ ফায়সালাকারী।
—আল আনআম - ৫৭

কুরআন বলছেঃ ইসলামই আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন :

اِنَّ الدِّیۡنَ عِنۡدَ اللّٰہِ الۡاِسۡلَامُ ۟ وَمَا اخۡتَلَفَ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ مَا جَآءَہُمُ الۡعِلۡمُ بَغۡیًۢا بَیۡنَہُمۡ ؕ وَمَنۡ یَّکۡفُرۡ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ فَاِنَّ اللّٰہَ سَرِیۡعُ الۡحِسَابِ

নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট (গ্রহণযোগ্য) দ্বীন কেবল ইসলামই। যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তারা তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর কেবল পারস্পরিক বিদ্বেষবশত ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছে। আর যে-কেউ আল্লাহর আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করবে (তার স্মরণ রাখা উচিত যে, ) আল্লাহ অতি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
—আল ইমরান - ১৯

ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম বা মতাদর্শ আল্লাহ তাআলার কাছে কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই সম্পর্কে কুরআনের ঘোষণা:

وَمَنۡ یَّبۡتَغِ غَیۡرَ الۡاِسۡلَامِ دِیۡنًا فَلَنۡ یُّقۡبَلَ مِنۡہُ ۚ وَہُوَ فِی الۡاٰخِرَۃِ مِنَ الۡخٰسِرِیۡنَ

যে ব্যক্তিই ইসলাম ছাড়া অন্য কোনও দ্বীন অবলম্বন করতে চাবে, তার থেকে সে দ্বীন কবুল করা হবে না এবং আখিরাতে যারা মহা ক্ষতিগ্রস্ত সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
—আল ইমরান - ৮৫

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সর্বপ্রকার কুফরি মতবাদ থেকে হেফাজত করুন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৬৭৭১

নির্বাচন ও ভোটের শরঈ বিধান


১৯ ডিসেম্বর, ২০২২

বনপাড়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৩৩৪১

কুরআন খতমের মান্নত করা


২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

ঢাকা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy