আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৮৮০৫. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ ইয়া নবি সালামু আলাইকা এইটা বলা বিদআত হবে?,

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم






মূলত উক্ত বাক্যগুলো রাসূল সাঃ কে হাজির নাজিরের বিশ্বাস না করে এমনিতে বলা জায়েজ আছে। বলাতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু বর্তমানে এ পদ্ধতিতে একথাগুলো বলাকে আবশ্যকীয় মনে করার কারণে এভাবে দরূদ বলা বিদআতে পরিণত হয়ে গেছে। তাই এভাবে বলা থেকে বিরত থাকবে।

আর যদি এ দরূদ রাসুল সাঃ কে হাজির নাজির বিশ্বাস করে বলে, তাহলে এটি শিরক। যে হাজির নাজিরের বিশ্বাসের সাথে একথাগুলো বলবে, সে মুশরিক হয়ে যাবে।

বিস্তারিত বর্ণনাঃ

রাসূল সাঃ এর রওজা পাকের সামনে দাঁড়িয়ে “আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ বা ইয়া মুহাম্মদ সাঃ” শব্দে দরূদ পড়া সম্পূর্ণ জায়েজ। এতে কোন সমস্যা নেই। কারণ রাসূল সাঃ কবরে জীবিত আছেন। তাই রওজার সামনে দাঁড়িয়ে সরাসরি সম্বোধনসূচক উক্ত দরূদ পড়াতে কোন সমস্যা নেই।

যেমন আমরা সাধরণ কবরবাসীকে সরাসরি সম্বোধন করে বলি “আসসালামু আলাইকা ইয়া আহলাল কুবুর”। সাধারণ কবরবাসীকে যদি সরাসরি সালাম দেয়ার যায়, তাহলে রাসূল সাঃ কে কেন তার রওজার সামনে সরাসরি সালাম দেয়া যাবে না?

কিন্তু রওজার সামনে না থেকে দূরে অবস্থান করাকালে, যেমন বাংলাদেশে থেকে এভাবে দরূদ পড়ার দুই সূরত। যথা-

১-এ আকিদায় দরূদ পড়া যে, রাসূল সাঃ সর্বত্র হাজির নাজির। তিনি সব কিছু দেখেন। সব কিছু শুনেন।

২- রাসূল সাঃ মদীনায় রওজায় শুয়ে আছেন। বাকি আমার এ সালাম ফেরেশতারা নবীজী সাঃ এর কাছে পৌঁছে দিবে।

উক্ত দুই সূরতের প্রথম সূরতে উক্ত দরূদ পড়া বিদআত ও শিরক। এতে কোন সন্দেহ নেই।

বাকি দ্বিতীয় সূরতে পড়া জায়েজ আছে। তবে এভাবে সম্বোধনসূচক দরূদ না পড়ে আম দরূদ পড়াই শ্রেয়।

عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، قَالَ: ” مِنَ السُّنَّةِ أَنْ تَأْتِيَ قَبْرَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ قِبَلِ الْقِبْلَةِ، وَتَجْعَلَ ظَهْرَكَ إِلَى الْقِبْلَةِ، وَتَسْتَقْبِلَ الْقَبْرَ لِوَجْهِكَ، ثُمَّ تَقُولَ: السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ

হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুন্নাহ হল, কিবলা দিক থেকে রাসূল সাঃ এর কবরের কাছে আসবে। পিঠ থাকবে কিবলার দিকে। চেহারাকে কবরের অভিমূখী করবে, তারপর বলবে “আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যূ ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু। {মুসনাদে আবী হানীফা, হাদীস নং-৩৭}

إِنَّ اللَّهَ عَالِمُ غَيْبِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ إِنَّهُ عَلِيمٌ بِذَاتِ الصُّدُورِ [٣٥:٣٨

আল্লাহ আসমান ও যমীনের অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি অন্তরের বিষয় সম্পর্কেও সবিশেষ অবহিত। {সূরা ফাতির-৩৭}

وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا هُوَ ۚ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ ۚ وَمَا تَسْقُطُ مِن وَرَقَةٍ إِلَّا يَعْلَمُهَا وَلَا حَبَّةٍ فِي ظُلُمَاتِ الْأَرْضِ وَلَا رَطْبٍ وَلَا يَابِسٍ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ [٦:٥٩

তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে, তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না; কিন্তু তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না; কিন্তু তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে। {সূরা নিসা-৫৯}

عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” مَنْ صَلَّى عَلَيَّ عِنْدَ قَبْرِي سَمِعْتُهُ، وَمَنْ صَلَّى عَلَيَّ نَائِيًا أَبْلَغْتُهُ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার কবরের পাশে এসে সালাম দেয়, তার সালাম আমি শুনি। আর যদি দূর থেকে সালাম দেয়, তাহলে তা আমার কাছে পৌঁছানো হয়। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-১৪৮১}

قَالَ عَبْدُ اللهِ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ لِلَّهِ فِي الْأَرْضِ مَلَائِكَةً سَيَّاحِينَ، يُبَلِّغُونِي مِنْ أُمَّتِي السَّلَامَ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয় ভূপৃষ্ঠে ফেরেশতাগণ ভ্রমণ করছে, যারা আমার উম্মতের পক্ষ থেকে সালাম আমার কাছে পৌঁছে দেয়। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৬৬৬}

والله اعلم بالصواب

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৬১৩৪১

রাসুলুল্লাহ সা. কবে থেকে নবী?


১৯ মে, ২০২৪

ঢাকা ১২০৮

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮৫৯৭৬

স্ত্রীর সাথে কথা বন্ধ রাখা


২২ জানুয়ারী, ২০২৫

১৭০২

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আবু সাঈদ

৪৬৫৮৩

জুমার নামাজের হুকুম


২২ নভেম্বর, ২০২৩

ঢাকা ১২১৭

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

৫২৯০৬

ছেলের শাশুড়িকে বিয়ে করার বিধান


২৪ জানুয়ারী, ২০২৪

ঢাকা ১২০৫

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy