আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ইস্তেখারার পরিচয়, পদ্ধতি

প্রশ্নঃ ৮২০১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম , আমি দুটি প্রশ্ন করবো।১ । ইস্তেখারা কি ? কেন করে? কিভাবে করে? করলে কি হয়?২। নাজাত মানে কি ? নাজাতদাতা কে আল্লাহ নাকি তার নবি রাসূল? এ বিষয় নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি ।উত্তর দিলে উপকৃত হবো।,

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


حامدا و مصليا و مسلما .
কোন কাজের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে, অর্থাৎ কাজটি তার জন্য কল্যাণকর কি না সে বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়াকেই ইস্তেখারা বলা হয়।
মানুষ বিভিন্ন সময় একাধিক বিষয়ের মধ্যে কোনটিকে গ্রহণ করবে সে ব্যাপারে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যায়। কারণ, ভবিষ্যতের ভালো-মন্দের জ্ঞান আল্লাহ ব্যতীত আর কারো নেই। তাই সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে কল্যাণ লাভের জন্য আসমান জমীনের সৃষ্টিকর্তার নিকট সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ইস্তেখারা করতে হয় বা সাহায্য প্রার্থনা করতে হয়, যেন তিনি তার সিদ্ধান্তকে এমন জিনিসের উপর স্থীর করে দেন যা সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী জন্য উপকারী হয়।
বিয়ে, চাকুরী, ব্যবসা, সফরসহ ইত্যাদি বৈধ বিষয়ে ইস্তেখারা করা হয় বা করা উত্তম।
ইস্তিখারা করার নিয়ম:
প্রথমত ওযু করে ২ রাকায়াত নফল নামায পড়তে হবে। আতপর নামাযের সালাম ফিরিয়ে আল্লাহ তায়ালার বড়ত্ব ও মর্যাদার কথা মনে জাগ্রত করে একান্ত বিনয় ও নম্রতা সহকারে আল্লাহর প্রশংসা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর দরূদ পেশ করার পর ইস্তেখারার দুয়াটি পাঠ করতে হবে। এবং দোয়াটি পাঠ কালে هَذَا الأَمْرَ শব্দদ্বয় পাঠ করার সময় নিজের উদ্দেশ্যের দিকে খেয়াল করতে হবে।
হাদিস শরীফে আছে-
عن جابر بن عبد الله قال: كان رسول الله يعلمنا الاستخارة في الأمور كما يعلمنا السورة من القرآن، يقول: "إذا هم أحدكم بالأمر فليركع ركعتين من غير الفريضة، ثم ليقل: اللهم إني أستخيرك بعلمك، وأستقدرك بقدرتك، وأسألك من فضلك العظيم؛ فإنك تقدر ولا أقدر، وتعلم ولا أعلم، وأنت علام الغيوب. اللهم إن كنت تعلم أن هذا الأمر خير لي في ديني، ومعاشي، وعاقبة أمري، أو قال: عاجل أمري وآجله؛ فاقدره لي، ويسره لي، ثم بارك لي فيه، وإن كنت تعلم أن هذا الأمر شر لي، في ديني، ومعاشي، وعاقبة أمري، أو قال: في عاجل أمري وآجله؛ فاصرفه عني، واصرفني عنه، واقدر لي الخير حيث كان، ثم أرضني به"
অর্থাৎ- হযরত জাবির ইবনে ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে যেভাবে কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন, ঠিক সেভাবে প্রতিটি কাজে আমাদেরকে ইস্তিখারা (কল্যাণ প্রার্থনা) শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, যখন তোমাদের কেউ কোন কাজের ইচ্ছা করে তখন সে যেন ফরয ছাড়া দুই রাক’আত (নফল ) নামায আদায় করে নেয়, অতঃপর বলে –
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْتَخِيرُكَ بِعِلْمِكَ وَأَسْتَقْدِرُكَ بِقُدْرَتِكَ وَأَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ الْعَظِيمِ، فَإِنَّكَ تَقْدِرُ وَلاَ أَقْدِرُ وَتَعْلَمُ وَلاَ أَعْلَمُ وَأَنْتَ عَلاَّمُ الْغُيُوبِ، اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ خَيْرٌ لِي فِي دِينِي ومعاشِى وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاقْدُرْهُ لِي وَيَسِّرْهُ لِي ثُمَّ بَارِكْ لِي فِيهِ، وَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّ هَذَا الأَمْرَ شَرٌّ لِي فِي دِينِي ومعاشِى وَعَاقِبَةِ أَمْرِي فَاصْرِفْهُ عَنّي وَاصْرِفْنِي عَنْهُ وَاقْدُرْ لِيَ الْخَيْرَ حَيْثُ كَانَ ثُمَّ أَرْضِنِي بِهِ.
অর্থ “হে আল্লাহ! আমি তোমার জ্ঞানের সাহায্য চাইছি, তোমার শক্তির সাহায্য চাইছি এবং তোমার মহান অনুগ্রহ চাইছি। তুমিই শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী, আমার কোন ক্ষমতা নেই। তুমি অফুরন্ত জ্ঞানের অধিকারী, আমার কোন জ্ঞান নেই। তুমি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে জ্ঞাত। হে আল্লাহ! তুমি যদি এ কাজটি আমার জন্য, আমার দ্বীনের দৃষ্টিকোণ হতে, আমার জীবন যাপনের ব্যাপারে এবং আমার কাজের পরিণামের দিক হতে, ভাল মনে কর তবে তা আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দাও এবং আমার জন্য সহজ করে দাও। পক্ষান্তরে তুমি যদি এ কাজটি আমার জন্য আমার দ্বীনের দৃষ্টিকোণ হতে, আমার জীবন যাপনের ব্যাপারে এবং আমার কাজকর্মের পরিণামের দিক হতে ক্ষতিকর মনে কর, তবে তুমি সে কাজটি আমার থেকে দূরে সরিয়ে দাও। এবং আমাকে তা থেকে বিরত রাখ, এবং যেখান থেকে হোক তুমি আমার জন্য কল্যাণ নির্ধারণ করে দাও।
(বোখারী শরীফ-১/৩৪৩ পৃঃ, আবু দাউদ২/৬৪০, ইবনে মাজাহ-১/৪৪০, তিরমিজি- ৪৮০ ইবনু মাজাহ- ১৩৮০, রিয়াদুস সলিহীন-৭২২)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার,মোহাম্মাদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

২৯৮৬৫

ঈসালে সওয়াব - ৭০ কালেমা মুর্দাকে বখশিস করা কি শরীয়ত সম্মত?


২ মার্চ, ২০২৩

Dhaka

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আবু সাঈদ

৩১২৬২

জুমার দিন বয়ান চলাকালীন কাবলাল জুমআ আদায় করা যাবে কি?


১২ এপ্রিল, ২০২৩

ফুলতলা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

২৫১৪৬

দোয়ায়ে কুনুত ভুলে গেলে করণীয়


২৭ নভেম্বর, ২০২২

ঢাকা ১২২৯

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম

৯৮৪১৯

ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা কোন নামাজ পড়া যাবে কিনা?


৮ এপ্রিল, ২০২৫

সিলেট

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy