আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ওয়েস্টার সসযুক্ত খাবার খাওয়া হালাল হবে?

প্রশ্নঃ ৭৬২০০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, চাইনিজ রান্নায় সাধারণত বেশিরভাগ সময় ওয়েস্টার সস ব্যবহার হয়। আমাদের দেশে সব রেস্টুরেন্টের চাইনিজ খাবারগুলোতে ওয়েস্টার সস ব্যবহার করে কিনা সরাসরি নিজ চোখে দেখিনি‌। এক্ষেত্রে বাইরের চাইনিজ ফ্রাইড রাইস, ফ্রাই,সবজি এগুলো খাওয়া জায়েজ হবে কি?,

২৩ অক্টোবর, ২০২৪

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলামী শরীয়ায় কোন জিনিসকে হালাল বা হারাম বলার জন্য সুস্পষ্ট প্রমাণাদী থাকা জরুরী। শুধু ধারণা নির্ভর কোন জিনিসকে হালাল বা হারাম বলা দুস্কর। যেমনটি হাদিসে এসেছে,
عَنْ عَامِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " الْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ، وَبَيْنَهُمَا مُشَبَّهَاتٌ لاَ يَعْلَمُهَا كَثِيرٌ مِنَ النَّاسِ، فَمَنِ اتَّقَى الْمُشَبَّهَاتِ اسْتَبْرَأَ لِدِيِنِهِ وَعِرْضِهِ، وَمَنْ وَقَعَ فِي الشُّبُهَاتِ كَرَاعٍ يَرْعَى حَوْلَ الْحِمَى، يُوشِكُ أَنْ يُوَاقِعَهُ. أَلاَ وَإِنَّ لِكُلِّ مَلِكٍ حِمًى، أَلاَ إِنَّ حِمَى اللَّهِ فِي أَرْضِهِ مَحَارِمُهُ، أَلاَ وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ. أَلاَ وَهِيَ الْقَلْبُ ".
নু’মান ইবনে বশীর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসূল (ﷺ)–কে বলতে শুনেছি যে, হালালও স্পষ্ট এবং হারামও স্পষ্ট। আর এ দুয়ের মাঝে রয়েছে বহু সন্দেহজনক বিষয়– যা অনেকেই জানেনা। যে ব্যক্তি সেই সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বেঁচে থাকবে, সে তার দ্বীন ও মর্যাদা রক্ষা করতে পারবে। আর যে সন্দেহজনক বিষয়সমূহে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তার উদাহরণ সে রাখালের ন্যায়, যে তার পশু বাদশাহর সংরক্ষিত চারণভুমির আশে পাশে চরায়, অচিরেই সেগুলোর সেখানে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। জেনে রাখ যে, প্রত্যেক বাদশাহরই একটি সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে। আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর যমীনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হল তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি গোশতের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সে গোশতের টুকরোটি হল কলব। (সহীহ বুখারী হাদীস নং: ৫০আন্তর্জাতিক নং: ৫২)

প্রিয় প্রশ্নকারী ভাই/বোন! এজাতীয় খাবারের ক্ষেত্রে ফিকহের মূলনীতি হল, فالْأَصْلُ فِي الْأَشْيَاءِ الْإِبَاحَةُ তথা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য যাবতীয় উপকারী বস্তুর ক্ষেত্রে মূলনীতি হল, হালাল। যতক্ষন না সুস্পষ্ট কোন দলীল তার বিপক্ষে পাওয়া যায়। সুতরাং প্রশ্নোক্ত খাবারের মধ্যে যদি ওয়েস্টার সস সংমিশ্রণের সম্ভবনা প্রবল হয়? তাহলে উক্ত খাবার শুধু আপনি না, কোন মুসলিমের জন্য তা খাওয়া বৈধ হবে না। শুধু ধারণা বশত হালাল খাবার পরিহার/হারাম বলার ‍সুযোগ নেই। তবে তাকওয়ার দাবী হচ্ছে সন্দেহযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়া।

(ওয়েসটার সসঃ উকিপিড়িয়ার তথ্য মতে 1870-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে চীনে অয়েস্টার সস উৎপাদন শুরু হয়। ঝিনুক তিনটি লোহার বেসিনে আধা ঘন্টার জন্য সিদ্ধ করা হয়, তারপর রোদে বা মাঝারি আগুনে বেতের উপর শুকানোর জন্য অপসারণ করা হয়। বেসিন থেকে পানি চতুর্থ বেসিনে কমিয়ে "একটি কালো সস" করা হয়েছিল।)

শরয়ী দলীলসমূহঃ
1- قال تعالى: ﴿ هُوَ الَّذِي خَلَقَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ جَمِيعًا ﴾ [البقرة: 29].

2- وقال تعالى: ﴿ قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ اللَّهِ الَّتِي أَخْرَجَ لِعِبَادِهِ وَالطَّيِّبَاتِ مِنَ الرِّزْقِ ﴾ [الأعراف: 32].

3- وقال تعالى: ﴿ قُلْ لَا أَجِدُ فِي مَا أُوحِيَ إِلَيَّ مُحَرَّمًا عَلَى طَاعِمٍ يَطْعَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُونَ مَيْتَةً ﴾ [الأنعام: 145].
فلم يجعل الله التحريم أصلاً، بل جعل الإباحة أصلاً.

4- وقال تعالى: ﴿ قُلْ تَعَالَوْا أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ ﴾ [الأنعام: 151].
بيَّن سبحانه وتعالى ما حرم، فدل ذلك على إباحة ما عداه.
الأشباه للسيوطي: 60، ابن نجيم: 66، الوجيز: 129.


5- عن أبي الدرداء، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ((ما أحل اللهُ في كتابه فهو حلال، وما حرم فهو حرام، وما سكت عنه فهو عافية، فاقبلوا من الله عافيته؛ فإن الله لم يكن نسيًّا))، ثم تلا هذه الآية: ﴿ وَمَا كَانَ رَبُّكَ نَسِيًّا ﴾ [مريم: 64]".
بيهقي: 10/ 12، رقم الحديث: 1900.

6- عن أبي ثعلبة الخُشَني، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ((إن الله - تعالى - فرض فرائض فلا تضيعوها، وحدَّ حدودًا فلا تعتدوها، وحرَّم أشياء فلا تنتهكوها، وسكت عن أشياء من غير نسيان، رحمةً لكم، فلا تبحثوا عنها)).
المطالب العالية بزوائد المسانيد الثمانية (12/ 416).

وبهذه الآثار، علم بأن الأصل هو الإباحة؛ كما هو قول لجماعة من العلماء، أما أصحاب الحديث فيقولون: بأن الأصل هو الحظر؛ كما روى ابن نجيم، وقال بعض الحنفية: الأصل هو التوقف حتى يأتي دليل على إباحته، ولكن الظاهر من قول الحنفية هو الإباحة.
الأشباه والنظائر لابن نجيم: 1/ 57

فى الفتاوى الهندية– أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع (الفتاوى الهندية، كتاب الكراهية، كتاب الكراهية-5/342، رد المحتار-6/247

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
খতীব, রৌশন আলী মুন্সীবাড়ী জামে মসজিদ, ফেনী

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৭৩২৮৯

মসজিদের অপ্রয়োজনী মালামাল দিয়ে ঘর নির্মাণ করার বিধান


২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

রামপাল

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯১৩৮৬

প্রজেক্টর বা ডিজিটাল পর্দার মাধ্যমে বক্তাকে দেখা মহিলাদের কতটুকু শরীয়তসম্মত?


২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

নওগাঁ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ আল কাউসার

৮১৭৯৯

অমুসলিমের সাথে বর্গা চুক্তি করলে উশর নাকি খারাজ দিবে?


২০ ডিসেম্বর, ২০২৪

নামবিহীন রাস্তা

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৭১৯৮০

বিকাশের ক্যাশআউটের টাকা নিজে ভোগ করার বিধান


১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Rob Nagarkandi

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী সিরাজুল ইসলাম

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy