প্রশ্নঃ ৭২৬৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ,বা'দাল জুমুয়া যদি মাসজিদে পড়া হয় তবে ৪ রাকাত, এবং যদি ঘরে এসে পড়া হয় তবে ২ রাকাত পড়তে হবে। এই কথাটি কি সঠিক ?,
১০ জুলাই, ২০২১
কুমিল্লা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
وعليكم السلام ورحمة الله
এ কথাটি সঠিক নয়।
বরং মসজিদে হোক বা ঘরে এসে পড়া হোক, জুমআর ফরযের পর চার রাকাআত সুন্নাত নামায পড়তে হবে।
আমাদের সমাজের কিছু ভাইয়েরা আজকাল কিছু মিডিয়ায়ও প্রচার শুরু করেছে, জুমআর আগে পরে কোন সুন্নত নাই। তাদেরকে না চেনার কারণে অনেকে ধোঁকায় পড়ে যাচ্ছে। যারা এ সুন্নত আদায় করে আসছেন তারা সন্দেহে পড়ে যাচ্ছেন। অনেকে স্থানীয় ইমাম সাহেবের কাছে জিজ্ঞেস করে বিষয়টি পরিস্কার করে নিচ্ছেন। আবার অনেকে ঐ অপপ্রচারকেই গনিমত মনে করে সুন্নত ছেড়ে দিয়ে গোনাহগার হচ্ছেন। এসব কারণে এ মাসআলাটিও পরিস্কার করার প্রয়োজন অনুভূত হয়েছে। তাই জুমআর সুন্নত সম্পর্কে হাদীসগুলো তুলে ধরা হচ্ছে:
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী
১.
হযরত আবূ হুরায়রা রা. বর্ণনা করেছেন:
عَنِ النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- قَالَ مَنِ اغْتَسَلَ ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ فَصَلَّى مَا قُدِّرَ لَهُ ثُمَّ أَنْصَتَ حَتَّى يَفْرُغَ مِنْ خُطْبَتِهِ ثُمَّ يُصَلِّىَ مَعَهُ غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى وَفَضْلَ ثَلاَثَةِ أَيَّامٍ أخرجه مسلم (٨٥٧)
অর্থ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি গোসল করলো, অতঃপর জুমআয় আসলো, এবং তৌফিক অনুসারে নামায পড়লো, এরপর ইমাম খুতবা শেষ করা পর্যন্ত চুপ রইলো এবং তার সঙ্গে নামায আদায় করলো তার পরবর্তী জুমআ পর্যন্ত এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। মুসলিম শরীফ, হাদীস নং ৮৫৭।
২.
হযরত সালমান ফারসী রা. বলেছেন:
قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَغْتَسِلُ رَجُلٌ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَيَتَطَهَّرُ مَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ وَيَدَّهِنُ مِنْ دُهْنِهِ أَوْ يَمَسُّ مِنْ طِيبِ بَيْتِهِ ثُمَّ يَخْرُجُ فَلَا يُفَرِّقُ بَيْنَ اثْنَيْنِ ثُمَّ يُصَلِّي مَا كُتِبَ لَهُ ثُمَّ يُنْصِتُ إِذَا تَكَلَّمَ الْإِمَامُ إِلَّا غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الْأُخْرَى. أخرجه البخاري (رقم ৮৮৩) وفي رواية له: ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ أَنْصَتَ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি জুমআর দিন গোসল করে, সাধ্যমতো পবিত্রতা অর্জন করে, তেল ব্যবহার করে কিংবা ঘরে থাকা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর ঘর থেকে বের হয় এবং (বসার জন্য বা পার হওয়ার জন্য) দুজনকে আলাদা না করে, এরপর তাওফিক মতো নামায পড়ে, অতঃপর ইমাম যখন খুতবা দেয় তখন চুপ থাকে, তাহলে অন্য জুমআ পর্যন্ত তার পাপ ক্ষমা করা হয়। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৮৩) বুখারী শরীফের অপর এক বর্ণনায় আছে, অতঃপর ইমাম (খুতবার উদ্দেশ্যে) বের হলে চুপ থাকে। (হাদীস নং ৯১০)
৩.
এ মর্মে হযরত নুবায়শা আল হুযালী রা. থেকে আরেকটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। তাতেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
فَإِنْ لَمْ يَجِدْ الْإِمَامَ خَرَجَ صَلَّى مَا بَدَا لَهُ
অর্থাৎ যদি ইমামকে বের হতে না দেখে তবে যে পরিমাণ ইচ্ছা নামায পড়ে। …. (মুসনাদে আহমদ, ৫খ. ৭৫পৃ.)
৪.
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রা. বর্ণিত অপর একটি হাদীসে জুমআর পূর্বে নামায পড়ার কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এভাবে বলেছেন, ثم ركع ما شاء أن يركع অর্থাৎ তার যে পরিমাণ ইচ্ছা রুকু (নামায আদায়) করে। (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ১১৭৬৮)
এসব হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে নামায পড়তে উৎসাহিত করেছেন। এসব হাদীস পেশ করলে ঐ সব বন্ধু সুর পাল্টে বলেন, হ্যাঁ, নামায তো আছে, তবে সুন্নতে মুয়াক্কাদা নেই।
অথচ মুয়াক্কাদা: গয়র মুয়াক্কাদা ফকীহগণের পরিভাষা। ফিকাহ শাস্ত্র ও ফকীহগণের কোন গুরুত্ব তাদের কাছে নেই। তারা তো দেখবেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে উৎসাহিত করেছেন কি না। তিনি উৎসাহিত করে থাকলে তারাও উৎসাহিত করবেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎসাহিত করেছেন এমন বিষয়কেই তো সুন্নত বলা হয়। চাই তা মুয়াক্কাদা হোক বা গয়র মুয়াক্কাদা।
আসলে কোন আমলকে সুন্নতে মুয়াক্কাদা বা রাতিবা আখ্যা দেওয়া মুজতাহিদ ফকীহগণের ইজতিহাদ বা সুচিন্তিত মত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক কোন আমলের প্রতি উৎসাহ প্রদান, উক্ত আমলের উপর তাঁর নিজের পাবন্দি ও সাহাবায়ে কেরামের আমল ও গুরুত্বারোপের আলোকেই ফকীহগণ উক্ত পরিভাষা ব্যবহার করে থাকেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে এই সুন্নতের প্রতি উৎসাহিত করেছেন, তা পেছনের হাদীসগুলো থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। তাঁর নিজস্ব আমল এবং তাঁর সাহাবীগণের নির্দেশ ও আমল সংক্রান্ত হাদীসগুলো এখানে তুলে ধরা হচ্ছে। তার আগে হাদীসশাস্ত্রবিদদের একটি সর্বস্বীকৃত মূলনীতির কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।
নীতিটি তারাবীর আলোচনায় সবিস্তারে আসছে। তা হলো, কোন হাদীস যদি একাধিক সনদ বা সূত্রে বর্ণিত থাকে, আর পৃথক পৃথক ভাবে সবগুলো সূত্র দুর্বল হয়, তথাপি সেগুলোর সমষ্টি মিলে হাসান স্তরে উন্নীত হয় এবং প্রমাণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। পরিভাষায় এটাকেই হাসান লিগায়রিহী বলে। আর তদনুযায়ী সাহাবীগণের আমল পাওয়া গেলে তা আরো শক্তিশালী হয়।
আর যদি মূল হাদীসটিরই কোন শক্তিশালী সনদ থাকে তবে তো কোন কথাই নেই। আলোচ্য বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল সম্পর্কে একাধিক হাদীস রয়েছে। সূত্র ও সনদের দিক থেকে এর কোন কোনটি বেশ শক্তিশালী। সেই সঙ্গে রয়েছে বহু সাহাবীর আমল। নিম্নে এগুলো তুলে ধরা হলো।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল:
১.
হযরত ইবনে আব্বাস রা. বর্ণনা করেন,
كان النبي صلى الله عليه و سلم يركع قبل الجمعة أربعا . لا يفصل في شيء منهن
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে চার রাকাত পড়তেন। মাঝে সালাম ফেরাতেন না। ইবনে মাজাহ, হাদীস নং ১১২৯, তাবারানী, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং ১৬৪০। এর সনদ দুর্বল।
২.
হযরত আলী রা. বর্ণনা করেন,
كان رسول الله يصلي قبل الجمعة أربعا وبعدها أربعا يجعل التسليم في آخرهن ركعة
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমআর পূর্বে পড়তেন চার রাকাত, পরে পড়তেন চার রাকাত। আর চার রাকাতের পরেই তিনি সালাম ফেরাতেন। তাবারানী, আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং ১৬১৭; আবু সাঈদ ইবনুল আরাবী, (মৃত্যু ৩৪০ হি.) আল মুজাম, হাদীস নং ৮৭৪।
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
২১৩৫৬
১৫ আগস্ট, ২০২২
London, London, England, United Kingdom

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
১৩৩৮৪
৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
Khulna, Bangladesh

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি
২০৬৬৯
২১ জুলাই, ২০২২
বিশ্বম্ভরপুর

উত্তর দিয়েছেনঃ মোহাম্মদ আমীর হোসাইন, মুফতি ও মুহাদ্দীস,
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে