প্রশ্নঃ ৬৮০৬. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম শায়েখ, যঈফ হাদীস কী আমল যোগ্য? যঈফ হাদীসে কী আমল করা যাবে?(অনেকে লিখা-লিখি করে যঈফ হাদীস বর্জনীয়।তারা যঈফ হাদীসকে হাদীস মনে করে না।তারা যঈফ আর জাল হাদীসকে এক করে,বলে যঈফ ও জাল হাদীস বর্জনীয়)বিস্তারিত বললে ভালো হয়,
২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
ঢাকা
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনি এমন বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন যা এক নতিদীর্ঘ আলোচনার দাবী রাখে বর্তমান সময়ে।
আমাদের সাইটে আগামীতে প্রবন্ধ - নিবন্ধ সেকশন খোলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এবং তাতে যঈফ হাদীস বিষয়ক প্রামাণ্য প্রবন্ধ প্রকাশের নিয়ত আছে ইনশাআল্লাহ ।
আমাদের প্রতিনিয়ত অসংখ্য পাঠকের প্রশ্নোত্তর দিতে হয় বিধায় আমরা সংক্ষেপে উত্তর দিয়ে থাকি,
তথাপি প্রশ্নোক্ত বিষয়টির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে সামনে রেখে কিছু আরজ করছিঃ
সনদের (সুত্রপরম্পরা) দুর্বলতার কারনে মুহাদ্দেসীনে কিরাম হাদীসকে যঈফ বা দুর্বল বলে থাকেন।
সনদের দুর্বলতার মাত্রার ভিন্নতার / তারতম্যের কারনে হাদীসের হুকুমেও পরিবর্তন হয়ে থাকে।
দুর্বলতার প্রথম পর্যায়ঃ যঈফ। এবং পর্যায়ক্রমে দুর্বলতার আধিক্য হিসাবে হাদিসটিতে শায, মুআল্লাল, মাকলুব, যঈফ জিদ্দান, মুদরাজ, মাতরুক, মুনকার এবং মওযু প্রভৃতি হুকুম প্রয়োগ হয়ে থাকে ।
[ وقال الزركشي في مختصره: ما ضعفه لا لعدم اتصاله سبعة أصناف، شرها: الموضوع، ثم المدرج، ثم المقلوب، ثم المنكر، ثم الشاذ، ثم المعلل، ثم المضطرب.
و قال في تدريب الراوي في شرح تقريب النواوي (1/ 348) قلت: وهذا ترتيب حسن، وينبغي جعل المتروك قبل المدرج.]
এবং এগুলো সবই যঈফ হাদীসের একেক পর্যায়ের হুকুম।এমনকি জালও যঈফের সবচে মারাত্মক পর্যায়ের নাম।
ইমাম খাত্তাবী রহঃ (৩৮৮হি) ও ইবনুছ ছালাহ রহঃ (৬৪৩হি) প্রমুখ বলেন, شرها الموضوع
তথা সবচে নিকৃষ্ট যঈফ হলো মওযু ।
এখানে যঈফ হাদীস বলতে সাধারন যঈফ উদ্দেশ্য। যা আমাদের আলোচ্য বিষয়।
পূর্বের কথা থেকে বুঝা গেলো, যঈফের অনেক ধরন আছে এবং প্রত্যেক ধরনের হুকুম ভিন্ন ভিন্ন হবে।
কিন্ত এ সূক্ষ্ম বিষয়টি অগ্রাহ্য করে সমাজে যারা ঢালাও ভাবে সনদের দুর্বলতা দেখলেই তাহকীক না করে যঈফ হাদীসএর হুকুম বসিয়ে তাকে সরাসরি আমল পরিত্যাজ্য ঘোষণা করে দেন তাদের এতো বড় ইলমী খিয়ানতের কারনে রাব্বে কারীমের সামনে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে।
কত মানুষ কেবল যঈফ হাদীস দেখেই বাদ দিয়ে দেন কেমন যেন এটি মওযু বা জাল বর্ণনা।
অথচ দুর্বলতা সামান্য হলে বা দুর্বলতা আছে কিন্ত এর পক্ষে শাওয়াহিদ পাওয়া গেলে মুহাদ্দেসীনে কিরামের নিকট সে হাদীস বহু ক্ষেত্রে অবশ্যই আমলযোগ্য এতে কোন সন্দেহ নেই।
আর যঈফ হাদীস এবং মউযু বর্ণনার মধ্যে যথেষ্টই তফাৎ রয়েছে। এদুটোকে এক করে ফেলা উসুলে হাদীসের সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং চরম অজ্ঞতা ও গুমরাহীর পরিচয়।
নিন্মে জরাহ তাদিলের প্রসিদ্ধ কয়েকজন মুহাদ্দিসের অভিমত পেশ করা হল-
প্রথমেই শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এর অভিমত দিয়ে শুরু করা হল।
শায়েখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেনঃ
*”পূর্ববর্তী জামানার স্বীকৃত মুহাদ্দিসগণ যেমনঃ আব্দুল্লাহ বিন মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহমতুল্লাহি আলাইহি , ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম আবু দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি,ইমাম তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম নাসাঈ রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম ইবনে মাজাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং যারা ওই স্তরের ছিলেন তারা সবাই তাদের কিতাবসমূহে জইফ হাদীস বর্ণনা করে তার দ্বারা দলিল পেশ করতেন এবং তদানুযাই আমলও করতেন। এর বিপরিতে তাদের কাউকে জইফ হাদীস এড়িয়ে চলতে দেখা যায় নি-(যাফারুল আমানি-১৮৬)
০১.সুফিয়ান বিন উয়াইনা রহমতুল্লাহি আলাইহি (মৃ: ১৯৮হি.)
¤ হাদীস শাস্ত্রের বিখ্যাত ইমাম সুফিয়ান বিন উয়াইনা রহমতুল্লাহি আলাইহি জইফ হাদীসের ব্যাপারে তার নিজস্ব উক্তি এভাবে ব্যক্ত করেন যে,ইয়াহইয়া ইবনুল মুগিরা বলেন-আমি একবার সুফিয়ান বিন উয়াইনা রহমতুল্লাহি আলাইহি কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন যে, তোমরা সুন্নতের (বিধান সম্পর্কীয়) বিষয়ে বাকিয়াহ হতে কোন কিছু গ্রহণ করো না। তবে
তা যদি সওয়াব পাওয়া না পাওয়া বিষয়ক হয় তাহলে কোন সমস্যা নেই। (খুলাসাহ-৯, আল
কিফায়াহ-১/১৩৪)
০২. আবদুর রহমান বিন মাহদি রহমতুল্লাহি আলাইহি (মৃ:১৯৮ হি.)
¤ জইফ হাদীসের ব্যাপারে তার নীতির ব্যাপারে আল্লামা তাহের জাজায়িরি রহমতুল্লাহি
আলাইহি(মৃ:১৩৩৮ হি.) বলেন: ইমাম আবদুর রহমান বিন মাহদি রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমরা যখন রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হালাল হারাম ওঅন্যান্য বিধি-বিধান সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করি তখন সনদ তথা সূত্রের মধ্যে খুব যাচাই বাছাই করি। পক্ষান্তরে, যখন ফাযায়েলে আমাল তথা কোন আমলের সওয়াব বা কাজের শাস্তি বিষয়ক হাদীস বর্ণনা করি, তখন সনদ বা বর্ণনা সুত্রে হালকা দৃষ্টি দেই এবং সনদে যে সকল ব্যক্তিবর্গ থাকে তাদেরকে খুব শিথিলভাবে পরখ করেই সিদ্ধান্ত নেই (তাওজিহুন নজর-২/৬৫৩)
০৩.ইয়াহইয়া বিন মাঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি (মৃ:২৩৩হি.)
¤ হাদীস শাস্ত্রে কঠোর নীতি সম্পন্ন ইমাম হিসেবে খ্যাত ইমাম ইয়াহইয়া বিন মাঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি বিভিন্ন জইফ রাবি সম্পর্কে তার নীতি বর্ণনা করতে গিয়ে শায়েখ আলি
বিন নায়েফ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন: ইয়াহইয়া বিন মাঈন রহমতুল্লাহি আলাইহি.
সম্পর্কে উল্লেখ করা হয় যে, তিনি আহকাম, মাগাযি, রাকায়িক ইত্যাদির বিষয়ে কোন
পার্থক্য করেন না। অর্থাৎ কোন ক্ষেত্রেই যইফ হাদীস কবুল করেন না। এই কথাটি প্রত্যাখ্যাত হয়ে যায় তার অন্যান্য উক্তি দ্বারা।
* যেমন তিনি নাজিহ আবু মা’শার মাদানী সিন্ধি সম্পর্কে বলেন: সে যইফ রাবি তবে
রিকাকের হাদীস তার থেকে নেয়া যাবে।
* তিনি ইদ্রিস বিন সিনান সম্পর্কে বলেন, তার থেকে রিকাকের হাদীস নেয়া যাবে।(সিয়ারু আ’লামিন নুবালা-৩/৩২৫)
* মুসা বিন ওবায়দা রবাযী সম্পর্কে বলেন, সে যইফ রাবি। তবে রিকাকের হাদীস তার থেকে নেয়া যাবে (আল-কামেল-১/৩৬৬)
* জিয়াদ আল-বাকাই সম্পর্কে বলেন, বিশেষ করে মাগাযির ক্ষেত্রে তাকে নিয়ে কোন সমস্যা নেই। অন্যান্য ক্ষেত্রে তার থেকে হাদীস নেয়া যাবে না।(খুলাসাহ-২৫)
০৪. ইবনে আবু হাতেম রহমতুল্লাহি আলাইহি.(মৃ: ৩২৭ হি.)
¤ কঠোর নীতির আরেক ইমাম ইবনে আবু হাতেম রহমতুল্লাহি আলাইহি. যিনি যইফ হাদীস
সম্পর্কে কঠোর হিসেবে পরিচিত। অথচ যইফ হাদীস গ্রহনের ক্ষেত্রে তার উন্মুক্ত
স্বীকারোক্তি পেলে চমকে দেয়ার মতই। যেমন তিনি বলেন “যারা নিষ্ঠাবান এবং প্রখর
মেধাবী বলে প্রসিদ্ধ তারাও আহলে আদালাহ এবং যারা বর্ণনার ক্ষেত্রে সত্যবাদী, দিনদারির ক্ষেত্রে পরহেজগার তবে মাঝে মধ্যে ভুল করে তাদের বর্ণিত হাদিস ও ওলামায়ে কেরাম গ্রহন করেছেন। এবং দলিল হিসেবে পেশ করেছেন। আর যারা সত্যবাদী, দীনদার তবে বেশি বেশি ভুল করে তাদের বর্ণিত হাদিস শুধু তারগিব, তারহিব, যুহদ, আদাবে ক্ষেত্রে নেয়া যাবে। হালাল হারামের ক্ষেত্রে তাদের বর্ণিত হাদিস দ্বারা দলিল পেশ করা যাবে না” (আল-জারহু ওয়াত তা’দিল- ভুমিকা ১/৬)
উপরোক্ত বক্তব্যের দ্বারা বুঝা গেলো যে, ইমাম ইবনে আবু হাতেম রহ. (মৃ:৩২৭ হি.)ও অন্যান্য ওলামায়ে কেরামের মতো যইফ হাদিস কবুল করতেন ।
০৫. শায়েখ আবু যাকারিয়া আল-আম্বরী রহমতুল্লাহি আলাইহি
¤ হাকেম নিশাপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি. (মৃ:৪০৫ হি) স্বীয়উস্তাদ সম্পর্কে মন্তব্য করতে
গিয়ে বলেন: >> আমি শায়েখ আবু যাকারিয়া আল-আম্বরি রহমতুল্লাহি আলাইহি কে বলতে
শুনেছি যে, কোন হাদিস যদি হালালকে হারাম বা হারামকে হালাল না করে এবং কোন প্রকার
হুকুম (বিধান) প্রমান না করে, বরং হাদিসটা তারগিব (কোন আমলের প্রতি উৎসাহ), তারহিব
(কোন কাজের প্রতি ভীতি প্রদর্শন) সম্পর্কীয় হয় তাহলে তার প্রতি কড়া দৃষ্টিতে দেখো
না এবং উক্ত হাদিসের বর্ননাকারিদের প্রতি নমনীয় মনোভাব পোষন করো(আল-
আজভিবাহ-৫০)
০৬.খতিব বাগদাদি রহমতুল্লাহি আলাইহি মৃ: ৪৬৩ হি.)
¤ হাদিস শাস্ত্রে যাদের হাত ধরে বিকশিত হয়েছে ও ব্যাপকভাবে উম্মাহর সাথে পরিচিত হয়েছে, তাদের মধ্যে খতীবে বাগদাদি রহমতুল্লাহি আলাইহি. অন্যতম। অথচ আজব কথা হল, তিনি ফাজায়েলের ক্ষেত্রে কেবল যইফ হাদিসকেই কবুল করতেন না, বরং যইফে শাদীদ ও সমানভাবে কবুল যোগ্য বলে মত প্রকাশ করেন। যেমন তার নিজস্ব উক্তি হল: কিফায়াহর মধ্যে খতিবে বাগদাদি রহ. বলেন,”অধিকাংশ পূর্ববর্তী ওলামায়ে কেরাম বলেন যে, হালাল-হারাম সম্পর্কীয় হাদিসগুলোকে কেবল মাত্র তাদের থেকেই গ্রহন করা হবে যারা মিথ্যার অপবাদে অভিযুক্ত হওয়া থেকে মুক্ত। আর তারগিব ও নসিহত বিষয়ক হাদিসগুলকে সকল শায়েখ থেকে গ্রহন করা নিঃসন্দেহে জায়েজ” (খুলাসাহ-২৫)
০৭. হাফেজ ইবনে আবদুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহিমৃ:৪৬৩ হি.)
¤ মালেকী মাজহাবের মুখপাত্র হাফেজ ইবনে আবদুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি. যইফ
হাদিস সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন: “ফযীলতের হাদিসের জন্য ওই পর্যায়ের রাবি
দরকার নেই যে পর্যায়ের রাবি আহকামের হাদিসগুলর ক্ষেত্রে দরকার” (খুলাসাহ-১ ৬, হুকমুল
আ’মালি বিল আহাদিসিয যইফা-৯)
০৮.কাজী আবু বকর ইবনুল আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি(মৃ:৫৪৩ হি.)
¤ শায়েখ আলি বিন নায়েফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তার সম্পর্কে বলেন: “যারাই যইফ
হাদিসের হুকুম-বিধান নিয়ে আলোচনা করেছেন তাদের অধিকাংশই যইফ হাদিস সম্পর্কে
কাজি আবু বকর ইবনুল আরাবি রহ. এর মতকে এভাবে নকল করেছেন যে, তিনি যইফ হাদিস মোটেই কবুল করেন না (আহকামের ক্ষেত্রেও না, ফাযায়েলের ক্ষেত্রেও না). কেউ কেউ আবার
শুধুমাত্র যইফে শাদীদ কবুল না করার কথাই উল্লেখ করেছেন।কিন্তু তার লিখিত কিতাব
“আ’রিযাতুল আহ ওয়াযি”-র দিকে তাকালে উপরোক্ত বক্তব্য ভুল ওঅসার প্রমানিত হয়। তার
বিপরীতটাই বরং প্রমাণিত হয়। তার গ্রন্থ “আরিযাতুল আহ ওয়াযি” অধ্যায়ন করলে দেখা যায় যে, ফাজায়েল, নেক কাজ, রাকায়িক, তারগিব, তারহিব,মুস্তাহাব এমনকি (বিশেষ সময়ে)
ইবাদাত থেকে বিরত থাকার বিষয়ে ও তিনি যইফ হাদিসকে আমল যোগ্য জ্ঞান করতেন
(খুলাসাহ-২৫)
* এ বিষয়ে একটি উদাহরন পেশ করছি। তিনি ইমাম তিরমিযী (রহ) জামে’ তিরমিজিতে (২৭৪৪) একটি মাজহুল হাদিস-উল্লেখ করে অতঃপর বলেন, এই হাদিসটা যদিও
যইফ কিন্তু সে অনুযাই আমল করা মুস্তাহাব। কেননা, তা মঙ্গল কামনার দোয়া। যা সহচরের
সাথে সুসম্পর্ক ও ভ্রাত্তিত্ব বন্ধন সৃষ্টিকারী (আরিযাতুল আহওয়াযি-১০/২০৫)
* শায়েখ আলি বিন নায়েফ রহমতুল্লাহি আলাইহি. আরো বলেন: উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, আবু বকর ইবনুল আরাবি রহমতুল্লাহি আলাইহি এর মত এবং অন্যান্য আহলে ইলম গনের মত একই। আর তা হল যইফ হাদিস বর্ণনা করা এবং তদানুযায়ী আমল
করা জায়েজ যদি তা যইফে শাদীদ তথা মউজু, মাতরুক না হয় (খুলাসাহ-২৫)
০৯.আল্লামা ইবনে হাযম রহমতুল্লাহি আলাইহি.(মৃ:৪৫৬হি.)
¤ যার ব্যাপারে একথার জোর দাবি করা হয় যে, তিনি যইফ হাদিস একদম কবুল করতেন না। তার সম্পর্কে শায়েখ আলি বিন নায়েফ আশ- শাহুদ রহ. বলেন:”ইমাম ইবনে হাযম সম্পর্কে বলা হয় যে, তিনি যইফ হাদিস মোটেও মানেন না, এই কথাটা তার বক্তব্য দ্বারাই বাতিল হয়ে যায়। কারন তিনি বিতর নামাজে কুনুতের হাদিস উল্লেখ করে বলেন ‘কুনুত’ আল্লাহর জিকির এবং দুয়া। তাই আমরা তা পছন্দ করি। অথচ এই আসারটা যদিও দলিল যোগ্য নয়, কিন্তু এবিষয়ে রাসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে আর কিছু পাওয়া যায় নি। ওঁদিকে ইমাম আহমদ বিনহাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন জইফ হাদিস আমার নিকট উত্তম, কিয়াস বা যুক্তি থেকে।
আলি ইবনে হাযম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন আমরা একথাই গ্রহন করেছি। যদি ও হযরত ওমর রাঃ হতে ভিন্ন কুনুত বর্ণিত হয়েছে। তবে আমাদের নিকট মুসনাদটাই উত্তম (খুলাসাহ-২৫,মুহাল্লা-৪/১৪৮)
১০.আবুল হাসান বিন কাত্তান রহমতুল্লাহি আলাইহি.(মৃ:৬২৮হি.) যিনি হাদীসের ময়দানে মুতাশাদ্দীদ মুহাদ্দীস হিসেবে পরিচিত।
¤ জইফ সনদে বর্ণিত হাদিসগুলোর আলোচনা করতে গিয়ে আবুল হাসান বিন কাত্তান
রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন: >>এই প্রকারের একটিও দলিল যোগ্য নয়, বরং এগুলোর ম্যাধ্যমে কেবল ফাজায়েলে আ’মালের ক্ষেত্রে আমল করা যাবে। আহকামের ক্ষেত্রে তা দ্বারা আমল করা
যাবে না। তবে যদি তার একাধিক সনদ বা সুত্র পাওয়া যায় অথবা আমলে মুতাওয়াতির বা
ধারাবাহিক আমল অথবা অন্য কোন সহিহ হাদিস বা কোরআনের আয়াত তাকে সমর্থন করে তাহলে তা আহকামের ক্ষেত্রেও আমল যোগ্য হবে।(তাহরিরু উলুমিল হাদিস-৩/১১৩) আবুল হাসান ইবনে কাত্তান রহ. এর উল্লিখিত অভিমত এ কথার জ্বলন্ত প্রমান যে, ফাজায়েলের ক্ষেত্রে জইফ হাদিস গ্রহনযোগ্য।
১১.হাফেজ ইবনুছ ছালাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি(মৃ:৬৪৩ হি.)
¤ তিনি কেবল জইফ হাদিস কবুল - ই করতেন না। বরং এ বাপারে উম্মতের ইজমার ও দাবি করেছেন। তিনি বলেন: >>সকল ওলামায়ে কেরামের সর্বসম্মত রায় হল, কোন জইফ হাদিস যদি হালাল-হারাম বিষয়ক না হয়ে ওয়াজ-নসিহত, ঘটনাবলি, কোন আমলের ফযীলত বা তারগিব-তারহিব জাতীয় বিষয়ে হয় তাহলে তার সনদকে শিথিলভাবে বিবেচনা করা হবে।
(মুকাদ্দামায়ে ইবনে সালেহ-১/১৯, কাওয়ায়েদুত তাওদিস-১১৪, তাওজিহুন নজর-৩/৪০) * মৃত ব্যাক্তিকে দাফন
করার পর তালকিন করার হুকুম
বর্ণনা করতে গিয়ে হাফেজ সুয়ুতি
রহ. বলেন- হাফেজ ইবনে সালেহ রহ. মৃত ব্যাক্তিকে তালকিন করা মুস্তাহাব সব্যস্ত করেছেন।
তাছাড়া ইমাম নববী রহ. ও একই মত পোষন করেন। এই জন্য যে, ফাযায়েলে আমালের ক্ষেত্রে জইফ হাদিস আমলযোগ্য। এ দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, তারা উভয়েই জইফ হাদিস দ্বারা মুস্তাহাব প্রমাণে একমত (আল-আজভিবাহ-৩৮) [বিঃদ্রঃ এখানে তালকিনের হুকুম বর্ণনা করা
উদ্দেশ্য নয়। বরং জইফ হাদিসের ক্ষেত্রে ইবনে সালেহ রহ. এর অভিমতটা স্পষ্ট করাই উদ্দেশ্য]
১২. ঈমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি(মৃ:৬৭৬ হি.)
¤ শাফেয়ী মাজহাবের আরেক মুখপাত্র ইমাম নববী রহ. জইফ হাদিস সম্পর্কে এভাবে মন্তব্য করেন: >>উম্মাহর সকল ওলামায়ে কেরামের নিকট জায়েজ হল, কোন হাদিস যদি মওযু বা জাল না হয় এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়টি যদি আহকাম তথা হালাল হারাম বা আল্লাহ তায়ালার সিফাত সম্পর্কীয় না হয় তাহলে বর্ণিত হাদিসের সনদ জইফ হলে ও তার প্রতি নমনীয় আচরন করা হবে। অর্থাৎ তার দুর্বলতার কথা উল্লেখ ছাড়াই তা বর্ণনা করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা বৈধ (আল-আজভিবাহ-৪০, আত তাকরিব-১৯২)
* ইমাম নববী রহমতুল্লাহি আলাইহি তার বিখ্যাত গ্রন্থ আল আজকার-এর মধ্যে বলেন, উম্মাহর সকল ফকিহ ও হাদিস বিশারদদের মত হল, ফাযায়েলে আমল ও তারগিব, তারহিবের মধ্যে জইফ হাদিস যদি তা মাউজু বা জাল পর্যায়ে না পৌঁছে তাহলে তা আমলযোগ্য (আল আজকার-৫০)
সকল ওলামায়ে কেরাম ঐক্যমত পোষন করেন যে, ফাযায়েলে আমালের ক্ষেত্রে জইফ হাদিস
আমলযোগ্য (আল মাজমু-২/৯৮)
সকল ওলামায়ে কেরামের ঐক্যমতে জইফ হাদিস আমলযোগ্য(আল-মাজ মু-৩/১২২)
* এব্যাপারে সকল ওলামা একমত যে, কোন আমলের ফজিলত প্রসঙ্গে বর্ণিত মুরসাল, জইফ বা মাওকুফ হাদিসের সনদের বাপারে সহনশীল হতে হবে। এবং তদানুযায়ী আমল করতে হবে। তবে হালাল-হারামের বিষয় ভিন্ন (আল-মাজমু-৩/২৪৮)
* ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে বর্ণিত জইফ হাদিসের সনদের প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শনের বাপারে ওলামায়ে কেরাম একমত (আল-মাজমু-৮/২৬১)
১৩.ইমাম ইবনে তাইমিয়া .(মৃ:৭২৮ হি.)
¤ অষ্টম শতাব্দীর ইবনে তাইমিয়া যার ব্যাপারে জইফ হাদিস কবুল না করার বিশোধগার
সর্বজন বিদিত। সেও স্বীয় মতকে এভাবে ব্যাক্ত করেছে: >>আর ইসরাইলিয়াত বা এজাতীয় কোন বিষয়ের বর্ণনার ক্ষেত্রে রাবি যদি মিথ্যুক পর্যায়ে না হয় তাহলে তারগিব বা তারহিব
জাতীয় বিষয়ে তাদের বর্ণনা গ্রহনযোগ্য। এবং সেআরো বলে-যদি কোন মুস্তাহাব আমলের
ফজিলত বা সওয়াব পাওয়া বা কোন অপছন্দনীয় আমলের অসঙ্গতি বা তার পরিণতি বিষয়ক
কোন হাদিস বর্ণিত হয়, আর একথাও কোনভাবে জানা না যায় যে, সংশ্লিষ্ট হাদিসটি জাল, তাহলে উক্ত হাদিস মোতাবেক আমল করতে কোন সমস্যা নেই (মাজমু আতুল ফাতাওয়া-১/৭৬, খুলাসাহ-২৭)
১৪- ইমামুল হাদীস আল্লামা ইবন হাজার আসকালানী (৮৫২হি) বলেন:
قراءة في كتاب تبيين العجب بما ورد في فضل رجب، للحافظ ابن حجر (ص: 9)
لم يرد في فضل شهر رجب، ولا في صيامه، ولا في صيام شيء منه، - معين، ولا في قيام ليلة مخصوصة فيه - حديث صحيح يصلح للحجة، وقد سبقني إلى الجزم بذلك الإمام أبو إسماعيل الهروي الحافظ، رويناه عنه بإسناد صحيح، وكذلك رويناه عن غيره، ولكن اشتهر أن أهل العلم يتسامحون في إيراد الأحاديث في الفضائل وإن كان فيها ضعف، ما لم تكن موضوعة. وينبغي مع ذلك اشتراط أن يعتقد العامل كون ذلك الحديث ضعيفا، وأن لا يشهر بذلك، لئلا يعمل المرء بحديث ضعيف، فيشرع ما ليس بشرع، أو يراه بعض الجهال فيظن أنه سنة صحيحة. وقد صرح بمعنى ذلك الأستاذ أبو محمد بن عبد السلام وغيره. وليحذر المرء من دخوله تحت قوله صلى الله عليه وسلم: "من حدث عني بحديث يرى أنه كذب فهو أحد الكذابين". فكيف بمن عمل به. ولا فرق في العمل بالحديث في الأحكام، أو في الفضائل، إذ الكل شرع. ثم نرجع فنقول إن أمثل ما ورد في ذلك ما رواه النسائي من حديث أسامة بن زيد رضي الله عنه قال: " قلت يا رسول الله لم أرك تصوم من الشهور ما تصوم في شعبان. قال: ذاك شهر يغفل الناس عنه بين رجب ورمضان... "الحديث. فهذا فيه إشعار بأن في رجب مشابهة برمضان، وأن الناس يشتغلون من العبادة بما يشتغلون به في رمضان، ويغفلون عن نظير ذلك في شعبان. لذلك كان يصومه. وفي تخصيصه ذلك بالصوم - إشعار بفضل رجب، وأن ذلك كان من المعلوم المقرر لديهم.
‘‘এ কথা প্রসিদ্ধ যে, ফাযায়িল বিষয়ে হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে মুহাদ্দেসীনে কিরাম কিছুটা শিথিলতা অবলম্বন করেন। ফাযায়িল বিষয়ক হাদীসটি যদি জাল না হয় তবে তাতে দুর্বলতা থাকলেও মুহাদ্দেসীনে কিরাম তা বর্ণনা ও আমল করেন। এক্ষেত্রে নিম্নের শর্ত লক্ষ্য করা প্রয়োজন।
তা হলো: যদি কেউ এরূপ হাদীস পালন করতে চায় তবে তাকে বিশ্বাস ও আকীদা পোষণ করতে হবে যে, হাদীসটিকে যয়ীফ। এছাড়া সে এরূপ দুর্বল হাদীস নির্ভর আমল প্রকাশ্যে করতে পারবে না। কারণ একজন মানুষ দুর্বল হাদীসের উপর আমল করে শরীয়তের মধ্যে এমন কিছু অন্তর্ভুক্ত করতে পারে না যা মূলত শরীয়তের অংশ নয়। অথবা তার দুর্বল হাদীস নির্ভর আমলটি দেখে একজন মুর্খ মানুষ ধারণা করতে পারে যে, একটি একটি সহীহ সুন্নাত। (সপ্তম শতকের মুজাদ্দিদ ও সুলতানুল উলামা নামে খ্যাত) উসতায (ইয্যুদ্দীন আব্দুল আযীয) ইবন আব্দুস সালাম (৬৬০ হি) এবং অন্যান্য আলিম এ অর্থে সুস্পষ্ট বক্তব্য পেশ করেছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর হাদীসে ঘোষিত শাস্তির অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আত্মরক্ষা করা মুমিনের দায়িত্ব। তিনি বলেছেন: ‘‘যে হাদীসটির বিষয়ে ধারণা হয় যে তা মিথ্যা সে হাদীস যে বর্ণনা করে সেও একজন মিথ্যাবাদী।’’ এরূপ (সন্দেহভাজন বা দুর্বল) হাদীস বর্ণনা করার পরিণতি যদি এরূপ হয় তাহলে তার পালন বা আমল করার পরিণতি কী হতে পারে? আর কোনো হাদীস আমল বা পালন করার ক্ষেত্রে হালাল-হারাম এবং ফযীলত-সাওয়াব উভয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কারণ হালাল-হারাম ও ফযীলত-সাওয়াব সবই শরীয়তের অন্তর্ভুক্ত।’
এরপর কিছু মিছাল নিয়ে এসেছেন।
১৫.হাফেজ ইবন হাজার মক্কি রহমতুল্লাহি আলাইহি . (মৃ:৮৯৭হি.)
¤ তিনি বলেন >> ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে একমত পোষন করেছেন যে ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে জইফ হাদিস আমলযোগ্য।
(আল ফাতহুল মুবিন-৩২, আল আজভিবাহ-৪২)
১৬.হাফেজ সাখাভি রহমতুল্লাহি আলাইহি ..(মৃ:৯০২ হি.)
¤ জইফ হাদিস কবুলের ব্যাপারে উম্মতের ইজমা নকল করে বলেন:
তৃতীয় মত যা জমহুর ওলামায়ে কেরাম গ্রহন করেছেন তা হল (জইফ হাদিস) আহকামের
ক্ষেত্রে আমলযোগ্য না হলেও ফাজায়েলের ক্ষেত্রে আমলযোগ্য (আল-কওলুল বাদি-৪৯৮)
১৭.ইমাম সুয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি .(মৃ:৯১১ হি.)
¤ তিনি বলেন >>পূর্বেকার সকল ফকিহ ও হাদিস বিশারদ গন তারা খবর (জইফ হাদিস)-গুলকে খাসায়েস বা গুণাগুণ, অথবা মু’জিযাত বা অলৌকিক বিষয় প্রভৃতি অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন। আবার কখনো কখনো মানাকিব (ব্যক্তির নৈতিক বা মহৎ কার্যাবলি),মুকাররমাত (ব্যাক্তির মাহাত্মবলি) ইত্যাদি অধ্যায়ের অধীনেও উল্লেখ করতেন। আর তারা মনে করতেন এজাতীয় অধ্যায়ে এধরনের হাদিস উল্লেখ করা এবং তেমনি ফাজায়েলে আমলের ক্ষেত্রে সহিহ নয় এমন হাদিস উল্লেখ করার অবকাশ আছে।(আল- আজভিবাহ-৩৯)
১৮.ইবনে নাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি ..(মৃ:৯৭২ হি.)
¤ তিনি বলেন: >>ফাযায়েলে আমলের ক্ষেত্রে জইফ হাদিস অনুযায়ী আমল করা যাবে। এটা ইমাম আহমাদ রহ, মুওয়াফফাক রহ. ও অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মত (খুলাসাহ-২৯)
১৯.ইবনে হাজার আল হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি .(মৃ:৯৭৪হি.)
¤ তিনি বলেন: >> উম্মাহর সর্বসম্মত মত হল, জইফ হাদিস তথা মুরসাল, মু’দাল, মুনকাতে পর্যায়ের হাদিস দ্বারা আমলের ফযীলত সাব্যস্ত করা যাবে (খুলাসাহ-২৬)
২০.মোল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ..(মৃ:১০১৪হি.)
¤ তিনি স্বীয় কিতাব আল-হাজ্জুল আওফার ফিল হাজ্জিল আকবার-এরমধ্যে নিজের মত
এভাবে উল্লেখ করেন- সকল ওলামায়ে কেরামের নিকট ফাযায়েলে আমালের ক্ষেত্রে
জইফ হাদিস গ্রহনযোগ্য (আল আজভিবাহ-৩৭)
এ ছাড়াও আরও অনেক যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিসে কেরাম জইফ হাদিসকে গ্রহন করেছেন।
এ পর্যায়ে সাধারন যঈফের (এখানে যঈফ হাদীস বলতে সাধারন যঈফ উদ্দেশ্য) হুকুম সম্পর্কে বলছি,যঈফ হাদীস অবশ্যই আমলযোগ্য। তবে মুহাদ্দেসীনে কিরাম কিছু শর্তাদি উল্লেখ করেছেন।
কিছু বিষয়ে ‘যয়ীফ’ হাদীস বলা এবং আমল করাকে মুহাদ্দেসীনে কিরাম অনুমোদন করেছেন:
(১) কুরআনের ‘তাফসীর’ বা ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে,
(২) ইতিহাস বা ঐতিহাসিক বর্ণনার ক্ষেত্রে এবং
(৩) বিভিন্ন নেক আমলের ‘ফযীলত’-এর ক্ষেত্রে।
এক্ষেত্রে তাঁরা নিম্নরূপ শর্তগুলো উল্লেখ করেছেন।
(১) হাদীসটি ‘‘সাধারন দুর্বল’ হবে, হাদীসের দুর্বলতা যেন অধিক না হয়,যদ্দরুন সেটি মুনকার কিংবা জাল হবার পর্যায়ে পৌছে।
(২) যয়ীফ হাদীসটি এমন হতে হবে যেটি শরীয়তের কোন স্বীকৃত মুলনীতির আওতাধীন হবে।
(৩) যয়ীফ হাদীসকে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কথা বলে বিশ্বাস করা যাবে না। সাবধানতামূলকভাবে আমল করতে হবে।
আমল করার সময় এর সুপ্রমানিত হবার বিশ্বাস না করে বরং বর্ণিত ফজিলতের আশা করতঃ আমল করা। ইমাম ইবনে আব্দুল বার রহঃ (৪৬৩হি.)তার আত-তামহিদ গ্রন্থে (৬:৫৪-৫৫) একটি দুর্বল হাদীস উল্লেখ করে বলেন, হাদিসটি বাহ্যত সুন্দর হলেও (অর্থাৎ হাদিসটি দুর্বল)এর থেকে প্রাপ্ত বরকতের আশা করা যায়, ইনশাআল্লাহ।
অতএব, এ সব শর্তাদি অনুযায়ী হলে যঈফ হাদীস অবশ্যই আমলযোগ্য বিবেচিত হবে।
এবং এ বিষয়ে প্রতি যুগের বড় বড় হাদীস বিশারদগন একমত পোষন করেছেন।
সুতরাং,
দুর্বলতার ধরন না জেনে, তা যাচাই না করে,তার তাহকীক না করে শুধু দুর্বলতা শুনেই ঢালাও ভাবে হাদীসকে যঈফ আখ্যা দিয়ে দেওয়া উসুলে হাদীসের পরিপন্থী এবং নবীজীর সাঃ হাদীস-সুন্নাহ থেকে উম্মাহকে দূরে সরানোর এক সুগভীর চক্রান্ত।
আল্লাহ আমাদের হেফাযত করেন।
হ্যা, দুর্বলতার ধরন বা মাত্রা বেশী হলে হাদিসটি যঈফ জিদ্দান (চরম দুর্বল)হতে পারে এমনকি সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে জাল পর্যন্ত হতে পারে, কিন্ত সে বিষয়ের তাহকীকের গুরুত্ত না দিয়ে উম্মাহকে সকল যঈফ হাদীস থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এটা কোনভাবেই কাম্য নয় এবং এটা হাদীসের খেদমত হতে পারেনা । আল্লাহ আমাদেরকে সহিহ বুঝ দান করুন-আমীন।
খুলাছাঃ আকাঈদ-আহকাম ব্যতিত অন্যান্য ক্ষেত্রে যঈফ হাদীস অবশ্যই আমলযোগ্য। তবে মুহাদ্দেসীনে কিরাম যেসব শর্তাদি উল্লেখ করেছেন তা মেনে আমল করতে হবে। আল্লাহ পাক আমাদের শরয়ী বিষয়ে বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি এবং প্রান্তিকতার গন্ডি থেকে বেরিয়ে সঠিকটা জেনে আমল করার তাওফীক দান করেন। আমীন।
তথ্যসুত্রঃ
: ولمن اراد الاستزادة فعليه ان يقرأ المقالة
حكم العمل بالحديث الضعيف في الفضائل
العمل بالحديث الضعيف محل نزاع بين العلماء، قال السخاوي: في الضعيف ثلاثة مذاهب: لا يعمل به مطلقاً، ويعمل به مطلقاً إذا لم يكن في الباب غيره، ثالثها هو الذي عليه الجمهور يعمل به في الفضائل دون الأحكام بشروطه أهـ .
وحقيقة هذه الأقوال عائدة إلى قولين، يعمل به بشروط، ولا يعمل به مطلقا.
فاستحبَّ بعضُ العلماء العمل به في الفضائل دون الأحكام والعقائد، وهو مروي عن طائفة من المتقدمين والمتأخرين.
رَوى الحاكم عن محمد بن إسحاق بن إبراهيم الحنظلي قال: كان أبي يحكي عن عبدالرحمن بن مهدي أنَّهُ كان يقول: إذا رَوَيْنَا في الثَّوَابِ والعِقَابِ وفَضَائِل الأعْمَال تساهلنا في الأسانيد، وسَمَّحْنَا في الرجال، وإذا رَوَيْنَا في الحلال والحرام والأحكام تَشَدَّدنَا في الأسانيد، وانتقدنا الرجال .
وقال الحاكم أيضًا: سمعت أبا زكريا يحيى بن محمد العنبري سمعتُ أبا العباس أحمد بن محمد السجزي النوفلي سمعتُ أحمد بن حنبل يقول: إذا رَوَيْنا عن رسول الله صلى الله عليه وسلم في الحلال والحرام والسُّنَن تَشدَّدنا، وإذا روينا عن النبي صلى الله عليه وسلم في فضائل الأعمال، وما لا يَضَعُ حُكْمًا ولا يرفعه، تساهلنا في الأسانيد. اهـ .
وقال الخطيب: ينبغي للمحدث أنْ يتشدَّدَ في أحاديث الأحكام التي يفصل بها بين الحلال والحرام، فلا يرويها إلا عن أهل المعرفة والحفظ، وذوي الإتقان والضبط، وأما الأحاديث التي تتعلق بفضائل الأعمال وما في معناها فيحتمل روايتها عن عامة الشيوخ.
ثم روى عن سفيان الثوري قال: خُذُوا هذه الرغائب وهذه الفضائل من المشيخة، فأما الحلال والحرام فلا تأخذوه إلاَّ عمن يعرف الزيادة فيه من النقص .
وبمعناه ما روي عن ابن عيينة أنه قال: لا تسمعوا من بقية ما كان في سنّة، واسمعوا منه ما كان في ثواب أو غيره.
وقال أبو محمد عبدالرحمن بن محمد بن إدريس الرازي المشهور بابن أبي حاتم شارحًا مراتب الرواة: ومنهم الصدوق الورع المغفل، الغالب عليه الوهم والخطأ، والسهو والغلط، فهذا يكتب من حديثه الترغيب والترهيب، والزهد والآداب، ولا يحتج بحديثه في الحلال والحرام.
وقال أبو زكريا العنبري: الخبر إذا وَرَدَ لم يُحَرِّم حلالاً، ولم يُحِل حرامًا، ولم يُوجِب حُكْمًا، وكان في ترغيب أو ترهيب أو تشديد أو ترخيص، وَجَبَ الإغماض عنه، والتساهل في رواته. اهـ.
فهذه النصوص تفيد أنهم كانوا يترخصون في الفضائل ما لا يترخصون في غيرها، بل يوجب بعضهم روايتها والإغماض عنها، كما قال العنبري، وأي فائدة بروايتها إلاَّ العمل بها.
قال السخاوي: وهذا التساهل والتشديد - يريد التساهل في الفضائل والتشديد في الأحكام والعقائد - منقول عن ابن مهدي عبدالرحمن وغير واحد من الأئمة كأحمد بن حنبل وابن معين وابن المبارك والسفيانين بحيث عقد أبو أحمد بن عدي في مقدمة كامله والخطيب في كفايته لذلك بابا .
قال ابن رجب: وأما ما ذكره الترمذي من أن الحديث إذا انفرد به من هو متهم بالكذب، أو من هو ضعيف في الحديث، لغفلته وكثرة خطئه ولم يعرف ذلك الحديث إلا من حديثه، فإنه لا يحتج به، فمراده: أنه لا يحتج به في الأحكام الشرعية والأمور العملية وإن كان قد يروى حديث بعض هؤلاء في الرقائق والترغيب والترهيب.
فقد رخص كثير من الأئمة في رواية الأحاديث الرقاق ونحوها عن الضعفاء منهم: ابن مهدي وأحمد بن حنبل..
وقال ابن معين في موسى بن عبيدة: يكتب من حديثه الرقاق.
وإنما يروى في الترهيب والترغيب والزهد والآداب أحاديث أهل الغفلة الذين لا يتهمون بالكذب، فأمَّا أهل التهمة فيطرح حديثهم، كذا قال ابن أبي حاتم وغيره اهـ .
وقال العلامة النووي - وهو من أشهر القائلين بجواز العمل بالحديث الضعيف في الفضائل - في كتاب الأذكار: قال العلماء من المحدثين والفقهاء وغيرهم: يجوز ويستحب العمل في الفضائل والترغيب والترهيب بالحديث الضعيف، ما لم يكن موضوعًا، وأما الأحكام كالحلال والحرام والبيع والنكاح والطلاق وغير ذلك فلا يعمل فيها إلا بالحديث الصحيح أو الحسن، إلا أن يكون في احتياط في شيء من ذلك، كما إذا ورد حديث ضعيف بكراهة بعض البيوع أو الأنكحة فإنَّ المستحب أنْ يتنزه عنه ولكن لا يجب. اهـ .
والقول الثاني: لا يجوز العمل به، قال ابن العربي: إنَّ الحديث الضعيف لا يعمل به مطلقا أهـ .
وبه يقول الشوكاني، فإنه نقل عن ابن عبدالبر قوله: وأهل العلم بجماعتهم يتساهلون في الفضائل، فيرونها عن كل، وإنما يتشددون في أحاديث الأحكام، ثم عقب بقوله: إنَّ الأحكام الشرعية متساوية الأقدام، لا فرق بينها، فلا يحل إثبات شيء منها إلاَّ بما تقوم به الحجة، وإلاَّ كان من التقول على الله بما لم يقل، وفيه من العقوبة ما هو معروف، والقلب يشهد بوضع ما ورد في هذا المعنى وبطلانه[19].
وذلك لأنَّ الاستحباب حكم شرعي في حقيقته فيتوقف على الدليل.
وهذا المذهب ينسب للشيخين البخاري ومسلم، أما مسلم فقد قال في مقدمة صحيحه: وإنما ألزموا أنفسهم الكشف عن معايب رواة الحديث، وناقلي الأخبار، وأفتوا بذلك حين سئلوا لما فيه من عظيم الخطر، إذ الأخبار في أمر الدين إنما تأتي بتحليل، أو تحريم، أو أمر، أو نهي، أو ترغيب، أو ترهيب، فإذا كان الراوي لها ليس بمعدن للصدق والأمانة، ثم أقدم على الرواية عنه من قد عرفه، ولم يبين ما فيه لغيره ممن جهل معرفته كان آثما بفعله ذلك، غاشا لعوام المسلمين، إذ لا يؤمن على بعض من سمع تلك الأخبار أن يستعملها، أو يستعمل بعضها ولعلها، أو أكثرها أكاذيب لا أصل لها، مع أن الأخبار الصحاح من رواية الثقات وأهل القناعة أكثر من أن يضطر إلى نقل من ليس بثقة ولا مقنع .
قال ابن رجب: وظاهر ما ذكره مسلم في مقدمة كتابه يقتضي أنه لا تروى أحاديث الترغيب والترهيب إلا عمن تروى عنه الأحكام .
ولكن قوله: ولعلها أو أكثرها أكاذيب...الخ، يخصص مراده بالموضوع، وهذا موضع اتفاق، والكلام على الضعيف.
وأما البخاري فالظاهر من صنيعه أنه قائل بالجواز، لأنه خرج بعضها في الفضائل، وذلك في كتاب الأدب المفرد، وإنما نسب إليه هذا المذهب لإخراجه الصحيح.
والمتأخرون يميلون إلى هذا القول، وهو عند التحقيق من مذاهب أهل التشدد، وواقع المسلمين وواقعهم خلافه، فما منهم إلا ويقول بحديث ضعيف ويعمل به في بعض المسائل، أو يحسن ما يضعفه غيره، ثم يعمل به.
ومناقشتهم لقول الجمهور واحدة، قال القاسمي رحمه الله في قواعد التحديث : قال المحقق جلال الدين الدواني في رسالته أنموذج العلوم: اتفقوا على أن الحديث الضعيف لا تثبت به الأحكام الشرعية، ثم ذكروا أنه يجوز بل يستحب العمل بالأحاديث الضعيفة في فضائل الأعمال، وممن صرح به النووي في كتبه ولا سيما كتاب الأذكار، وفيه إشكال، لأنَّ جواز العمل واستحبابه كلاهما من الأحكام الشرعية الخمسة، فإذا استحب العمل بمقتضى الحديث الضعيف كان ثبوته بالحديث الضعيف، وذلك ينافي ما تقرر من عدم ثبوت الأحكام بالأحاديث الضعيفة.
وقد حاول بعضهم التَّفصِّي عن ذلك، وقال: إنَّ مراد النووي أنَّه إذا ثبت حديث صحيح أو حسن في فضيلة عمل من الأعمال تجوز رواية الحديث الضعيف في هذا الباب، ولا يخفى أنَّ هذا لا يرتبط بكلام النووي فضلاً عن أنْ يكون مراده، فكم مِنْ فرقٍ بين جواز العمل واستحبابه وبين مجرد نقل الحديث، على أنه لو لم يثبت الحديث الصحيح أو الحسن في فضيلة عمل من الأعمال يجوز نقل الحديث الضعيف فيها، ولا سيما مع التنبيه على ضعفه، ومثل ذلك في كتب الحديث وغيره كثير شائع، يشهد به من تتبع أدنى تتبع.
والذي يصلح للتعويل: أنَّه إذا وجد حديث ضعيف في فضيلة عمل من الأعمال ولم يكن هذا العمل مما يحتمل الحرمة أو الكراهة فإنه يجوز العمل به، ويستحب لأنه مأمون الخطر، ومرجوّ النفع، إذ هو دائر بين الإباحة والاستحباب، فالاحتياط العمل به رجاء الثواب، وأما إذا دار بين الحرمة والاستحباب فلا وجه لاستحباب العمل به، وأما إذا دار بين الكراهة والاستحباب فمجال النظر فيه واسع، إذ في العمل دغدغة الوقوع في المكروه، وفي الترك مظنة ترك المستحب، فلينظر إن كان خطر الكراهة أشد بأنْ تكون الكراهة المحتملة شديدة والاستحباب المحتمل ضعيفًا، فحينئذ يرجح الترك على العمل، فلا يستحب العلم به، وإنْ كان خطر الكراهة أضعف بأن تكون الكراهة على تقدير وقوعها ضعيفة، دون مرتبة ترك العمل، على تقدير استحبابه فالاختيار العمل به، وفي صورة المساواة يحتاج إلى نظر تام، والظاهر أنَّه يستحب أيضًا، لأن المباحات تصير بالنية عبادة، فكيف ما فيه شبهة الاستحباب لأجل الحديث الضعيف، فجواز العمل واستحبابه مشروطان، أما جواز العمل فبعدم احتمال الحرمة، وأما الاستحباب فبما ذكر مفصلاً. اهـ.
قلت: قد وضع العلماء للعمل بالحديث الضعيف شروطا :
أولها: ألاَّ يكون الضعف شديدًا، كأنْ يكون الحديث ضُعِّف لسوء حفظ صاحبه أو تدليس في أحد رواته، أو اختلاط ولا يعرف حال الراوي عنه هل كان قبل الاختلاط أم بعده، أو اختلاف في حال أحد رجاله، أو كأن يكون في إسناده رجل خال من توثيق معتبر، كهؤلاء الذين ما روى عنهم إلا رجل واحد ووثقهم ابن حبان وحده، ونحو ذلك مما قد يمشيه بعض الحفاظ.
وأما إذا كان في إسناده متروك أو منكر الحديث أو متهم فضلاً عن الوضَّاع المعروف بالوضع فإنَّ هذا الصنف ليس مما نحن في صدده بشيء، بل لا يلتفت إليه ولا يعمل به، وإنما يُروى ليحذر منه، وليعلم الناس أنه موضوع غير صحيح، كما سيأتي تقريره.
ولذلك قال ابن علان عند قول النووي: (ما لم يكن موضوعًا): وفي معناه شديد الضعف، فلا يجوز العمل بخبر مَن انفرد مِن كذاب أو متهم اهـ وهذا الشرط متفق عليه .
الثاني: أن يندرج تحت أصل معمول به من أصول الشريعة، فيخرج ما يخترع بحيث لا يكون له أصلا أصل .
وفي باب فضائل القرآن فإنَّ الشريعة جاءت بالضرورة مخبرة بفضل هذا الكتاب ومكانته من الدين.
وهذا الشرط هو ما عناه العنبري بقوله: الخبر إذا وَرَدَ لم يُحَرِّم حلالاً، ولم يُحِل حرامًا، ولم يُوجِب حُكْمًا..
لكن بشرط ألا يقوم على المنع منه دليل آخر أخص.
قال ابن تيمية: فإذا تضمنت أحاديث الفضائل الضعيفة تقديرا وتحديدا مثل صلاة في وقت معين بقراءة معينة أو على صفة معينة لم يجز ذلك، لأنَّ استحباب هذا الوصف المعين لم يثبت بدليل شرعي، بخلاف ما لو روى فيه: من دخل السوق فقال: لا إله إلا الله كان له كذا وكذا فإن ذكر الله في السوق مستحب لما فيه من ذكر الله بين الغافلين، كما جاء في الحديث المعروف: (ذاكر الله في الغافلين كالشجرة الخضراء بين الشجر اليابس) فأما تقدير الثواب المروي فيه فلا يضر ثبوته ولا عدم ثبوته أهـ.
الثالث: أن لا يعتقد عند العمل به ثبوته، بل يعتقد الاحتياط، وذلك لئلا ينسب للرسول صلى الله عليه وسلم ما لم يقله.
وهذان الشرطان الآخران: عن العز بن عبدالسلام وابن دقيق العيد وغيرهما.
ولكن في هذا الشرط الأخير نظر من جهة أنه غير موافق لحقيقة العامل به، فإنه ما عمل به إلاَّ وهو يرجو ما فيه من ثواب، وهذه الفضائل كما ذكر العلماء لا تعود على صاحبها بالنفع إلاَّ بالاعتقاد فيها والتصديق بها، وأما المُجَرِّبُون فهم أبعد الناس عن نفع هذه الأحاديث.
قال العلامه الزركشي: هذا النوع لن ينتفع به إلا من أخلص قلبه لله ونيته، وتدبر الكتاب في عقله وسمعه، وعمر به قلبه، وأعمل به جوارحه، وجعله سميره في ليله ونهاره، وتمسك به وتدبره، هنالك تأتيه الحقائق من كل جانب، وإن لم يكن بهذه الصفة كان فعله مكذبًا لقوله، كما روي أنَّ عارفًا وقعت له واقعة فقال له صديق له: نستعين بفلان، فقال، أخشى أن تبطل صلاتي التي تقدمت هذا الأمر، وقد صليتها.
قال صديقه: وأين هذا من هذا؟ قال: لأني قلت في صلاتي: ﴿ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ﴾ [الفاتحة: 5] فإن استعنت بغيره كذبت، والكذب في الصلاة يبطلها، وكذلك الاستعاذة من الشيطان الرجيم لا تكون إلا مع تحقق العداوة، فإذا قبل إشارة الشيطان واستنصحه فقد كذب قوله، فبطل ذكره اهـ .
فالنية التي ينبغي أنْ يستصحبها في العمل بالفضائل الضعيفة الاحتياط في الدين، والرغبة في الخير.
وقد كان أحمد وأبو داود والنسائي وغيرهم من أهل الحديث رحمهم الله يأخذون بالحديث الضعيف في أبواب الفقه إذا لم يجدوا غيره، ورعًا منهم واحتياطًا في الدين، إذ قد يحفظ الناسي ويضبط الغافل، فإنَّ الحكم على الراوي بسوء الحفظ أو الوهم أو الغفلة لا يطرد بالضرورة على مروياته كلها.
وقد أشار إلى هذا الملحظ التقي ابن الصلاح، فإن مما قيد به جواز رواية الضعيف - مما يدخل في شرط: ألا يكون الحديث شديد الضعف -: احتمال صدقه في الباطن.
وقال: اعلم أنَّ الحديث الموضوع شر الأحاديث الضعيفة، ولا تحل روايته لأحد علم حاله في أي معنى كان إلاَّ مقرونًا ببيان وضعه، بخلاف غيره من الأحاديث الضعيفة التي يحتمل صدقها في الباطن، حيث جاز روايتها في الترغيب والترهيب أهـ .
وهذا ما يبرر تقديم جماعة من السلف الحديث الضعيف على الرأي والقياس بشرطه.
قال ابن منده في وصف سنن أبي داود: يخرج الإسناد الضعيف إذا لم يجد في الباب غيره، لأنَّه أقوى عنده من رأي الرجال. اهـ
قال الحافظ ابن حجر: ونحو هذا ما روينا عن الإمام أحمد بن حنبل فيما نقله ابن المنذر عنه أنه كان يحتج بعمرو بن شعيب عن أبيه عن جده إذا لم يكن في الباب غيره.
وأصرح من هذا ما رويناه عنه، حكاه أبو العز بن كادش أنه قال لابنه: "لو أردت أن أقتصر على ما صح عندي لم أرو من هذا المسند إلا الشيء بعد الشيء، لكنك يا بني تعرف طريقتي في الحديث أني لا أخالف ما يضعف إلا إذا كان في الباب شيء يدفعه".
ومن هذا ما روينا من طريق عبدالله بن الإمام أحمد بن حنبل بالإسناد الصحيح إليه قال: "سمعت أبي يقول: "لا تكاد ترى أحدا ينظر في الرأي إلا وفي قلبه دغل والحديث الضعيف أحب إلي من الرأي" .
قال السخاوي: وكذا ذكر ابن حزم أنَّ جميع الحنفية مجمعون على أن مذهب أبي حنيفة رحمه الله أنَّ ضعيف الحديث أولى عنده من الرأي والقياس ..
وزاد الحافظ ابن حجر شرطاً رابعًا، وهو: ألا يشهر العمل به، وقال: وينبغي مع ذلك اشتراط أن يعتقد العامل كون ذلك الحديث ضعيفا، وأن لا يشهر بذلك، لئلا يعمل المرء بحديث ضعيف، فيشرع ما ليس بشرع، أو يراه بعض الجهال فيظن أنه سنة صحيحة.
وقد صرح بمعنى ذلك الأستاذ أبو محمد بن عبدالسلام وغيره، وليحذر المرء من دخوله تحت قوله صلى الله عليه وسلم: "من حدث عني بحديث يرى أنه كذب فهو أحد الكذابين"، فكيف بمن عمل به، ولا فرق في العمل بالحديث في الأحكام، أو في الفضائل، إذ الكل شرع أهـ .
وهذا الشرط لم يذكره تلميذه السخاوي ولا السيوطي، وهو محل تأمل، إذ كيف يعمل به دون أن يشهره، ثم هؤلاء الأئمة الذين بنوا مذاهبهم بالفقه على أحاديث ضعيفة بالباب قد أعلنوها وشهروها وصيروها مذاهبهم، وقد نقل هو ذلك عنهم في تنكيته على ابن الصلاح، ثم في استدلاله بحديث: من حدث عني بحديث..الخ، خروج عن محل النزاع فإن الكلام في الحديث الضعيف وليس في الموضوع.
قلت: ومما يستروح له في هذه المسألة قول النبي صلى الله عليه وسلم: «حدثوا عن بني إسرائيل ولا حرج»، فقد أذن بالتحديث عنهم، وذلك غالبا مما فيه عبرة وعظة وترغيب وترهيب، وأخبار بني إسرائيل على طبقات ثلاث: ما علمنا صدقه، فهذا مثل الضعيف الذي انجبر وحسن، وما علمنا كذبه فهذا كالموضوع لا تجوز روايته إلا ببيان حاله، وما كان بينهما فالإذن العام منه صلى الله عليه وسلم يقتضي جواز روايته، وهذا مثل الضعيف الذي لا نعلم أنه موضوع.
قال ابن تيمية: قول أحمد بن حنبل: إذا جاء الحلال والحرام شددنا في الأسانيد؛ وإذا جاء الترغيب والترهيب تساهلنا في الأسانيد؛ وكذلك ما عليه العلماء من العمل بالحديث الضعيف في فضائل الأعمال....نظير هذا قول النبي صلى الله عليه وسلم في الحديث الذي رواه البخاري عن عبدالله بن عمرو: (بلغوا عني ولو آية وحدثوا عن بني إسرائيل ولا حرج ومن كذب علي متعمدا فليتبوأ مقعده من النار) مع قوله صلى الله عليه وسلم في الحديث الصحيح: (إذا حدثكم أهل الكتاب فلا تصدقوهم ولا تكذبوهم) فإنه رخص في الحديث عنهم ومع هذا نهى عن تصديقهم وتكذيبهم فلو لم يكن في التحديث المطلق عنهم فائدة لما رخص فيه وأمر به ولو جاز تصديقهم بمجرد الإخبار لما نهى عن تصديقهم؛ فالنفوس تنتفع بما تظن صدقه في مواضع .
ومساواته بين الحديث الضعيف وبين المنامات وكلمات السلف والعلماء غير مستقيمة، فالضعيف فيه احتمال الرفع، وذاك - مهما بلغ - دونه بكثير، وليس قصدي من النقل تقريره فيما ذكر، بل تنظيره العمل به بحديث: وحدثوا عن بني إسرائيل ولا حرج، وذلك واضح لمن تأمل.
نعم، هذا المنقول عن الأئمة - ولا سيما أحمد في العمل بالحديث الضعيف وتقديمه على الرأي - تأوَّلَه ابن تيمية وابن القيم على الحديث الحسن، وأبعدا في ذلك.
قال شيخ الإسلام ابن تيمية رحمه الله: وأما نحن فقولنا إنَّ الحديث الضعيف خير من الرأي ليس المراد به الضعيف المتروك، لكن المراد به الحسن، كحديث عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده، وحديث إبراهيم الهجري، وأمثالهما ممن يحسن الترمذي حديثه أو يصححه، وكان الحديث في اصطلاح مَنْ قبل الترمذي إمَّا صحيح وإمَّا ضعيف، والضعيف نوعان، ضعيف متروك، وضعيف ليس بمتروك، فتكلم أئمة الحديث بذلك الاصطلاح، فجاء من لا يعرف إلا اصطلاح الترمذي فسمع قول بعض الأئمة: الحديث الضعيف أحب إليَّ من القياس، فظن أنه يحتج بالحديث الذي يضعفه مثل الترمذي، وأخذ يرجح طريقة من يرى أنه اتبع للحديث الصحيح، وهو في ذلك من المتناقضين الذين يرجحون الشيء على ما هو أولى بالرجحان منه إن لم يكن دونه. اهـ. وهذا القول فيه نظر، والصواب قول الجمهور
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৪৪৩২৪
ফিতনা সম্পর্কে হযরত হুযাইফা রাযি. কতৃক বর্ণিত হাদীসের রেফারেন্স প্রসঙ্গে।
৩১ অক্টোবর, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ইফতা বিভাগ
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে