স্বামীর ভালবাসা অর্জনের কার্যকরী উপায়
প্রশ্নঃ ৬৭৯১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি আমার স্বামীর মনের মতো মানুষ হব কীভাবে? দয়াকরে মাসালা টা দিয়ে দিবেন।
২৫ জুন, ২০২৪
কালকিনি
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
স্বামীর ভালবাসা অর্জনের কার্যকরী কয়েকটি উপায়।
১. স্বামী ঘুম থেকে উঠার আগে নিজে উঠে পরিপাটি হয়ে নিন। যাতে স্বামী আপনাকে সকাল বেলায় অপরিপাটি না দেখে। এ সময় সুগন্ধি ব্যবহার করুন। যাতে সকালে আপনাকে দেখেই আপনার স্বামীর মন ভরে যায়।
২. তার ঘুম যেভাবে ভাঙ্গালে পছন্দ করবে, সেভাবে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলুন। তাকে শুনিয়ে ঘুম থেকে উঠার দোয়া পড়ুন।
৩. তার প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করে তবেই অন্য কাজে যাবেন। সে তার কাজে যাওয়ার সময় কপালে আর বুকে দুইটা......... দিয়ে সালাম দিয়ে "ফী আমানিল্লাহ" বলে বিদায় দিন।
৪. সে কখন বাসায় আসতে পারে তা অনুমান করে পরিপাটি হয়ে থেকে তার অপেক্ষা করুন এবং সে আসার সাথে সাথে দরজা খুলে দিয়ে সালামের জবাব দিন। তিনি সালাম না দিয়ে থাকলে আপনি হাসিমুখে সালাম দিন। মুচকি হেসে আগ বাড়িয়ে হাতের ব্যাগ নিজ হাতে তুলে নিন। তার সাথে কথা বলার সময় সর্বদা হাসি মুখে কথা বলুন।
৫. তার সামনে কখনো গন্ধ নিয়ে যাবেন না। সবসময় একটা সুঘ্রাণ রাখুন নিজের শরীরে।
৬. পরিপূর্ণ পর্দা করুন।
৭. স্বামীকে তাহাজ্জুদ এবং ফজরের নামাযের জন্য ডেকে দিন। আল্লাহর তরফ হতে স্বামীর হৃদয়ে আপনার প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা জন্ম নিবে ইনশাআল্লাহ।
৮. স্বামীর মনে কখনো আঘাত দিয়ে কথা বলবেন না।
৯. কখনো স্বামীকে নিজের উপর রাগ হতে দিবেন না বরং স্বামী যে ইশারায় চালাতে চায় সে ইশারায় চলুন (আল্লাহর নাফরমানীর কাজ ব্যতিত)।
১০. স্বামী কোন কাজ করতে আদেশ করলে সাথে সাথে হাসিমুখে কাজ করে দিন।
১১. স্বামীর কাছে থাকাকালীন তার অনুমতি ব্যতিত কোন নফল ইবাদাত করবেন না। স্বামীর খেদমত অন্যান্য নফল ইবাদাত থেকেও উত্তম।
১২. স্বামীর কাছে পৃথিবীর কোন মানুষের গীবত করবেন না।
১৩. স্বামীর হুকুম ছাড়া স্বামীর মাল থেকে কাউকে ঋণ দেয়া অথবা দান করা থেকে বিরত থাকুন।
১৪. স্বামীর কোন দোষের কথা পৃথিবীর কোন মানুষকে না বলা। বরং স্বামীর মাথা যখন একদম ঠান্ডা থাকবে তখন স্বামীকে হাসিমুখে বিনয়ের সহিত তার ভুল ধরিয়ে ও সুধরে দেওয়ার চেষ্টা করুন।
১৫. স্বামীর কোন কাজ নিজের মতের বিরুদ্ধে হলেও তর্ক না করবেন না।
১৬. স্বামী আপনার জন্য অল্প মূল্যে কিছু নিয়ে আসলেও "জাযাকাল্লাহু খাইরান" বলে শুকরিয়া জ্ঞাপন করুন এবং এমন একটা ভাব করুন যেন এটা আপনার কাছে ভীষণ পছন্দ হয়েছে। এতে পুরুষেরা স্বস্তি পায়।
১৭. স্বামীর বাড়িতে যতই কষ্ট থাকুক, স্বামীর সাথে সমাধানের চেষ্টা করুন। কখনও হা-হুতাশ করে স্বামীকে কষ্ট দিবেন না।
ফরয নামাযের পর এবং দৈনিক ন্যূনতম দু'রাকা'আত সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চেয়ে দোয়া করুন। তিনি অবশ্যই কষ্ট লাঘব করবেন ইনশাআল্লাহ।
১৮. স্বামীর মেজাজ বুঝে ব্যবহার করুন। তার মুখে হাসি থাকলে আপনিও হাসুন। আর তার মন কোন কারণে খারাপ থাকলে আপনিও তার মন খারাপের ভাগিদার হোন। মন খারাপের সময় হেসে এটা প্রকাশ করবেন না যে তার মন খারাপে আপনার কিছু যায় আসে না। আর মেজাজ খারাপ থাকলে একদম চুপ থাকবেন।
১৯. স্বামী আপনাকে যে টাকা দিবে তার পুরোপুরি হিসাব তাকে দিয়ে দিন। আপনার ওপর একটা অন্য রকম বিশ্বাস সৃষ্টি হবে ইনশাআল্লাহ।
২০. শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করুন। শ্বশুরবাড়ির সকলকে ভালোবাসুন।
২১. স্বামী যখন আপনার সঙ্গে ঘরোয়া কাজে অংশগ্রহণ করবেন সাধ্যমতো তাকে সহযোগিতা করুন। তার কাজের প্রশংসা করুন। ভুলগুলো পরে মোক্ষম সময়ে বুঝিয়ে দিন।
২২. ঘরের কাজ কারো জন্য ফেলে রাখবেন না।
২৩. স্বামী তার বাবা-মায়ের কাছে টাকা দিলে তা নিয়ে মন খারাপ করবেন না। তাদের ছেলের টাকা তারা নিবে না তো কে নিবে? আপনার প্রাপ্য আপনাকে সঠিকভাবে দিলেই আলহামদুলিল্লাহ।
২৪. স্বামী সফর থেকে ফিরলে তৎক্ষণাৎ আনন্দ প্রকাশ করে তার খেদমতে একটু বাড়তি মনোযোগ দিন। কিছুক্ষণ পর শান্ত হলে তারপর আপনার মনে জমিয়ে রাখা প্রশ্নগুলো করতে পারবেন।
২৫. স্বামী আকার-ইঙ্গিতে সহবাসের আগ্রহ প্রকাশ করলে (শরঈ ওযর না থাকলে) আগ্রহের সঙ্গে সাড়াদিন।
মনে রাখবেন, স্বামী বিছানায় ডাকলে স্ত্রী বিনা ওজরে অমত করলে ফেরেশতারা এই স্ত্রীর উপর লা'নত করতে থাকে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের বোনদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন।
আমীন।
والله اعلم بالصواب
ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১