আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কাজা নামাজ কি আদায় করতে হয় না?

প্রশ্নঃ ৫৮৮১. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ছোট থেকে জেনে আসতেছি যে নামাজ গুলো কাযা হইয়া গেছো সেগুলো আদায় করতো হবো। কিন্তু জনৈক বক্তা টিভিতে ও ফেসবুক এর ভিডিও তে বলতে শুনছি উদাহরণ শোনো উনি বলেসছেন ...... তিনি বললেন ........ মানুষ যদি কয়েক বেলা না খায় এর পর যদি উনি না খাও খবার গুলো এক শটে খেতে চান অর্থে এক বেলার খবার আরেক বেলা খেতে চান তাহোলে কি এতো শম্ভভ হবে ? হোবে না .... এতা ওনার মোট ........ ওনার মোট হোকে মানুষ নামাজ না আদা কোরলে সেটা সে তার নামাজে ধংশো কোরি ফেলো .... ওনোক বড় পাপ কোরি ফেলো .... তাই তার উচিৎ হোবে তিনি জেনো তওবা করে এবং আল্লাহর কাসে মাফ চান… তওবা করে এবং মাফ চায় কাজা পরতে হবে না .... কাজা নামাজ এর কোন সিস্টেম নাই ..... এখোনে আমি দিধা দন্দ আছি কি করবো ..... দয়াকরে..... শেখ ই প্রশ্ন উত্তর দিন .....,

৩ জানুয়ারী, ২০২৪

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


দ্বীনের বিধি-বিধান সবগুলোকে যুক্তিতর্কের আলোকে বুঝতে গেলে এই ধরনের সমস্যা হবে। দ্বীনের বিধি-বিধান এসেছে আসমানের উপর থেকে, আল্লাহর কাছ থেকে।
অপর দিকে যুক্তিতর্ক মস্তিষ্ক প্রসূত। মস্তিষ্কের খাদ্য মাটি থেকে উৎপন্ন। বিধায় আসমানে বিধান সবগুলো মস্তিষ্ক দিয়ে বোঝা সম্ভব নয়।
আপনি গত ছয় মাস ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেননি। বিদ্যুতের লাইন কাটতে আসলে আপনি কী করবেন?
পৃথিবীতে শুধু ভাত খাওয়ার উদাহরণ হয়? আর কি উদাহরণ হতে পারে না?
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, যেখানে হাদীস থেকে সরাসরি প্রমাণ রয়েছে, সেখানে মস্তিষ্ক থেকে এ ধরনের উদ্ভট কথা প্রসব করার কী প্রয়োজন?

এ বিষয়টি সর্বজন স্বীকৃত যে, হুকূকুল ইবাদ বা বান্দার হক বিনষ্ট করা হলে শুধু অনুতপ্ত হওয়া ও ইসতিগফার করাই তাওবার জন্য যথেষ্ট নয়; বরং হকদারের প্রাপ্য আদায় করাও তাওবার অপরিহার্য অংশ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক সহীহ হাদীসে ‘আল্লাহর হক্ব’কে বান্দার হক্বের সাথে তুলনা করে বলেন- دين الله احق بالوفاء ‘আল্লাহর হক্ব বিনষ্ট হলে তা আদায় করা (বান্দার হক্বের চেয়ে) অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।’ অতএব আলোচ্য মাসআলাতে নামাযের কাযা আদায় করা ‘তাওবা’রই অংশ। কৃতকর্মের উপর অনুতপ্ত হওয়া, আল্লাহর দরবারে ক্ষমা পার্থনা করা , আগামীতে এ কাজ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প হওয়া এবং ছুটে যাওয়া নামাযসমূহ আদায় করা- এসব মিলেই ব্যাক্তির তাওবা পূর্ণ হবে। অতএব তাওবাই যথেষ্ট কথাটি ঠিক, কিন্তু মনে রাখতে হবে তওবার মধ্যে কাযা হয়ে যাওয়া নামাযসমূহ আদায় করাও অন্তর্ভুক্ত । শরীয়তের দলীলসমূহ দ্বারা তাই প্রমাণ হয় এবং এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমাও হয়েছে।

নিম্নের হাদীসটি দেখুন। যদি নামাযের ওয়াক্ত চলে গেলে তা আর পড়া লাগতোনা, তবে নবীজি কেন রাতের বেলায় চার ওয়াক্ত একসঙ্গে কাযা পড়তে গেলেন?
নবীজি তো বলতে পারতেন, চলো ভাই, আমাদের নামাযগুলো চলে গেছে। আমরা আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নেই।

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ نَافِعِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ إِنَّ الْمُشْرِكِينَ شَغَلُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَرْبَعِ صَلَوَاتٍ يَوْمَ الْخَنْدَقِ حَتَّى ذَهَبَ مِنَ اللَّيْلِ مَا شَاءَ اللَّهُ فَأَمَرَ بِلاَلاً فَأَذَّنَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الظُّهْرَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْمَغْرِبَ ثُمَّ أَقَامَ فَصَلَّى الْعِشَاءَ ‏"‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَجَابِرٍ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَبْدِ اللَّهِ لَيْسَ بِإِسْنَادِهِ بَأْسٌ إِلاَّ أَنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ لَمْ يَسْمَعْ مِنْ عَبْدِ اللَّهِ ‏.‏ وَهُوَ الَّذِي اخْتَارَهُ بَعْضُ أَهْلِ الْعِلْمِ فِي الْفَوَائِتِ أَنْ يُقِيمَ الرَّجُلُ لِكُلِّ صَلاَةٍ إِذَا قَضَاهَا وَإِنْ لَمْ يُقِمْ أَجْزَأَهُ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ الشَّافِعِيِّ ‏.‏

আবূ উবাইদা ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত:
তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে (লড়াইয়ে বিব্রত করে) চার ওয়াক্ত নামায হতে নিবৃত্ত রাখে। পরিশেষে আল্লাহর ইচ্ছাই যখন কিছু রাত চলে গেল তখন তিনি বিলাল কে আযান দেওয়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি আযান দিলেন এবং ইক্বামাত বললেন৷ তিনি (রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) যুহরের নামায আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি আসরের নামায আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি মাগরিবের নামায আদায় করালেন। অতঃপর বিলাল ইক্বামাত দিলে তিনি ‘ইশার নামায আদায় করালেন।
জামে' আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৭৯

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ ইসহাক মাহমুদ
মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

১৩৮৬৯

শিশুর নামাজেরও এহতেমমা করা উচিত


২৬ আগস্ট, ২০২৪

শিবগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুসলিম বাংলা ফাতওয়া বিভাগ

২৫০১২

বিতর নামাযের ওয়াক্ত


২৪ নভেম্বর, ২০২২

পঞ্চগড়

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী মুহাম্মাদ রাশেদুল ইসলাম

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy