আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

প্রশ্নঃ ৪৬০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমাদের মহল্লার মসজিদে রমযানের শেষ দশকে রাত ১২টার পর জামাতের সাথে ০৮/১০/১২/১৪ রাকাত করে কিয়ামুল লাইল-এর নামায আদায় করা হয় এবং তাতে পূর্ণ ৩০ পারা পড়া হয়। ইমাম সাহেব ফতোয়া দিয়েছেন, রমযানের শেষ দশকের জামাতবদ্ধ এই নফল নামায মাকরূহ হবে না। তিনি মক্কা ও মদীনাকে দলীল হিসাবে ব্যবহার করেছেন। আমার জানার বিষয় হল, উক্ত নফল নামাযের জামাতটা শরীয়তে বৈধ হবে কি না? বিস্তারিত দলীলসহ জানালে উপকৃত হব। পুনশ্চ : উক্ত জামাতের জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা হয় এবং ইমাম সাহেব মাইকে নামায পড়ান।,

২৮ অক্টোবর, ২০২০

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায, জুমা ও দুই ঈদের নামাযে জামাতের বিষয়টি অতিব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া তারাবীহ, রমযানের বিতর, ইস্তেসকা (বৃষ্টির জন্য নামায) এবং সূর্যগ্রহণের নামাযের জামাতও হাদীস-আসার দ্বারা প্রমাণিত এবং সুন্নাহর অন্তর্ভুক্ত। আর তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য সুন্নত ও সকল প্রকার নফল নামায একাকী পড়াই সুন্নাহসম্মত কাজ। এগুলোর ক্ষেত্রে জামাতের বিধান নেই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খোলাফায়ে রাশেদীনের আমল এমনই ছিল। তাঁরা এজাতীয় নামায একাকী আদায় করতেন। আর সম্ভব হলে এসব নামায ঘরে পড়াই বেশি উত্তম। হযরত আবদুল্লাহ বিন সা‘দ রা. থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, তিনি বলেন-

سَأَلْتُ رَسُولَ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ عَنِ الصّلَاةِ فِي بَيْتِي وَالصّلَاةِ فِي الْمَسْجِدِ قَالَ: قَدْ تَرَى مَا أَقْرَبَ بَيْتِي مِنَ الْمَسْجِدِ، فَلَأَنْ أُصَلِّيَ فِي بَيْتِي أَحَبّ إِلَيّ مِنْ أَنْ أُصَلِّيَ فِي الْمَسْجِدِ إِلَا أَنْ تَكُونَ صَلَاةً مَكْتُوبَةً.

আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘরের নামায এবং মসজিদের নামাযের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তুমি দেখছ, মসজিদ আমার ঘরের এত নিকটে হওয়া সত্ত্বেও ফরয নামায ব্যতীত অন্যান্য নামাযগুলো আমি ঘরে পড়তেই ভালোবাসি। -শামায়েলে তিরমিযী, হাদীস ২৮০

পুরো নবী-যুগে দু-একটি ঘটনা এমন পাওয়া যাবে, যেখানে নফল নামাযের জামাতের কথা আছে। তাও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো একাকী নফল নামায শুরু করার পর অন্য কেউ পাশে ইকতেদা করেছেন অথবা ঘটনাচক্রে ২/৩ জনের জামাত হয়েছে। নিয়মিত নফল নামাযের জামাত, মানুষকে সেজন্য আহ্বান করা এবং নফলের জামাতে কুরআন মাজীদ খতম করার কোনো দৃষ্টান্ত আমাদের জানামতে হাদীস-আসার এবং সীরাত ও তারিখের কিতাবাদিতে নেই। এসব দলীলের আলোকে ফিকহে হানাফীর ফতোয়া হল, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং খাইরুল কুরুনের অনুসরণে কিয়ামুল লাইল অর্থাৎ তাহাজ্জুদ নামায একাকী পড়াই সুন্নাত। এতে জামাতের পাবন্দি করা বিশেষত মসজিদে জামাতের সাথে পড়া অনুত্তম। অবশ্য কেউ একাকী নফল শুরু করার পর এমনিতেই দু-একজন তার ইকতেদা করলে তা ভিন্ন কথা।

আর হারামাইন শরীফাইনে জামাতসহ কিয়ামুল লাইল পড়াটা ফিকহে হাম্বলীর ফাতওয়া অনুযায়ী। সেখানকার ইমামগণ সাধারণত হাম্বলী মাযহাব অনুসরণ করে থাকেন। আর নফল নামাযের জামাত হাম্বলী মাযহাবে জায়েয। কিন্তু হাদীস-আসারের দলিল দ্বারা যেহেতু এক্ষেত্রে হানাফী মাযহাবের মত অধিক শক্তিশালী তাই হানাফী মাযহাব অনুসরণকারীদের হারামাইনের কথা বলে ভিন্ন আমলের দিকে ডাকা কোনোক্রমেই শুদ্ধ হতে পারে না।


والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ মাসিক আলকাউসার

প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৩২৪২৬

ফজরের আজানের পর ঘুম ভাঙ্গলে রোজা রাখার নিয়ম


৬ এপ্রিল, ২০২৩

R৬VH+PGV

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

৯০৪৯৬

যেসকল কারণে রোযা না রাখা বা ভেঙ্গে ফেলা জায়েজ


২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সুনামগঞ্জ, Chittagong, Bangladesh

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৫৮৬২৭

রমজানের একটি গুনাহও কি ৭০ টি গুনাহের সমান?


২৫ মার্চ, ২০২৪

রাঙ্গুনিয়া

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৩২৩৬৬

সাহরি ও আযানের মধ্যবর্তী সময়ে কিছু খাওয়া যাবে কি?


১০ এপ্রিল, ২০২৩

মুন্সিগঞ্জ

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy