আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কুনুতে নাজেলা’ পড়ার নিয়ম

প্রশ্নঃ ৪৩১৬২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হজরত আমার দুটি প্রশ্ন প্রথম প্রশ্ন হলোঃ- কুনুতে নাজেলা’ পড়ার নিয়ম কি..? এবং কুনুতে নাজেলা’ পড়ার সময় দুই হাত তুলতে হবে কি না..?

১৬ অক্টোবর, ২০২৩
দুর্গাবাড়ি রাস্তা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলাম এবং মুসলমানেরা বিশেষ কোনো বিপদে পড়লে বিপদ থেকে মুক্তির জন্য কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম রয়েছে। শত্রুর থেকে রক্ষা, শত্রুর হেদায়েত কামনা অথবা তার ধ্বংস কামনার জন্য কুনুতে নাজেলা পড়া মুস্তাহাব। তবে কঠিন বিপদ, যুদ্ধকালীন সময় বা এমন বিপদ সংকুল পরিস্থিতিতেই শুধু কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম।


রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদের সময় ফজরের নামাজেরর দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন সময় কুনুতে নাজেলা পড়েছেন।

- حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، قَالَ: حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، قَالَ: سَأَلْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنِ القُنُوتِ، فَقَالَ: قَدْ كَانَ القُنُوتُ قُلْتُ: قَبْلَ الرُّكُوعِ أَوْ بَعْدَهُ؟ قَالَ: قَبْلَهُ، قَالَ: فَإِنَّ فُلاَنًا أَخْبَرَنِي عَنْكَ أَنَّكَ قُلْتَ بَعْدَ الرُّكُوعِ، فَقَالَ: «كَذَبَ إِنَّمَا قَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعْدَ الرُّكُوعِ شَهْرًا، أُرَاهُ كَانَ بَعَثَ قَوْمًا يُقَالُ لَهُمْ القُرَّاءُ، زُهَاءَ سَبْعِينَ رَجُلًا، إِلَى قَوْمٍ مِنَ المُشْرِكِينَ دُونَ أُولَئِكَ، وَكَانَ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَهْدٌ، فَقَنَتَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَهْرًا يَدْعُو عَلَيْهِمْ»

৯৪৮। মুসাদ্দাদ (রাহঃ) ......... আসিম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) কে কুনূত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, কুনূত অবশ্যই পড়া হত। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, রুকূ’র আগে, না পরে? তিনি বললেন, রুকুর আগে। আসিম (রাহঃ) বললেন, অমুক ব্যক্তি আমাকে আপনার বরাত দিয়ে বলেছেন যে, আপনি বলেছেন, রুকুর পরে। তখন আনাস (রাযিঃ) বলেন, সে ভুল বলেছে। রাসূল (ﷺ) রুকূর পরে একমাস ব্যাপি কুনূত পাঠ করেছেন। আমার জানামতে, তিনি সত্তর জন সাহাবীর একটি দল, যাদের কুররা (অভিজ্ঞ ক্বারীগণ) বলা হতো, মুশরিকদের কোন এক কওমের উদ্দেশ্যে পাঠান। এরা সেই কওম নয়, যাদের বিরুদ্ধে রাসূল (ﷺ) বদদু'আ করেছিলেন। বরং তিনি একমাসব্যাপি কুনূতে সেসব কাফিরদের জন্য বদদু'আ করেছিলেন যাদের সাথে তার চুক্তি ছিল এবং তারা চুক্তি ভঙ্গ করে ক্বারীগণকে হত্যা করেছিল।

আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ (সহীহ বুখারী)
হাদীস নং: ৯৪৮ আন্তর্জাতিক নং: ১০০২

হাদীসের লিংকঃ https://muslimbangla.com/hadith/948



কুনুতে নাজেলা পড়ার নিয়ম

ফজরের নামাজের ফরজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকু থেকে উঠে ইমাম আওয়াজ করে কুনুতে নাজেলা পড়বেন, এ সময় মুসল্লিরা আস্তে আস্তে আমীন বলবেন। দোয়া শেষে নিয়ম অনুযায়ী নামাজের অবশিষ্ট সেজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদির মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন।

কুনুতে নাযিলা পড়ার সময় হাত বেঁধে রাখবে

কুনুতে নাযিলা পড়ার সময় হাত বেঁধে রাখাই উত্তম। তবে কোনো কোনো ফকীহ হাত ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেছেন। তাই এ নিয়ে বিতর্ক করা ঠিক নয়।


কুনুতে নাজিলা

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَنَا ، وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ وَالْمُسْلِمِينَ وَالْمُسْلِمَاتِ ، وَأَلِّفْ بَيْنَ قُلُوبِهِمْ ، وَأَصْلِحْ ذَاتَ بَيْنِهِمْ ، وَانْصُرْهُمْ عَلَى عَدُوِّكَ وَعَدُوِّهِمْ، اللَّهُمَّ الْعَنْ كَفَرَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ الَّذِينَ يَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِكَ ، وَيُكُذِّبُونَ رُسُلَكَ ، وَيُقَاتِلُونَ أَوْلِيَاءَكَ اللَّهُمَّ خَالِفْ بَيْنَ كَلِمَتِهِمَ ، وَزَلْزِلْ أَقْدَامَهُمْ، وَأَنْزِلْ بِهِمْ بَأْسَكَ الَّذِى لاَ تَرُدُّهُ عَنِ الْقَوْمِ الْمُجْرِمِينَ اللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُثْنِى عَلَيْكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ، وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَفْجُرُكَ اللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّى وَنَسْجُدُ، وَلَكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ ، نَخْشَى عَذَابَكَ الْجَدَّ، وَنَرْجُو رَحْمَتَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكَافِرِينَ مُلْحَقٌ.

والله اعلم بالصواب

মুফতি জাওয়াদ তাহের মুহাদ্দিস, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর ঢাকা

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন