আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

ফ্রি ফায়ার খেলা হালাল না হারাম?

প্রশ্নঃ ৪১৫০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ফ্রি ফায়ার খেলা হালাল না হারাম??

১৩ অক্টোবর, ২০২৩
বরিশাল

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


বর্তমানে বহুল আলোচিত পাবজি গেম যুবক ও কিশোর শ্রেণীকে নেশাগ্রস্ত, মোহগ্রস্ত করে দিয়েছে। এতে তাদের মেধা মস্তিষ্ক বিকৃতকরণ চলছে। দুয়েকজন এর ক্ষতি সম্পর্কে বুঝতে পেরে এই নেশা থেকে বের হতে চেয়েও বের হতে পারছে না। এতে সময়, মেধা ও পয়সা অপচয় হয়। অপচয়কারী শয়তানের ভাই। শরীয়তে অপচয় করাকে হারাম ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি নিজের ক্ষতি করা বা কারো পক্ষ থেকে ক্ষতির শিকার হওয়া শরীয়ত হারাম ঘোষণা করেছে।
অতএব খেলা বা বিনোদনের নামে এই নেশায় মত্ত হওয়ার সুযোগ নেই।

یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّکُلُوۡا وَاشۡرَبُوۡا وَلَا تُسۡرِفُوۡا ۚ  اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ٪

হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও, খাও ও পান কর এবং অপব্যয় করো না। তিনি অপব্যয়ীদেরকে পছন্দ করেন না।
-সূরা আ'রাফ ৩১

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، - يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ - عَنْ دَاوُدَ بْنِ بَكْرِ بْنِ أَبِي الْفُرَاتِ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَا أَسْكَرَ كَثِيرُهُ فَقَلِيلُهُ حَرَامٌ ‏"‏ ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে জিনিসের অধিক পরিমাণ পান করলে নেশা সৃষ্টি হয় তার সামান্য পরিমাণও হারাম।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬৮১

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَنْبَأَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ جَابِرٍ الْجُعْفِيِّ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ لاَ ضَرَرَ وَلاَ ضِرَارَ ‏"‏ ‏.‏

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ "ক্ষতি করাও যাবে না, ক্ষতি সহাও যাবে না।
সুনানু ইবনে মাজাহ ২৩৪১

حَدَّثَنِي خَالِدُ بْنُ زَيْدٍ قَالَ : كَانَ عُقْبَةُ يَأْتِينِي فَيَقُولُ : اخْرُجْ بِنَا نَرْمِي. فَأَبْطَأْتُ عَلَيْهِ ذَاتَ يَوْمٍ، أَوْ تَثَاقَلْتُ، فَقَالَ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ : " إِنَّ اللَّهَ يُدْخِلُ بِالسَّهْمِ الْوَاحِدِ ثَلَاثَةً الْجَنَّةَ ؛ صَانِعَهُ الْمُحْتَسِبَ فِيهِ الْخَيْرَ، وَالرَّامِيَ بِهِ، وَمُنْبِلَهُ ، فَارْمُوا وَارْكَبُوا، وَلَأَنْ تَرْمُوا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ تَرْكَبُوا، وَلَيْسَ مِنَ اللَّهْوِ إِلَّا ثَلَاثٌ ؛ مُلَاعَبَةُ الرَّجُلِ امْرَأَتَهُ، وَتَأْدِيبُهُ فَرَسَهُ، وَرَمْيُهُ بِقَوْسِهِ، وَمَنْ عَلَّمَهُ اللَّهُ الرَّمْيَ، فَتَرَكَهُ رَغْبَةً عَنْهُ فَنِعْمَةً كَفَرَهَا ".

খালিদ ইবনে যায়েদ রাহ. বললেন, উক্ববাহ রাযি. আমাদের কাছে আসতেন। বলতেন, আমাদের সাথে চলো, আমরা তীরন্দাজি করব। একদিন আমি বের হতে দেরী করলাম অথবা ঢিলেমি করলাম।
তিনি বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা একটি তীরের মুকাবিলায় তিনজন লোককে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। প্রস্তুতকারকঃ যে এর দ্বারা কল্যাণ ও সওয়াবের আশা রাখে। তীর নিক্ষেপ কারি। তীর এগিয়ে দেয়ায় সহযোগিতা কারী।
সুতরাং তোমরা তীর নিক্ষেপ শিখো, ঘোড় সওয়ারী শেখো। অবশ্যই তীরন্দাজি শিক্ষা করা ঘোড় সওয়ারী শিক্ষা করার তুলনায় আমার কাছে বেশি প্রিয়।
তিনটি খেলা ছাড়া বাকিগুলো অনর্থক। স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে খেলা করা। ঘোড়াকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দেয়া এবং তীরন্দাজি করা। যে ব্যক্তি তীরন্দাজি শিখলো, অতঃপর অবজ্ঞা বশতঃ তা ছেড়ে দিল, সে একটি নেয়ামত অস্বীকার করল।
মুসনাদ আহমাদ ১৭৩২১

والله اعلم بالصواب

ইসহাক মাহমুদ, মুফতী ও মুহাদ্দিস, জামিআ মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়া, মোহাম্মদপুর
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন