আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

পৃথিবীতে মানুষের দায়িত্ব

প্রশ্নঃ ৩৬৬৮৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আল্লাহ্ তায়ালা কি কি দায়িত্ব দিয়ে পৃথিবীতে আমাদের পাঠিয়েছেন ।জাযাকুমুল্লাহু খায়ের

২৬ জুলাই, ২০২৩
৮০১৪৬ Napoli NA

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


আদম (আ.)-এর আগে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর বুকে জ্বিনজাতি সৃষ্টি করেছেন। লক্ষলক্ষ বছর ধরে তারা এ পৃথিবী ভোগ-দখল করেছে এবং তাদের পথ প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ তায়ালা যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু যখন তারা পৃথিবীর বুকে মারাত্মক ফিৎনা ফাসাদ সৃষ্টি করল তখন আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি অসন্তুুষ্ট হয়ে তাদেরকে পৃথিবীর সরল জমিন থেকে হটিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন।
তারপর আল্লাহ বললেন পৃথিবীর বুকে আমি “খলিফা” বানাতে চাই। ফেরেশতারা বললেন- আপনি কি এমন এক জাতি সৃষ্টি করবেন যারা পৃথিবীর বুকে অনাসৃষ্টির সম্পাদনা করবে? অথচ আমরা আপনার প্রসংশা ও পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তখন মহান আল্লাহ বললেন- নিশ্চয়ই আমি যা জানি তোমরা তা জাননা। [সূরা বাকারা : ৩০]
আদম সৃষ্টিকরার মূল উদ্দেশ্যে ছিল পৃথিবীর বুকে খিলাফাতের দায়িত্ব পালন করা। আল্লাহ তায়ালা প্রস্তাবেই বলে দিয়েছেন “নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীর বুকে খলিফা প্রেরণ করব; তাই মানব জাতির সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ হচ্ছে খিলাফাতের দায়িত্ব পালন করা আর এই খিলাফাতের অপর নাম বাদশাহী, রাজ্য শাসন, দেশ শাসন।
একজন মানুষ যখন নামাজ আদায় করে, জিকির করে, শরীয়াতের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে তখন সিরাতুল মুস্তাকীমে চলার পথে একটি মানুষের দেহের ইঞ্জিন চালু হয়। তারপর মানবরূপী এ ইঞ্জিনটির পাওয়ার ট্রান্সফার করতে হবে খেলাফাতের দায়িত্ব পালনের উদ্দেশ্যে। মানুষ যদি প্রচলিত ইবাদাত বন্দেগী আদায় করার পর খিলাফাত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে তার শক্তি বিনিয়োগ না করে তবে তার উদাহরণ হবে ঐ ইঞ্জিনের মত যা স্টার্ট করে প্রয়োজনীয় তৈল মবিল ব্যয় করা হচ্ছে অথচ গিয়ারে পাওয়ার ট্রান্সফার করে চাকা ঘুরানো হচ্ছে না।

তাই দেখা যায় মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (স.) মানবরূপী ইঞ্জিনকে মক্কা জীবনের তের বছরে ত্রুটিমুক্ত করেছেন এবং সম্পূর্ণ যোগ্যকরে প্রস্তুত করেছেন। মদিনায় হিজরত করার পর খিলাফাত প্রতিষ্ঠার জন্য পাওয়ার ট্রান্সফার করেছেন। এমনিভাবে মুসলমানরা যতদিন পর্যন্ত খিলাফাতের জন্য তাদের শক্তি বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে ততদিন পর্যন্ত তারা পৃথিবীর সেরাজাতি হিসেবে গণ্য হয়েছে। আর যখন তারা এ দায়িত্ব থেকে দুরে সরতে শুরু করেছে তখন থেকে তাদের অপমানজনক ইতিহাসের সূচনা হয়েছে। অতএব বোঝা গেল যে, মানুষ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে হল খিলাফাতের দায়িত্ব পালন করা, প্রতিষ্ঠিত খিলাফাতকে হেফাজত করা। মানুষের ইবাদাতের সর্বশেষ স্তর হচ্ছে খিলাফাত প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বশক্তি বিনিয়োগ করা।

والله اعلم بالصواب

মুফতি মোহাম্মদ আমীর হোসাইন মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মোহাম্মাদপুর।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর