পণ্য বিক্রি করে পুনরায় তা ক্রেতার কাছ থেকে বিক্রেতা ক্রয় করে নেয়ার হুকুম
প্রশ্নঃ ৩৬৩৪২. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমি শুক্রবারে একটা মোবাইল দশ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি আনছার সাহেবের কাছে। পরে আমি আবার শনিবারে ওই আনছার সাহেবের কাছ থেকেই, ওই মোবাইলটাই এক বৎসরের জন্য বাকি মূল্যে বারো হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। এখন জানার বিষয় হল, উক্ত বেচাকেনা সহিহ হয়েছে কি না? জানালে অনেক উপকৃত হতাম। আল্লাহ্ তায়ালা আপনাদেরকে উত্তম যাযা দান করুন। আমিন।
১৮ জুলাই, ২০২৩
তাড়াইল
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় ভাই, ক্রয়-বিক্রয় ও লেনদেন বাস্তবমুখী কারবার। যা মালিকানা পরিবর্তন ও পণ্য হস্তান্তরের বাস্তবতার সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং আপনি যে মোবাইলটি আনছার সাহেবের কাছে দশ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন আবার সেটিই তার কাছ থেকে বার হাজার টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন; এক্ষেত্রে যদি মোবাইলটি আনছার সাহেবের কাছে হস্তান্তর না করে আপনার কাছে যেভাবে ছিল সেভাবেই রেখে দেন অথবা যদি আপনারা পূর্ব থেকেই এ বিষয়টি ঠিক করে নেন যে, মোবাইলটি পুনরায় আপনার কাছে বিক্রি করে দিতে হবে--তাহলে এটা বাহ্যত ক্রয়-বিক্রয় হলেও উদ্দেশ্যের বিবেচনায় সুদ। তাই এ ধরণের লেনদেন শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম। শরিয়তের দৃষ্টিতে এটাকে বলা হয়, ‘বাই ঈনা’ বা পাতানো ক্রয়-বিক্রয়।
হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
مَنِ ابْتَاعَ طَعَامًا فَلَا يَبِعْهُ حَتّى يَسْتَوْفِيَهُ، قَالَ ابْنُ عَبّاسٍ: وَأَحْسِبُ كُلّ شَيْءٍ مِثْلَهُ
কোনো ব্যক্তি খাবার ক্রয় করলে তা বুঝে পাওয়ার আগে যেন অন্য জায়গায় বিক্রি না করে। হযরত ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, আমি মনে করি, সব পণ্যের ব্যাপারে একই হুকুম প্রযোজ্য। (সহীহ মুসলিম ১৫২৫)
অপর বর্ণনায় এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রাযি. ও আনাস রাযি.-কে ‘বাই ঈনা’ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা উভয়ে উত্তর দেন,
إِنَّ اللهَ لاَ يُخْدَعُ، هَذَا مِمَّا حَرَّمَ اللهُ وَرَسُولُهُ
নিশ্চয় আল্লাহকে ধোঁকা দেয়া যায় না। এটা এমন লেনদেন, যা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ হারাম করেছেন। (তাহযীবুস সুনান ৯/২৪২)
মনে রাখা দরকার যে, কোনো ছুঁতা বা হীলা-বাহানা অবলম্বন করলেই সুদী লেনদেন বৈধ হয়ে যায় না। কারণ শরীয়তে মুআমালাত তথা লেনদেনের ক্ষেত্রে উদ্দেশ্য ও হাকীকতের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই কোন সুদী কারবারের শুধু নাম বদলে দিলেই তা বৈধ হয়ে যায় না।
অতএব মুসলমানের কর্তব্য হল, এ ধরনের হীলা-বাহানার মাধ্যমে উপার্জন না করে শরীয়ত স্বীকৃত পন্থায় লেনদেন করা এবং সামর্থ্য থাকলে করযে হাসানা প্রদান করা।
والله اعلم بالصواب
শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১