আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

অমুসলিমরা কি জাহান্নামে চিরকাল থাকবে?

প্রশ্নঃ ৩৬০৬৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, বিধর্মীরা কি চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকবে? এই বিষয়ে বিস্তারিত রেফারেন্সসহ জানতে চাই।,

৯ জুলাই, ২০২৩

ঢাকা

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


ইসলামের মৌলিক একটি আকিদা হল, জান্নাতের যাওয়ার জন্য ঈমান পূর্বশর্ত। সুতরাং কোনো কাফির-মুশরিক বা বিধর্মী জান্নাতে যাবে না; বরং তারা চিরকালের জন্য জাহান্নামে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
إِنَّ اللّهَ لاَ يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَن يَشَاء وَمَن يُشْرِكْ بِاللّهِ فَقَدِ افْتَرَى إِثْمًا عَظِيمًا
নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। আর যে লোক অংশীদার সাব্যস্ত করল আল্লাহর সাথে, সে যেন অপবাদ আরোপ করল। (সুরা নিসা ৪৮ )
তাফসিরে খাযিনে এসেছে,
ومعنى الآية أن الله لا يغفر لمشرك مات على شركه ويغفر ما دون ذلك لمن يشاء يعني ويغفر ما دون الشرك لمن يشاء من أصحاب الذنوب والآثام. ففي الآية دليل على أن صاحب الكبيرة إذا مات من غير توبة فإنه في خطر المشيئة إن شاء عفا عنه وأدخله الجنة بمنه وكرمه وإن شاء عذبه بالنار ثم أدخله برحمته وإحسانه لأن الله تعالى وعد المغفرة لما دون الشرك فإن مات على الشرك فهو مخلد في النار لقوله تعالى إن الله لا يغفر أن يشرك به ويغفر ما دون ذلك لمن يشاء
আয়াতের মর্মার্থ হল, নিশ্চয় আল্লাহ ওই মুশরিককে ক্ষমা করেন না, যে শিরকের উপর মারা গিয়েছে। তিনি শিরকের চাইতে নিম্ন পর্যায়ের গুনাহ গুনাহগারদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা ক্ষমা করেন। উক্ত আয়াত প্রমাণ করে যে, গুনাহগারব্যক্তি তাওবা ছাড়া মারা গেলে তার বিষয়টি আল্লাহ তাআলার ইচ্ছাধীন—তিনি চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিবেন এবং দয়া করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন; আর চাইলে তাকে শাস্তিও দিতে পারেন এবং অবশেষে দয়া করে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমার প্রতিশ্রুতি শুধুমাত্র শিরক থেকে নিম্ন পর্যায়ের গুনাহর জন্য। সুতরাং কোনো ব্যক্তি শিরকের সঙ্গে মারা গেলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন। (তাফসিরে খাযিন ১/৩৮৭)
এজন্য আল্লাহ তাআলা অন্যত্র বলেছেন,
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ فِي نَارِ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أُولَئِكَ هُمْ شَرُّ الْبَرِيَّةِ
আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম। (সুরা বাইয়্যেনাহ ৬)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُواْ لَوْ أَنَّ لَهُم مَّا فِي الأَرْضِ جَمِيعًا وَمِثْلَهُ مَعَهُ لِيَفْتَدُواْ بِهِ مِنْ عَذَابِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ مَا تُقُبِّلَ مِنْهُمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ يُرِيدُونَ أَن يَخْرُجُواْ مِنَ النَّارِ وَمَا هُم بِخَارِجِينَ مِنْهَا وَلَهُمْ عَذَابٌ مُّقِيمٌ
যারা কাফের, যদি তাদের কাছে পৃথিবীর সমুদয় সম্পদ এবং তৎসহ আরও তদনুরূপ সম্পদ থাকে আর এগুলো বিনিময়ে দিয়ে কিয়ামতের শাস্তি থেকে পরিত্রান পেতে চায়, তবুও তাদের কাছ থেকে তা কবুল করা হবে না। তাদের জন্যে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি রয়েছে। তারা জাহান্নামের আগুন থেকে বের হয়ে আসতে চাইবে কিন্তু তা থেকে বের হতে পারবে না। তারা চিরস্থায়ী শাস্তি ভোগ করবে। (সুরা মায়েদা ৩৬,৩৭)
হাদিসে এসেছে,
ثُمَّ أَمَرَ بِلَالًا فَنَادَى فِي النَّاسِ ، أَنَّهُ لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ إِلَّا نَفْسٌ مُسْلِمَةٌ
অতপর রাসূলুল্লাহ ﷺ বেলাল রাযি.-কে নির্দেশ দিলেন। তাই তিনি লোকদের মাঝে ঘোষণা দিলেন, জান্নাতে কেবল মুসলিম ব্যক্তিই প্রবেশ করবে। (বুখারী ২৮৯৭ মুসলিম ১৬৬)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না।(মুসলিম ৮৪ আবু দাঊদ ৫১৯৩)

والله اعلم بالصواب

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর

মন্তব্য ()

কোনো মন্তব্য নেই।

এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

৭৭১৪৪

নবীর কাছে উম্মতের গুনাহ পেশ করা হয়?


২৪ নভেম্বর, ২০২৪

HHMC+F৪৭ - Old Umm Al Quwain - Umm Al Quawain - সংযুক্ত আরব আমিরাত (AE)

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

৮০০৩৪

সাহাবীর নামে মায়ের অসন্তুষ্টির মিথ্যা গল্প!!


৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রাম

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি

৯০২১৪

রজব শব্দটি মুনসারিফ নাকি গায়রে মুনসারিফ?


২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

৮P৩C+GV৭

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার

৯৩২৮৩

বছরের শুরু শেষ নেসাব ঠিক ছিলো, মাঝে যে সম্পদ বেড়েছে তার যাকাতের জন্য বৎসর পূর্ণ হতে হবে?


৫ মার্চ, ২০২৫

Mahini

question and answer icon

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী

Logoমুসলিম বাংলা
play storeapp store
TopOfStack Software © 2025 All rights reserved. Privacy Policy