আল্লাহর দিদার
প্রশ্নঃ ৩৬০২৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আল্লাহ্ তায়ালাকে কি কেয়ামতের দিন দেখা যাবে? সালাফিরা দাবি করে যেহেতু আল্লাহর হাত,পা , চেহারা ইত্যাদি সব আছে তাই আল্লাহকে দেখা যাবে। যতুটুকু জেনেছি হাদিসগুলো নিয়ে তাহকিক আছে। আশয়ারী মাতুরীদি আকিদায় এ বিষয়ে কি রায় বিস্তারিত জানতে চাই।,
১৮ জুলাই, ২০২৩
বরিশাল
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কিছু লোক নবীজী সা:-কে জিজ্ঞেস করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ, আমরা কি কিয়ামতের দিন তথা পরকালে আল্লাহ তায়ালাকে দেখব?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘কেন নয়, অবশ্যই তোমরা আল্লাহকে দেখবে। আচ্ছা, বলো দেখি- মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে তোমাদের কোনো সমস্যা হয়?’ সাহাবিরা বললেন, ‘না’। তিনি আবার বললেন, ‘আলোকোজ্জ্বল পূর্ণিমার রাতে মেঘহীন আকাশে চাঁদ দেখতে তোমাদের কারো অসুবিধা হয়?’ তারা বললেন, ‘না’। অর্থাৎ চাঁদ-সুরুজের মতোই আল্লাহকে দেখা যাবে। (বুখারি-২৭৭)
কুরআনুল কারিমের দিকে তাকালেও কথাটির সমর্থন পাওয়া যায়। সূরা কিয়ামার ২২-২৩ আয়াতে বলা হয়েছে- ‘সেদিন অনেক চেহারা আলোকিত হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে।’ অন্যত্র বলা হয়েছে- ‘অতএব যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার প্রভুর ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’ (সূরা কাহাফ-১১০)
সুতরাং আল্লাহর দর্শন পাওয়া যাবে এ কথা দৃঢ় সত্য; কিন্তু তা দুনিয়ায় নয়। তাঁকে দেখার মতো চোখ কাউকে দুনিয়ায় দেননি। ইরশাদ হয়েছে, ‘কোনো দৃষ্টি (দুনিয়ায়) তাঁকে বেষ্টন করতে পারে না; কিন্তু তিনি সব দৃষ্টিকে পরিবেষ্টন করে আছেন।’ (সূরা আনআম-১০৩) হজরত মুসা আ: আল্লাহকে দেখার আবদার জানিয়েছিলেন কিন্তু আল্লাহ তায়ালা তা জোর দিয়ে অস্বীকার করে বলেন, ‘লান তারানি- তথা হে মুসা, তুমি কখনো আমাকে দেখতে পাবে না।’ বোঝা গেল দুনিয়ায় আল্লাহকে দেখার সাধ পূরণ হবে না।
তাকে দেখা যাবে পরকালে জান্নাতে। জান্নাতের সব নিয়ামতের মাঝে প্রভুর দর্শনই হবে সর্বাপেক্ষা বড়। সে এক মধুর গল্প। জান্নাতিরা অবস্থান করবে নিজ নিজ আবাসস্থলে। চির শান্তির ঠিকানা পেয়ে আমোদে ফেটে পড়বে সবাই। প্রিয় মানুষ, জান্নাতি হুর-গিলমান নিয়ে মেতে ওঠবে আনন্দে। ঠিক সেই মুহূর্তে একজন ঘোষক ফেরেশতা তাদের ডেকে বলবেন,‘হে জান্নাতিরা তোমাদের সাথে রবের দেয়া একটি অঙ্গীকার এখনো বাকি আছে। তারা অবাক হয়ে শুধাবেন, ‘এখনো আর কী বাকি আছে! দয়াময় কি আমাদের চেহারা উজ্জ্বল করে দেননি? তিনি কি আমাদের জাহান্নাম হতে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করাননি? ফেরেশতা বলবেন, ‘অবশ্যই’। (ইবনে মাজাহ-১৮৭)
তারপর ‘আদন’ নামক জান্নাতে তারা সমবেত হবেন। সেখানে দয়াময়ের চেহারা ও জান্নাতিদের মধ্যে তাঁর মহিমার চাদর ছাড়া কোনো আড়াল থাকবে না। (বুখারি-৭৪৪৪) এরপর আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘হে জান্নাতিরা তোমরা কি চাও আমি তোমাদের অতিরিক্ত আরো নেয়ামত দিই?’ জান্নাতিরা আগের মতোই উত্তর দেবেন- ‘ওগো দয়াময় আপনি কি আমাদের মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করেননি? জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেননি? জান্নাত প্রদান করেননি? কথা বলতে বলতেই আল্লাহ পাক তাঁর পর্দাগুলো সরিয়ে নেবেন। (মুসলিম-৩৩৮) দৃশ্যমান হবেন সমহিমায় জান্নাতিদের সামনে! প্রিয় বান্দারের অভিবাদন জানিয়ে বলবেন- ‘আসসালামু আলাইকুম’। জান্নাতিরা মুখ তুলে তাকিয়ে তাদের রবকে দেখতে পাবেন। দয়াময় আল্লাহও তখন হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় তাদের দিকে তাকাবেন। আল্লাহকে দেখামাত্রই জান্নাতিরা সব নেয়ামতের কথা ভুলে যাবেন। অপলক নেত্রে তাকিয়ে থাকবেন যতক্ষণ না দয়াময় পর্দার আড়ালে যান। (ইবনে মাজাহ-১৮৪)
সে মজলিসে সবার সাথে তিনি কথা বলবেন। এমনকি কারো নাম ধরে বলবেন- ‘হে অমুকের পুত্র অমুক, দুনিয়ায় তুমি এই এই অপরাধ করেছিলে, মনে পড়ে কি? লোকটি বলবে- ‘ওগো দয়াময় আপনি ক্ষমা করে দেননি কি?’ তিনি বলবেন, ‘অবশ্যই ক্ষমা করেছি বলেই তুমি জান্নাতে আসতে পেরেছ। এরপর সবার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে সুঘ্রাণযুক্ত মেঘ-বায়ু। তখন দয়াময় বলবেন, ‘তোমরা সামনে বেড়ে আপ্যায়ন কক্ষে যাও এবং তাতে যা রাখা আছে ইচ্ছামতো নিয়ে নাও। সেটি হবে জান্নাতের একটি বাজার। ফেরেশতারা তা ঘিরে থাকবেন। সেখানে এমন কিছু থাকবে যা কোনো দিন কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান কখনো শুনেনি। (তিরমিজি-২৫৪৯) এভাবেই শেষ হবে সাক্ষাৎপর্ব। জান্নাতের উচ্চ মর্যাদাশীলদের সাথে প্রায়ই প্রভু দেখা দেবেন। তাদের সাথে কথোপকথন করবেন।
ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ তোমাকে তোমার পালনকর্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে কষ্ট স্বীকার করতে হবে, এরপর তাঁর সাক্ষাৎ পাবে।’ (সূরা ইনশিকাক-৬) উল্লেখ্য, এই দেখার স্বরূপ কেমন হবে তা কেবল আল্লাহ পাকই ভালো জানেন। সৃষ্টির কোনো আকৃতিতে হবে না। কারণ কুরআনের বাণী- ‘লাইসা কা মিসলিহি শাই’ তথা তাঁর সাথে কোনো বস্তুর উপমা চলে না। (সূর শুরা-১১
والله اعلم بالصواب
মুহাদ্দীস, শাইখ আবু সাঈদ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার মোহাম্মাদপুর।
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৯০২১৪
রজব শব্দটি মুনসারিফ নাকি গায়রে মুনসারিফ?
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
৮P৩C+GV৭

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী নাঈম সিদ্দীকী বিন আব্দুস সাত্তার
৮১৭৯৯
অমুসলিমের সাথে বর্গা চুক্তি করলে উশর নাকি খারাজ দিবে?
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪
নামবিহীন রাস্তা

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে