ভ্রু প্লাক করেছে এমন গর্ভবতী মায়ের প্রতি উপদেশ
প্রশ্নঃ ৩৪৮৩০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, হুজুর, এক মহিলা ভ্রু প্লাক করেছিল। এই রকম সে বহু বার করেছে। এখন সে জানতে পারে যে, সে অন্তঃসত্ত্বা। এখন যে, সে ভ্রু প্লাক অবস্থায় আছে এতে কি তার সন্তানের ওপর প্রভাব পড়বে। কেননা, যারা ভ্রু প্লাক করে, আল্লাহর নবি তাদেরকে লা'নত দিয়েছেন।
১৪ জুন, ২০২৩
নারায়নগঞ্জ
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রিয় বোন, যে মহিলা ভ্রু প্লাক করেছেন, নিঃসন্দেহে তিনি হারাম কাজ করেছেন। কেননা, হাদিস শরিফে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ الوَاشِمَاتِ وَالمُسْتَوْشِمَاتِ، وَالمُتَنَمِّصَاتِ، وَالمُتَفَلِّجَاتِ لِلْحُسْنِ، المُغَيِّرَاتِ خَلْقَ اللَّهِ تَعَالَى
আল্লাহ তা‘আলা অভিশম্পাত করেছেন সেসব নারীদের উপর যারা দেহাঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করে এবং যারা করায়, তেমনি যারা ভ্রু চেঁছে সরু (প্লাক) করে, যারা সৌন্দর্য মানসে দাঁতের মাঝে ফাঁক সৃষ্টি করে, যারা মহান আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন আনে। (বুখারী ৪৮৮৬, ৪৮৮৭, ৫৯৩১, ৫৯৪৩, ৫৯৪৮)
এখন উক্ত মহিলার প্রথম ও প্রধান করণীয় হল, আল্লাহ তাআলার কাছে লজ্জিত হয়ে পুনরায় একাজ করবেন না মর্মে আল্লাহ তাআলার কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়ে তাওবা করা। এভাবে তিনি নিজের সাধ্যের আওতাধীন অংশ সম্পন্ন করতে পারলে, অবশিষ্ট বিষয়গুলো -যেমন অনাগত সন্তানের ওপর এর প্রভাব পড়া ইত্যাদি- যেগুলো তার সাধ্যের বাইরে; আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা সেগুলোও ক্ষমা করে দিবেন। কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْسًا إِلاَّ وُسْعَهَا
আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যাতীত কোন কাজের ভার দেন না। (সুরা বাকারা ২৮৬)
দ্বিতীয়ত, উক্ত মহিলাকে বলুন, একবার তাওবা করার পর হতাশ না হয়ে বরং তাওবা-ইস্তেগফার যেন অব্যাহত রাখে। কারণ, এটাই মুমিনের বৈশিষ্ট্য যে, সে তার গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়, আল্লাহকে ভয় করে এবং আল্লাহর কাছে তাওবা করে। আল্লাহ মুমিনের এ গুণের কথা কুরআনে বর্ণনা করেছেন এভাবে-
وَالَّذِينَ إِذا فَعَلُوا فاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللَّهَ فَاسْتَغْفَرُوا لِذُنُوبِهِمْ وَمَنْ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ اللَّهُ
‘এবং তারা সেই সকল লোক, যারা কখনও কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা (অন্য কোনওভাবে) নিজেদের প্রতি জুলুম করলে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার ফলশ্রুতিতে নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে- আর আল্লাহ ছাড়া আর কেইবা আছে, যে গুনাহ ক্ষমা করতে পারে? ’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩৬)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
ما أصر من استغفر
অর্থাৎ যে বান্দা গুনাহ থেকে ইসতিগফার করতে থাকে সে গুনাহের উপর জমে আছে বলে গণ্য হবে না। (আবু দাউদ ১৫১৪)
والله اعلم بالصواب
শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সিনিয়র মুহাদ্দিস, মাদরাসা দারুর রাশাদ, মিরপুর
খতীব, বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদ, মিরপুর
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১