কিস্তিতে ক্রয় বিক্রয়
প্রশ্নঃ ৩৩৪৮৯. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কিছু প্রোডাক্ট ,আমি কিস্তিতে ছয় মাসের জন্য, কিনেছি আট হাজার টাকা লাভ দিয়ে, মাসিক কিস্তি আসে ১৮ হাজার টাকা, কিন্তু এখন মাসে ১৮০০০ টাকা বিক্রি করা কষ্টকর হয়, এখন উনারা বলতেছে, ১২ মাসের জন্য নিলে ৭ হাজার টাকা বেশি দিতে হবে, ১২ মাসের মাসিক কিস্তি আসে সাড়ে নয় হাজার টাকা, এটা আমার জন্য সহজ হয়, কিন্তু এটা কুরআন হাদিস, দ্বারা জায়েজ হবে।
২১ জুন, ২০২৫
মাওনা ইউনিয়ন
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
কিস্তিতে ক্রয়-বিক্রয় করলে নগদের চেয়ে বেশি মূল্য নেওয়া জায়েয। তবে কিস্তির বিক্রির ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে-
১. পণ্যের মূল্য ও আদায়ের তারিখ সুনির্দিষ্ট হতে হবে। কিস্তি কতদিনের হবে সেটা পন্য হস্তান্তরের আগেই নির্ধারণ করে নিতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ: একবছরের কিস্তিতে নিলে ১২ হাজার টাকা, দেড় বছরের কিস্তিতের নিলে ১৮ হাজার টাকা। দুই বছরের কিস্তিতে নিলে ২৪ হাজার টাকা ইত্যাদী। এভাবে একাধিক সময় এবং মূল্য উল্লেখ করার পর সুনির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ গ্রহন না করেই ক্রেতা পণ্য নিয়ে নিলো এবং তার সুবিধা অনুপাতে মূল্য পরিশোধ করতে থাকলো- এই পদ্ধতি জায়েজ হবে না। বরং আগেই তাকে নির্ধারণ করে নিতে হবে যে সে কি এবছরের কিস্তিতে নিচ্ছে, না দেড় বছরের কিস্তিতে না কি দুই বছরের কিস্তিতে। যেকোনো একটা নির্ধারণ করে নিতে হবে।
২. চুক্তির সময় পণ্যের মূল্য চূড়ান্ত হওয়ার পর কিস্তি আদায়ে বিলম্ব বা পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না।
৩. কিস্তি আদায়ের জন্য পণ্য আটকে রাখা যাবে না; বরং চুক্তির পরই পণ্য ক্রেতাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী জিদ্দা ৭/২/৩২-৩৬; বাইউত তাকসীত ওয়া আহকামুহু, সুলাইমান আততুরকী পৃষ্ঠা : ২২৮; বুহুস ফী কাযায়া ফিকহিয়্যাহ মুআছিরা, আল্লামা তাকী উসমানী ১/৭
(মাসিক আল-কাউসার, জানুয়ারী ২০১১)
আপনার প্রশ্নের ধরনে বুঝা যাচ্ছে, আপনাদের মাঝে চুক্তি পূর্ণ হয়ে পূর্ণ পন্য আদান-প্রদান হয়ে গেছে। যদি এমনই হয়ে থাকে, তাহলে উল্লেখিত শর্ত সমূহের ২ নং শর্ত অনুযায়ী আপনার পণ্যের পূর্ব নির্ধারিত মূল্য থেকে যে ৭ হাজার টাকা বাড়তি আসে বা তারা নিতে চাইছে তা জায়েজ হবে না, বরং এখানে কিস্তি বা সময় বাড়লেও টাকা বাড়ানো যাবে না। যদি বাড়ায় বা
আপনিও বাড়তি অর্থ প্রদান করেন, তাহলে আপনাদের মধ্যকার এই চুক্তি এবং লেনদেন সুদের অন্তর্ভুক্ত হবে, যাতে করে আপনারা উভয়ই সুদ আদান-প্রদানের গুনাহে গুনাহগার হবেন।
والله اعلم بالصواب
মুফতি জাওয়াদ তাহের
মুহাদ্দিস, জামিয়া বাবুস সালাম, বিমানবন্দর ঢাকা
মন্তব্য (0)
কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
আল কুরআনুল কারীম
৪
হাদীস ও সুন্নাহ
৬
তাসাউফ-আত্মশুদ্ধি । ইসলাহী পরামর্শ
৩
শরীআত সম্পর্কিত
১৪
ফিতনাসমুহ; বিবরণ - করণীয়
২
আখিরাত - মৃত্যুর পরে
৩
ঈমান বিধ্বংসী কথা ও কাজ
৬
ফিরাকে বাতিলা - ভ্রান্ত দল ও মত
২
পবিত্রতা অর্জন
৮
নামাযের অধ্যায়
১৯
যাকাত - সদাকাহ
৫
রোযার অধ্যায়
৬
হজ্ব - ওমরাহ
২
কাফন দাফন - জানাযা
৫
কসম - মান্নত
১
কুরবানী - যবেহ - আকীকা
৪
বিবাহ শাদী
৮
মীরাছ-উত্তরাধিকার
২
লেনদেন - ব্যবসা - চাকুরী
৯
আধুনিক মাসায়েল
৬
দন্ড বিধি
২
দাওয়াত ও জিহাদ
৩
ইতিহাস ও ঐতিহ্য
৬
সীরাতুন নবী সাঃ । নবীজীর জীবনচরিত
৩
সাহাবা ও তাবেঈন
৩
ফাযায়েল ও মানাকেব
৩
কিতাব - পত্রিকা ও লেখক
৩
পরিবার - সামাজিকতা
৭
মহিলা অঙ্গন
২
আখলাক-চরিত্র
২
আদব- শিষ্টাচার
১২
রোগ-ব্যধি। চিকিৎসা
২
দোয়া - জিকির
২
নাম। শব্দ জ্ঞান
৩
নির্বাচিত
২
সাম্প্রতিক
১
বিবিধ মাসআলা
১