আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

তাহাজ্জুদের নামাজ জামাতের সাথে পড়া প্রসঙ্গে।

প্রশ্নঃ ৩১২১৮. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আমার প্রশ্ন হল,রমজান মাসে তাহাজ্জুদের নামাজ জামাতে পড়া কি জায়েজ?

২১ মার্চ, ২০২৩
সিলেট

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায, জুমআ ও দুই ঈদের নামায জামাতে আদায় করা হল ইসলামের শিআর। এছাড়া তারাবী, রমযানের বিতর, ইস্তিসকা ও সূর্যগ্রহণের নামায জামাতে আদায় করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ও সুন্নত। কিন্তু তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামায শরীয়তের দৃষ্টিতে একাকী ও ঘরে আদায় করার মতো নামায। যে কারণে এগুলোতে আযান-ইকামত এবং জামাতের আয়োজনের বিধান নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কেরামের সাধারণ আমল এমনই ছিল। তারা তাহাজ্জুদ ও নফল ঘরে একাকী আদায় করতেন। আমাদের জানামতে হাদীস ও সীরাতের বর্ণনানুযায়ী গোটা নবী-যুগে একটি অথবা দুটি ঘটনাই এমন পাওয়া যায় যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের নামায শুরু করার পর, কোনো সাহাবী এসে ইক্তিদা করেছেন। এ জাতীয় এক দুটি ঘটনা ছাড়া, (জামাত যেখানে ঘটনাচক্রে হয়ে গিয়েছিল। উপরন' তা ছিল মাত্র এক দুই জনের।) তাহাজ্জুদের জামাতের অন্য কোনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না।

তাই ফিকহে হানাফীর ফাতাওয়া হল, তাহাজ্জুদের নামায, তা রোযার মাসে পড়া হোক কিংবা অন্য মাসে,একাকী পড়া উচিত। এতে জামাতর পাবন্দি করা ঠিক নয়। তবে কেউ যদি তাহাজ্জুদ নামাযে রত কোনো ব্যক্তির ইক্তিদা করে ফেলে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু এটাকে নিয়মে পরিণত করা খেলাফে সুন্নত।

মোটকথা, এ প্রসঙ্গে হানাফী মাযহাবের ফাতাওয়া এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তরীকা এবং খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে কেরাম ও খাইরুল কুরূনের সাধারণ নিয়ম থেকে সরে তাহাজ্জুদ নামাযে জামাতের প্রচলন করা, বিশেষত কোনো মসজিদে, সঠিক নয়।

নিম্নে নফল নামায জামাতবিহীন একাকী ঘরে পড়া সম্পর্কে কিছু হাদীস পেশ করা হল।

১. হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামায আদায় কর, ঘরকে কবর বানিও না।’-সহীহ মুসলিম ১/২৬৫

২. হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামায আদায় কর। কেননা, মানুষের সর্বোত্তম নামায হল ঘরের নামায। তবে ফরয নামায ব্যতিত।’

৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সাআদ রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘরে নামায পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমার ঘর মসজিদের কত নিকটে তারপরও আমি ঘরে নামায পড়তে ভালবাসি। তবে ফরয নামায মসজিদে পড়ি।’ (শামায়েলে তিরমিযী ২০)
( আল কাউসার)

والله اعلم بالصواب

মাহমুদুল হাসান মুফতী, ফাতাওয়া বিভাগ, মুসলিম বাংলা গবেষক, হাদীস বিভাগ, মুসলিম বাংলা
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন