আপনার জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর

সকল মাসায়েল একত্রে দেখুন

কুরআনের আয়াতে কবরের আজাব

প্রশ্নঃ ২৯৭৫৪. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, কোরআনে কোথাও কি নেয় কবরের আযাবের কথা ?

২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
West Bengal ৭৪১১২২

উত্তর

و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


হ্যাঁ আছে!
(১)
یُثَبِّتُ اللّٰہُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِالۡقَوۡلِ الثَّابِتِ فِی الۡحَیٰوۃِ الدُّنۡیَا وَفِی الۡاٰخِرَۃِ ۚ  وَیُضِلُّ اللّٰہُ الظّٰلِمِیۡنَ ۟ۙ  وَیَفۡعَلُ اللّٰہُ مَا یَشَآءُ ٪
যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদেরকে এ সুদৃঢ় কথার উপর স্থিতি দান করেন দুনিয়ার জীবনেও এবং আখেরাতেও। ২৪ আর আল্লাহ জালেমদেরকে করেন বিভ্রান্ত। আল্লাহ (নিজ হিকমত অনুযায়ী) যা চান, তাই করেন। (সুরা ইবরাহীম আয়াত: ২৭) ।

عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الْمُسْلِمُ إِذَا سُئِلَ فِي الْقَبْرِ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، فَذَلِكَ قَوْلُهُ (يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ)"

বারা ইবনে আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কবরে মুসলমান ব্যক্তিকে যখন প্রশ্ন করা হবে তখন সে সাক্ষ্য দিবে, “লা–ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াআন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ” আল্লাহর বাণীতে এর প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে। বাণীটি হল এইঃ يُثَبِّتُ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ
সহীহ বুখারী হাদিস নং: ৪৩৪২ আন্তর্জাতিক নং: ৪৬৯৯

(২) আল্লাহ তায়ালা সুরাতুল গাফিরের ৪৪.৪৫ নং আয়াতে উল্লেখ করেন,

فَوَقٰىہُ اللّٰہُ سَیِّاٰتِ مَا مَکَرُوۡا وَحَاقَ بِاٰلِ فِرۡعَوۡنَ سُوۡٓءُ الۡعَذَابِ ۚ
অতঃপর তারা যেসব নিকৃষ্ট ষড়যন্ত্র করেছিল, আল্লাহ তাকে (সেই মুমিন ব্যক্তিকে) তা হতে রক্ষা করলেন আর ফির‘আউনের সম্প্রদায়কে পরিবেষ্টন করল নিকৃষ্টতম শাস্তি।

اَلنَّارُ یُعۡرَضُوۡنَ عَلَیۡہَا غُدُوًّا وَّعَشِیًّا ۚ وَیَوۡمَ تَقُوۡمُ السَّاعَۃُ ۟ اَدۡخِلُوۡۤا اٰلَ فِرۡعَوۡنَ اَشَدَّ الۡعَذَابِ
আগুন, যার সামনে তাদেরকে প্রতি সকাল-সন্ধ্যায় পেশ করা হয়। আর যে দিন কিয়ামত সংঘটিত হবে, সে দিন (আদেশ করা হবে) ফির‘আউনের সম্প্রদায়কে কঠিনতম শাস্তিতে প্রবেশ করাও।

তাফসীরঃ মৃত্যুর পর কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত মানুষের রূহ যে জগতে থাকে, তাকে ‘বরযখের জগত’ বলে। এ আয়াতে জানানো হয়েছে যে, ফির‘আউন ও তার অনুসারীদেরকে বরযখের জগতে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় জাহান্নামের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে তারা জানতে পারে তাদের ঠিকানা কোথায়।

(৩) আল্লাহ সুরা তাওবা এর ১০১ নং আয়াতে বলেন,

وَمِمَّنۡ حَوۡلَکُمۡ مِّنَ الۡاَعۡرَابِ مُنٰفِقُوۡنَ ؕۛ  وَمِنۡ اَہۡلِ الۡمَدِیۡنَۃِ ۟ۛؔ  مَرَدُوۡا عَلَی النِّفَاقِ ۟  لَا تَعۡلَمُہُمۡ ؕ  نَحۡنُ نَعۡلَمُہُمۡ ؕ  سَنُعَذِّبُہُمۡ مَّرَّتَیۡنِ ثُمَّ یُرَدُّوۡنَ اِلٰی عَذَابٍ عَظِیۡمٍ ۚ

তোমাদের আশেপাশে যে সকল দেহাতী আছে, তাদের মধ্যেও মুনাফিক আছে এবং মদীনাবাসীদের মধ্যেও তারা মুনাফিকীতে (এতটা) সিদ্ধ (যে,) তুমি তাদেরকে জান না, আমি তাদেরকে জানি। আমি তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেব। অতঃপর তাদেরকে এক মহা শাস্তির দিকে তাড়িয়ে নেওয়া হবে।

ব্যাখ্যা: হজরত হাসান বছরী ও ক্বাতাদাহ রহ. বলেন, দু’বার শাস্তি অর্থ রোগ-শোক ও বিপদাপদের মাধ্যমে প্রথমবার দুনিয়াবী শাস্তি এবং দ্বিতীয়বার কবর আযাবের শাস্তি’ (কুরতুবী, ইবনু কাছীর; দ্রঃ বুখারী ‘জানাযা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৮৫)।


এই আয়াতগুলোর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত যে, কবরের আজাব সত্য। এছাড়া অসংখ্য হাদিসের মধ্যে তো বিষয়টি বিবৃত হয়েছেই।

والله اعلم بالصواب

মুফতি সাইদুজ্জামান কাসেমি শিক্ষক, জামিয়া ইসলামিয়া ইবরাহিমিয়া দারুল উলুম মেরাজনগর, কদমতলী, ঢাকা।
প্রসঙ্গসমূহ:

মন্তব্য (0)

কোনো মন্তব্য নেই। প্রথম মন্তব্য করুন!

মন্তব্য করতে লগইন করুন