প্রশ্নঃ ২৮৭০. আসসালামুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, ক) রমযান মাসে দেখা যায় অনেকে কিয়ামুল লায়ল (তাহাজ্জুদ) নামায জামাতের সাথে আদায় করেন। এমনকি মসজিদে হারামেও এই নামায জামাতের সাথে আদায় করা হয়। এ বিষয়ে শরীয়তের বিধান কী? খ) তারাবীর নামায ২০ রাকাত, না ৮ রাকাত? সহীহ হাদীস অনুসারে কোনটা ঠিক? রমযান মাসে তারাবীর নামায পড়লে তাহাজ্জুদ নামায পড়ার দরকার আছে কী? বা তাহাজ্জুদ নামায পড়লে তারাবী পড়তে হবে কি? উল্লেখিত বিষয়ে সহীহ মাসআলা হাদীস শরীফের বাংলা তরজমাসহ জানালে খুশি হব। ,
২৮ অক্টোবর, ২০২০
উত্তর
و علَيْــــــــــــــــــــكُم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(ক) পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায, জুমআ ও দুই ঈদের নামায জামাতে আদায় করা হল ইসলামের শিআর। এছাড়া তারাবী, রমযানের বিতর, ইস্তিসকা ও সূর্যগ্রহণের নামায জামাতে আদায় করা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ও সুন্নত। কিন্তু তাহাজ্জুদসহ অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামায শরীয়তের দৃষ্টিতে একাকী ও ঘরে আদায় করার মতো নামায। যে কারণে এগুলোতে আযান-ইকামত এবং জামাতের আয়োজনের বিধান নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবায়ে কেরামের সাধারণ আমল এমনই ছিল। তারা তাহাজ্জুদ ও নফল ঘরে একাকী আদায় করতেন। আমাদের জানামতে হাদীস ও সীরাতের বর্ণনানুযায়ী গোটা নবী-যুগে একটি অথবা দুটি ঘটনাই এমন পাওয়া যায় যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের নামায শুরু করার পর, কোনো সাহাবী এসে ইক্তিদা করেছেন। এ জাতীয় এক দুটি ঘটনা ছাড়া, (জামাত যেখানে ঘটনাচক্রে হয়ে গিয়েছিল। উপরন' তা ছিল মাত্র এক দুই জনের।) তাহাজ্জুদের জামাতের অন্য কোনো দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় না।
তাই ফিকহে হানাফীর ফাতাওয়া হল, তাহাজ্জুদের নামায, তা রোযার মাসে পড়া হোক কিংবা অন্য মাসে,একাকী পড়া উচিত। এতে জামাতর পাবন্দি করা ঠিক নয়। তবে কেউ যদি তাহাজ্জুদ নামাযে রত কোনো ব্যক্তির ইক্তিদা করে ফেলে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু এটাকে নিয়মে পরিণত করা খেলাফে সুন্নত।
আর হারামাইন শরীফাইনে তাহাজ্জুদের নামায জামাতে পড়া হয় হাম্বলী মাযহাব অনুযায়ী। কেননা, হাম্বলী মাযহাবে যেকোনো নফল নামায জামাতে পড়া যায়।
মোটকথা, এ প্রসঙ্গে হানাফী মাযহাবের ফাতাওয়া এই যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তরীকা এবং খোলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে কেরাম ও খাইরুল কুরূনের সাধারণ নিয়ম থেকে সরে তাহাজ্জুদ নামাযে জামাতের প্রচলন করা, বিশেষত কোনো মসজিদে, সঠিক নয়।
নিম্নে নফল নামায জামাতবিহীন একাকী ঘরে পড়া সম্পর্কে কিছু হাদীস পেশ করা হল।
১. হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর রা. বলেন, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামায আদায় কর, ঘরকে কবর বানিও না।’-সহীহ মুসলিম ১/২৬৫
২. হযরত যায়েদ ইবনে ছাবিত রা. বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘হে লোকসকল! তোমরা ঘরে নামায আদায় কর। কেননা, মানুষের সর্বোত্তম নামায হল ঘরের নামায। তবে ফরয নামায ব্যতিত।’
৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সাআদ রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঘরে নামায পড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, আমার ঘর মসজিদের কত নিকটে তারপরও আমি ঘরে নামায পড়তে ভালবাসি। তবে ফরয নামায মসজিদে পড়ি।’ (শামায়েলে তিরমিযী ২০)
খ) তারাবী বিশ রাকাত। এটাই সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। চার মাযহাবের ইমামগণ এ বিষয়ে একমত। সাহাবা-যুগ থেকে আজ পর্যন্ত হারামাইন শরীফাইনে এভাবেই তারাবী পড়া হয়েছে। বিশ রাকাতের কম কখনো পড়া হয়নি। বর্তমানে যারা তারাবীর নামায আট রাকাত বলে দাবি করে তারা কিছু ‘মুনকার’রেওয়ায়েত দ্বারা দলিল দিয়ে থাকে, কিংবা তাহাজ্জুদের হাদীসকে তারাবীর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে। মারকাযুদ দাওয়াহর দারুত তাসনীফ থেকে এ বিষয়ে একটি পুসি-কা প্রকাশিত হয়েছে। যাতে বিস্তারিত দালিলিক আলোচনা রয়েছে।
তারাবীর নামাযে দীর্ঘ কিরাত পড়ার কারণে তাহাজ্জুদের সময় হয়ে গেলে ভিন্নভাবে তাহাজ্জুদ পড়ার প্রয়োজন নেই। তখন তারাবীহ এর স'লাভিষিক্ত হয়ে যাবে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি হাদীস নিম্নে উল্লেখ করা হল।
১. হযরত নোমান ইবনে বাশীর রা. বলেন, আমরা তেইশ রোযার দিবাগত রাতে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে অর্ধ রাত পর্যন্ত নামায পড়ি। অতপর সাতাইশ রোযার দিবাগত রাতে এত দীর্ঘ নামায পড়ি যে, আমাদের সাহরী ছুটে যাওয়ার আশংকা হল।’ (কিয়ামুল লাইল, শায়খ আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে নসর ১৯৬)
২. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর রা. বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, আমরা রোযার মাসে রাতের নামায থেকে এমন সময় ফিরতাম যে, সুবহে সাদিক উদিত হওয়ার আশংকায় খাদেমকে দ্রুত খানা আনতে বলতাম।
৩. হযরত ওমর রা., তাঁর খেলাফত আমলে উবাই ইবনে কা’ব রা. ও তামীম দারী রা.কে রমযানের রাতের নামায পড়াতে আদেশ করলেন। কারীগণ এত লম্বা কিরাত পড়তেন যে, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কারণে আমরা লাঠির উপর ভর করে দাঁড়াতাম। আর আমরা বাড়ি ফিরতাম সুবহে সাদিকের কিছু পূর্বে। (কিয়ামুল লাইল ২০৩)
যদি তারাবী ইশার পর প্রথম রাতে পড়া হয় তাহলে শেষ রাতে অন্যদিনের মতো তাহাজ্জুদ পড়া উচিত। তাহাজ্জুদ পুরো বছরের নামায এবং তারাবী থেকে ভিন্ন নামায।
রশীদ আহমদ গঙ্গুহী রাহ.-এ বিষয়ে স্বতন্ত্র একটি রিসালাহ লিখেছেন। বিষয়টি দীর্ঘ আলোচনার দাবি রাখে। আগামী কোনো সংখ্যায় এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা হবে ইনশাআল্লাহ।
একটি রেওয়ায়েতে আছে, হযরত ওমর রা.-এর যুগে একদিন মুসল্লীরা তারাবী শেষ করে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন তখন হযরত ওমর রা. বললেন, রাতের যে অংশ বাকি রয়ে গেছে তা অধিক উত্তম। অর্থাৎ শেষ রাতেও ইবাদত করা উচিত। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ৫/২৩১)
والله اعلم بالصواب
মন্তব্য (০)
কোনো মন্তব্য নেই।
এ সম্পর্কিত আরও জিজ্ঞাসা/প্রশ্ন-উত্তর
৯২৮৫৬
গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারিনী মা-বোনদের রোযা না রাখার ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?
৪ মার্চ, ২০২৫
কুষ্টিয়া

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী আরিফুর রহমান
৯০৫৮৩
ভিন্ন দেশ থেকে ৩০ রোযা রেখে বাংলাদেশে গেলে রোযা রাখতে হবে? রাখলে ৩১টা হয়ে যায়। করণীয় কি?
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
대한민국 경기도 파주시 월롱면 통일로৬২০번길 ৮৯-৫৩ (KR)

উত্তর দিয়েছেনঃ মুফতী শাহাদাত হুসাইন ফরায়েজী
৩২৪৩১
রোজা রেখে নাভির নিচের লোম পরিস্কার করা যাবে?
৬ এপ্রিল, ২০২৩
ঢাকা

উত্তর দিয়েছেনঃ শাইখ উমায়ের কোব্বাদী
সাম্প্রতিক প্রশ্নোত্তর
মাসায়েল-এর বিষয়াদি
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে
মাসায়েল-এর বিষয়াদি লোড হচ্ছে